এক গুচ্ছ কবিতা

ফিলিস্তিনের কান্না

এক গুচ্ছ কবিতা

আফরোজা শারমীন

অমরাবতী

আমার একটা নদী চাই
যার কূলে বসে ঢেউয়ের সাথে গল্প করব!
আমার একটা দ্বীপ দরকার
যেথায় আকাশ আর জলধারা নীলে একাকার!
আমার একটা টিনের বাড়ি লাগবে
বৃষ্টির টুপটাপ শব্দে রাত পাড়ি দেব!
আমায় একটা বড় উঠান দেবে?
যেখানে গন্ধরাজ, শিউলি, বকুল, বেলীরা মুক্ত বাতাসে দুলবে!
আচ্ছা অমরাবতী, তুমি নিশ্চুপ কেন?
এই কৃত্রিমতার শহরে তুমি ও কি ডুবে গেছ?
তাহলে আমায় রূপোর কাঠি বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দাও!
আমার কল্পনার পৃথিবী তোমাদের কৃত্রিম পৃথিবীর চেয়ে অনেক সুন্দর!!!

ফিলিস্তিনের কান্না

ক্লান্ত প্রাণ, শ্রান্ত মন

পথহারা এই জীবন

কতটা কন্টক দিয়েছি পাড়ি
কত ঝড়ের ঝাপটায় হারি।
তবুও ছুটছে জীবনের গাড়ি।
থামাও!প্রভু! থামাও এবার
 একটু রহম কর
আমাদের পানে আশীর্বাদের
দোয়ার এবার খুল।
বেশি কিছু চাইনা আমরা
চাই শুধু তোমার ভালোবাসা
এই যুদ্ধের ইতি টেনে
দাও এক নতুন আশা।।।

আমার

আমি পারিনি রবি ঠাকুরের গল্পের নায়িকা হতে

আমি পারিনি নজরুলের মত তারুণ্যের জয়গান গেতে,
আমি পারিনি তপ্ত দুপুরে ক্লান্ত পথিকের তৃষ্ণার জল জোগাতে
পারিনি আমি অনাথ এতিমের জীবনে হাঁসি ফোটাতে।
আমি আরও পারিনি কোনো অসহায় মুক্তিযোদ্ধার পাশে একটু দাঁড়াতে।
আমি খুব ক্ষুদ্র এক সত্তা
শিশিরের মতো ক্ষনস্থায়ী মোর প্রান
ধরণী মা আমায় মাফ করে দিও
আমি পারিনি রাখতে তোমার সম্মান।।

অসহায়

অনেকদিন দখিনের জানালা খোলা হয় না

অনেকদিন হলো ভোরের আকাশটা দেখিনা
অনেকদিন হলো রঙিন শাড়িতে নিজেকে সাজাই না
অনেকদিন হলো মন খুলে হাসি না.
প্রিয় কাচের চুড়ি, গল্প উপন্যাস বইগুলো অযত্নে পড়ে আছে আলমারিতে।
ডাইরির পাতা খুলে পুরনো আমি কে একটু দেখলাম.
ছবির অ্যালবাম নামিয়ে পুরনো স্মৃতিগুলো একবার ঘাটলাম।
সবকিছুই তো ঠিক ছিল তবে কেন হঠাৎ এই ঝড় আসল?
আমি সাদা শাড়ি পড়লাম!
আমিষ ছেড়ে নিরামিষ ধরলাম!
সবার কাছে অপাঙ্ক্তেয়, অপায়া , রাক্ষুসী উপাধি পেলাম.
আচ্ছা, স্বপ্নীল যে দূর্ঘটনায় চলে যাবে আমি কি আগে জানতাম?
জানলে তো সতীদাহের মতো আমিও নদীতে ঝাঁপ দিতাম।
এই বিবর্ন, নিরব , অপমানের কুটিরে আমি খুব অসহায়!