কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে শহীদ হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তার পরিবার, দেশবাসীর প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান জানিয়েছে—শহীদ আবু সাঈদের কোনো ভাস্কর্য বা মূর্তি নির্মাণ না করার জন্য। তাদের এই আহ্বান ইসলাম ধর্মের প্রেক্ষাপটে এবং আখিরাতের প্রতি বিশ্বাসের ভিত্তিতে।
আরও পড়ুন: পটলের ইংরেজি নাম কি? প্রায় ৯০% মানুষ সঠিক উত্তর দিতে পারেনা
ইসলামিক দৃষ্টিকোণ:
ইসলাম ধর্মে মূর্তি, ভাস্কর্য, বা প্রতিকৃতি বানানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ইসলামের বিধান অনুযায়ী, কোনো জীবন্ত বা মৃত ব্যক্তির মূর্তি বা প্রতিকৃতি নির্মাণ করা শরিয়তসম্মত নয়। আবু সাঈদের পরিবার এই ধর্মীয় আদেশ মেনে চলে, এবং তারা চায় না যে তাদের প্রিয় সন্তানের জন্য কোনো ভাস্কর্য তৈরি করা হোক।
পারিবারিক দৃষ্টিকোণ:
আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন এবং তার ভাইরা তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন যে, আবু সাঈদ যেমন দুনিয়াতে কষ্ট পেয়েছে, তারা চান না যে আখিরাতেও সে এমন কোনো কষ্ট পাক। তারা দেশের মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন যে, যদি কেউ আবু সাঈদের প্রতি সম্মান জানাতে চায়, তবে তারা জনকল্যাণমূলক কাজ করতে পারে যার সওয়াব আবু সাঈদ কবরে পাবে।
জাতীয় এবং সামাজিক বিবেচনা:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে, যেখানে অনেকেই ভাস্কর্য তৈরির উদ্যোগকে শহীদ আবু সাঈদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো মনে করছেন। তবে তার পরিবার চায় না যে এমন কোনো কাজ হোক যা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে যায়।
ভাস্কর আহসান আহমেদ, যিনি এই ভাস্কর্য তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তিনি আবু সাঈদের পরিবারের বিবৃতি পাওয়ার পর কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে তার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেছেন এবং শহীদ আবু সাঈদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাস্কর্য তৈরির কাজ বন্ধ করেছেন।
আরও পড়ুন: এক্স মানে কি গুগল? না জানলে জেনে নিন
আবু সাঈদের পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গি:
বিবৃতিতে আবু সাঈদের পরিবার সকলের কাছে আবু সাঈদের জন্য দোয়া চেয়েছেন এবং ভাস্কর্য নির্মাণের পরিবর্তে জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে তার জন্য সওয়াবের আবেদন জানিয়েছেন। তারা উল্লেখ করেছেন যে, কোনো কিছুতে নামকরণ করা হলে তাদের কোনো আপত্তি নেই।
শেষ কথা:
শহীদ আবু সাঈদের পরিবার তাদের সন্তানের মৃত্যু নিয়ে দেশের মানুষের ভালোবাসা ও সহমর্মিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। তারা দেশের সকল মানুষকে আহ্বান জানিয়েছে যে, ইসলাম ধর্মের আদেশ মেনে চলুন এবং জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেদের নিয়োজিত করুন।
উপসংহার:
শহীদ আবু সাঈদের ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক তার পরিবার এবং সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্মীয় বিধান মেনে চলা এবং জাতীয় বিবেচনার ভিত্তিতে পরিবারটির আহ্বান আমাদের সকলের জন্য একটি শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত। আশা করা যায়, দেশবাসী এই আহ্বানকে সম্মান জানিয়ে আবু সাঈদের আত্মত্যাগকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করবে।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন