জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ঘোষণা দিয়েছেন যে, সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি ছাড়া রংপুরে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা হতে দেয়া হবে না।
গত সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে রংপুরে দলের জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির যৌথ কর্মী সভায় সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা এ ঘোষণা দেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি র চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। এ সময় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, যুগ্ম মহাসচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাকসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: আজকের বাজার দর: ডালের বাজারে নৈরাজ্য চরমে, কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা
মোস্তফা বলেন, “রংপুরে যা করতে চান তা জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ ছাড়া আমরা ঘটাতে দিব না। জাতীয় পার্টিকে বাদ রেখে কোনো আলোচনা নয়।” তিনি রংপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনারসহ সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, “জাতীয় পার্টিকে সম্মান না দেয়া হলে আমরা আমাদের অধিকার আদায় করে নিব।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মোস্তফা বলেন, “এজন্য প্রস্তুত থাকবেন। সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলম রংপুরে আসতে পারবে না। যদি ফেসবুকে ম্যাসেজ দেখেন, তাহলে সাথে সাথে যার কাছে যা কিছু আছে, তা নিয়ে রংপুরে এই পার্টি অফিসে চলে আসবেন।” তিনি দলের শক্তি প্রদর্শনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুতির আহ্বান জানান।
মোস্তফা আরও বলেন, “রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু, সেটা দেখাতে হবে। যদি পুলিশ, বিজিবি বা র্যাব আমাদের ঠেকাতে পারে, তাহলে আমাদের অস্তিত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা ঘোষণা করছি, সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর কোনো প্রোগ্রাম রংপুরে হতে দেয়া হবে না। ইনশাআল্লাহ, যা হয় তা হবে।”
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “ড. ইউনূস, আপনি একজন বিজ্ঞ মানুষ। কিন্তু কয়েকজন ছাত্রের কথায় রাষ্ট্র পরিচালনা করলে ভুল করবেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন। সারাদেশে মানুষ কষ্টে আছে। আপনি যদি সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহর মতো দুজনকে বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেন, তাহলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন।”
আরও পড়ুন: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রধান ফটক উদ্বোধন করলেন উপদেষ্টা নাহিদ
জাতীয় পার্টির শান্তিপূর্ণ রাজনীতির কথা উল্লেখ করে মোস্তফা বলেন, “আমরা জ্বালাও পোড়াও রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রাজনীতি করতে চাই। যদি সেই রাজনীতি করতে না দেয়া হয়, তাহলে জাতীয় পার্টির থেকে খারাপ দল বাংলাদেশে আর কেউ হবে না।”
তিনি রংপুরের অস্তিত্ব রক্ষায় প্রস্তুত থাকার এবং প্রয়োজনে নিজের রক্ত ঢেলে দিতে রাজি থাকার কথা বলেন। মোস্তফা বলেন, “রংপুর আমাদের অস্তিত্ব, সেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আমি রাজপথ ছাড়ব না।”
এদিকে, সভায় উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দও মোস্তফার বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানান এবং জাতীয় পার্টি র শক্তি ও ঐক্য ধরে রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, রংপুরে জাতীয় পার্টির অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে এবং কোনো পরিস্থিতিতেই তারা পিছপা হবেন না।
এই সভায় জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান এবং শক্তিশালী রাজনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে রংপুরে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করার সংকল্প প্রকাশ পায়।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন