দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নবম শ্রেণির স্কুলছাত্রী সোমা আক্তার মাত্র ৮ মাসে পবিত্র কোরআন শরিফ নিজ হাতে লিখে সকলের দৃষ্টি কেড়েছে। সোমা আক্তার চিরিরবন্দর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং মাঝাপাড়া গ্রামের আমিনুল ইসলামের মেয়ে। সোমার এমন উদ্যোগ ও মেধাবী প্রচেষ্টা স্থানীয়দের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, বর্তমান সময়ে যেখানে অনেক তরুণ-তরুণী মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত, সেখানে সোমা নিজেকে নিবেদন করেছে কোরআন লেখায়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সে কোনো মাদরাসায় পড়েনি কিংবা কোনো হুজুরের কাছে আরবি লেখা শেখেনি। নিজের প্রচেষ্টায় মাত্র ৮ মাসে নির্ভুলভাবে পুরো কোরআন শরিফ লিখেছে সে।
আরও পড়ুন: সিলেটের গোলাপগঞ্জে খুতবা দেওয়ার সময় ইমামের মৃত্যু
সোমার বড় বোন সুমি আক্তার জানায়, ছোটবেলা থেকেই সোমা লেখাপড়ার পাশাপাশি চমৎকার হাতের লেখা চর্চা করত এবং বিভিন্ন ছবি আঁকত। আরবি ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে তার আরবি লেখার প্রতি আগ্রহ জন্মে। এরপর থেকে সে কোরআন শরিফ নিজ হাতে লেখার উদ্যোগ নেয় এবং সফল হয়।
সোমার মা আছমা বেগম জানান, তার মেয়ে কখনও মাদরাসায় বা কোনো হুজুরের কাছে প্রাইভেট পড়েনি। সম্পূর্ণ নিজ চেষ্টায় ও অধ্যবসায়ে মাত্র ৮ মাসে পুরো কোরআন শরিফ হাতে লিখে শেষ করেছে। এমন অসাধারণ কাজের জন্য তিনি মেয়ে হিসেবে গর্বিত।
মামুদপুর রসুলপুর হামীদিয়া সালাফিয়া ইয়াতিম খানার হাফেজ আব্দুল হাকিম সরকার বলেন, সোমার লেখা কোরআন দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। কোথাও কোনো ভুল না থাকলেও কিছু জায়গায় সামান্য সমস্যা ছিল, যা তিনি শুধরে দিয়েছেন। এমন মেধাবী ও নিষ্ঠাবান একজন স্কুলছাত্রীর হাতে কোরআন লেখা সত্যিই বিস্ময়কর।
সোমা আক্তার জানায়, তার ভাই তাকে আরবি ক্যালিগ্রাফি করতে দেখে অনুপ্রাণিত করে কোরআন লেখার জন্য। ভাইয়ের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে দীর্ঘ ৮ মাস কঠোর পরিশ্রম করে সফলভাবে কোরআন শরিফ লিখে ফেলে। বর্তমানে তার হাতে লেখা কোরআন সৌদি প্রবাসী এক ব্যক্তির অনুরোধে ৬টি কপি তৈরি করেছে এবং মসজিদ ও মাদরাসায় দান করার জন্য আরও কিছু কপি তৈরি করছে।
উপসংহার:
সোমা আক্তারের এমন প্রচেষ্টা কেবল তার পরিবারের গর্বের বিষয় নয়, বরং এটি একটি অনুপ্রেরণামূলক ঘটনা যা দেশের সকল শিক্ষার্থীকে নিজ লক্ষ্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে এগিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করবে।
2 thoughts on “৮ মাসে হাতে কোরআন লেখা নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে দিনাজপুরের স্কুলছাত্রী”