আজকের দিনটি একটি বিশেষ দিন—‘আনফ্রেন্ড দিবস’। এটা কি শুধু বন্ধু তালিকা ছেঁটে ফেলার দিন? অনেকটা তেমনই। এই দিনে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি, কোন বন্ধুত্বগুলোর ভার্চুয়াল জীবনে সত্যিকার অর্থে স্থান থাকা উচিত আর কোনগুলোর নয়। বর্তমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগে বন্ধু তালিকায় যুক্ত হওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, আমরা যাদের বন্ধু বলে গন্য করি, আসলেই তারা কতটা বন্ধুত্বের যোগ্য?
আরও পড়ুন: ফেসবুক কীভাবে আপনাকে অসুখী মানুষে পরিণত করছে, আপনি জানেন?
বিশ্বজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রতিদিনই নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হচ্ছে, একাধিক বন্ধুত্ব গড়ে উঠছে। তবে এদের মধ্যে বেশিরভাগই শুধু বন্ধু তালিকাতেই সীমাবদ্ধ, প্রকৃত বন্ধুত্বের অভাব রয়েছে। এই তালিকায় এমন অনেকেই আছেন যাদের হয়তো আমরা ঠিকমতো চিনি না, তাদের পোস্ট বা কমেন্টে অস্বস্তিবোধ করি, আবার কিছু জন প্রতিনিয়ত অপ্রাসঙ্গিক বা বিরক্তিকর বার্তা পাঠাতে থাকেন। অজানা লোকদের অনুরোধ গ্রহণ করার পর, প্রোফাইলে পরিচিতি বাড়লেও সময়ের সঙ্গে দেখা যায় তাদের পোস্টগুলো মনঃপুত হয় না। আর চক্ষুলজ্জার কারণে অথবা ভদ্রতার খাতিরে আমরা অনেক সময় এদের আনফ্রেন্ড করতেও পারি না। তাই জিমি কিমেলের দেওয়া এই ‘আনফ্রেন্ড ডে’ এই কাজটি করার জন্য একটি সঠিক সময়।
২০১৪ সালে, আমেরিকান কৌতুক অভিনেতা জিমি কিমেল প্রথমবারের মতো ‘আনফ্রেন্ড ডে’ উদযাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা বিরক্তিকর, অপ্রয়োজনীয় এবং অচেনা ব্যক্তিদের বন্ধু তালিকা থেকে বাদ দিয়ে নিজেকে মুক্ত করা। এ দিনটি পালন করার মাধ্যমে আমরা আমাদের ভার্চুয়াল জীবনকে আরো বেশি সুশৃঙ্খল ও মানসিকভাবে আরামদায়ক করতে পারি।
‘আনফ্রেন্ড’ শব্দটি ২০০৯ সালে অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে সেরা শব্দ হিসেবে মনোনীত হয়েছিল। যার অর্থ ছিল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কাউকে ‘বন্ধু’ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া। আজ এই শব্দটি খুবই পরিচিত এবং সাধারণ হলেও, এটির গুরুত্ব অনেক বেশি। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই এমন অনেককেই দেখি, যারা হয়তো আমাদের সঙ্গে সরাসরি বিরক্তিকর আচরণ করেন না, কিন্তু অন্যের পোস্টে আজেবাজে কমেন্ট করেন, বিদ্বেষ ছড়ান বা অশালীন কথাবার্তা বলেন। এমন বন্ধুদের আনফ্রেন্ড করার মাধ্যমে আমরা আমাদের সময় ও মানসিক শান্তিকে রক্ষা করতে পারি।
আরও পড়ুন: টিকটককে হারাম ঘোষণা করে ফতোয়া
আসুন, আজ কিছুটা সময় নিয়ে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট স্ক্রোল করি। দেখি, কোন প্রোফাইলগুলো প্রকৃতপক্ষে আমাদের জীবনের অংশ হওয়ার যোগ্য। যদি কোনো প্রোফাইল আপনার মূল্যবোধের সঙ্গে খাপ না খায়, তবে আজই তাকে সরিয়ে দিন। এমন মানুষও থাকতে পারে যারা আপনার সঙ্গে সরাসরি ভালো আচরণ করলেও, পরোক্ষভাবে অন্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তাদেরও এই তালিকা থেকে বাদ দিতে পারেন, কারণ একদিন আপনার সম্পর্কেরও ক্ষতি করতে পারে।
আনফ্রেন্ড করার প্রয়োজনীয়তা তখনই বোঝা যায় যখন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া পরিবেশ ভারসাম্যহীন মনে হয়। ‘আনফ্রেন্ড দিবস’ উদযাপন করে আপনি ভার্চুয়াল বন্ধুত্বের সঠিক মানে খুঁজে পেতে পারেন এবং আপনার জীবনকে পরিমার্জিত করে তুলতে পারেন। দিন শেষে, এই দিনটি শুধুই আনফ্রেন্ড করার জন্য নয়; বরং একটি সতর্কতা যে, আমরা যেন শুধুমাত্র প্রকৃত এবং মূল্যবান সম্পর্কগুলোকেই গুরুত্ব দেই।
1 thought on “আজ আনফ্রেন্ড দিবস – কাকে আনফ্রেন্ড করবেন ?”