Site icon Juger Alo

আকাশ থেকে পড়া পাথর খণ্ডের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব

পাথর

পাথর

মহাকাশ থেকে পড়া একখণ্ড পাথর । সেই পাথরের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব। একদিন কিংবা দুই নয়, গত প্রায় চার বছর ধরে চলছে এই দ্বন্দ্ব। এমনকি এই দ্বন্দ্ব পারস্পরিকভাবে না মেটায় আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই ঘটেছে সুইডেনে।

পাথর খণ্ডটি আসলে একটি উল্কাপিণ্ড। এর মালিকানা দাবি করা দুইটা পক্ষের মধ্যে কাকে দেয়া হবে সেই মালিকানা সেটাই এখন বিচার-বিশ্লেষণ করছেন দেশটির আদালত।

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন মতে, এখন থেকে চার বছর আগে ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর রাতে ওডেলন নামে সুইডেনের একটি গ্রামের কাছে আছড়ে পড়ে বড় আকারের উল্কাপিণ্ডটি। গ্রামটি রাজধানী স্টকহোমের উত্তরাঞ্চলে একটি পাইন বনের মধ্যে অবস্থিত।

আরও পড়ুন : গায়ের চামড়া কেটে মায়ের জন্য জুতা বানালেন ছেলে, পরিয়ে দিলেন নিজ হাতে

উল্কাপিণ্ডটি পড়ার মুহূর্তটি ওই অঞ্চলের কয়েকটি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। সাধারণত মহাকাশ গবেষণা ও উল্কাপিণ্ড পড়ার মতো ঘটনা রেকর্ড করার জন্য এসব ক্যামেরা পেতে রাখা হয়। উল্কাপিণ্ডটি পড়ার সাথে সাথে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কয়েক সপ্তাহের খোঁজাখুঁজির পর শেষ পর্যন্ত এটা খুঁজে পাওয়া যায়।

কিন্তু এরপরই এর মালিকানা নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। উল্কাপিণ্ডটির প্রথম দাবিদার দুই বন্ধু যারা প্রথমে খণ্ডটি খুঁজে পেয়েছিল। আর দ্বিতীয় দাবিদার হলো জমির মালিক যে যে জমিতে এটা পড়েছিল। দ্বন্দ্ব এক পর্যায়ে আদালতে গড়ায় এবং গত চার বছর ধরে সেই মামলা চলছে।

গত বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সেই আইনি লড়াই নতুন মোড় নেয়। একটি আপিল আদালত জমির মালিকের পক্ষে রায় দিয়েছে। যে দুই বন্ধু কয়েক সপ্তাহ ধরে অনুসন্ধানের পর পাথরখণ্ডটি খুঁজে পেয়েছিল তাদের দাবি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তবে মামলা এখনও শেষ হয়নি। দুই বন্ধু এখনও তাদের দাবি ছাড়েনি।

দুই ভূতত্ত্ববিদ বন্ধুর জন্য এটা সাধারণ কোনো পাথরখণ্ড ছিল না। তাদের কাছে এটা হীরকখণ্ড বা তার চেয়ে দামী কিছু। আন্দ্রিয়াস দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে এক সাক্ষাৎকারে তেমনটাই বলছিলেন। তিনি বলেন, এটি আমার জন্য এমন কিছু ছিল যা জীবনে একবারই ঘটেছে। এটা দেখতে খুবই দৃষ্টিনন্দন ছিল। আর এর বয়স তখন কয়েক মাত্র সপ্তাহ।

আরও পড়ুন : নারী থেকে পুরুষ হতে গিয়ে জানলেন তিনি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা!

বেশিরভাগ উল্কাপিণ্ডই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পৌঁছানের সঙ্গে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এগুলোকে উল্কা বলা হয়ে থাকে। কিছু উল্কা মাটি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে যেগুলোকে বলা হয় উল্কাপিণ্ড। স্টকহোমের পাইন বনের মধ্যকার গ্রামে পাওয়া উল্কাপিণ্ডটি একটু আলাদা। কারণ এর ওজন সচরাচর উল্কাপিণ্ডের ওজনর প্রায় দশগুণ।

কয়েক সপ্তাহ পর দুই বন্ধু অ্যান্ডার্স ও আন্দ্রিয়াস উল্কাপিণ্ডটি নিয়ে সুইডিশ মিউজিয়াম অফ ন্যাচরাল হিস্ট্রিতে যান। ২০২০ সাল থেকে উল্কাপিণ্ডটি এই মিউজিয়ামেই রয়েছে।

সুইডিশ মিউজিয়াম অফ ন্যাচরাল হিস্ট্রি গবেষকরা জানান,উল্কাপিণ্ডটির প্রধান উপাদান লোহা। একই সঙ্গে কীভাবে এই উল্কাপিণ্ড সুইডেনে পড়ল ও এটি আসলে কোন গ্রহ বা তারার অংশ তাও জানানো হয়।

সুইডিশ মিউজিয়াম অব ন্যাচরাল হিস্ট্রি জানায়, মাটিতে পড়া এই উল্কাপিণ্ডের আকার আসলে একটি বড় আকারের রুটির মতো। যার ওজন প্রায় ৩১ পাউন্ড বা ১৪ কেজি। আগে এটি মহাকাশে অন্য একটি বড় উল্কাপিণ্ডের অংশ ছিল। বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, যে পাথর থেকে এটি পড়েছিল সেটির ওজন হতে পারে ৯ টনেরও বেশি।

   যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

সুত্র: সময় টিভি

Exit mobile version