আজকের ইন্টারনেট-নির্ভর বিশ্বে, প্রতি মুহূর্তে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য, ব্রাউজিং ইতিহাস, অনলাইন কার্যকলাপ থেকে শুরু করে সবকিছুই ঝুঁকির মুখোমুখি। পাবলিক Wi-Fi নেটওয়ার্ক, সাইবার অপরাধ এবং সরকারী নজরদারি আমাদের অনলাইন নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি । এই পরিস্থিতিতে, VPN (Virtual Private Network) একটি কার্যকরী সুরক্ষা প্রদান করে আমাদের অনলাইন কার্যকলাপ গোপন রাখতে এবং তথ্য চুরি থেকে সুরক্ষিত রাখতে।
কিন্তু, VPN ব্যবহারের আগে শুধুমাত্র একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার শুরু করা যথেষ্ট নয়। VPN কি, কীভাবে কাজ করে, এর সুবিধা ও ঝুঁকি কি, আইনগত দিক কি – এই সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখা জরুরি। এই ব্লগ পোস্টে, আমরা VPN সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং জেনে নেব একটি নিরাপদ এবং সচেতন অনলাইন জীবনের জন্য VPN কিভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: এক্স মানে কি গুগল? না জানলে জেনে নিন এর বিভিন্ন অর্থ ও ব্যবহার
VPN কি?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে VPN আসলে কি? VPN হল Virtual Private Network এর সংক্ষিপ্ত রূপ। সহজ ভাষায়, VPN হল একটি প্রযুক্তি যা আপনার ইন্টারনেট সংযোগকে একটি সুরক্ষিত “টানেল” এর মাধ্যমে পাঠায়, যা আপনার তথ্য গোপন রাখতে সাহায্য করে।
কল্পনা করুন, আপনি একটি ভিড় ভরা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, যেখানে যেকোন লোক আপনাকে দেখতে ও আপনার কথা শুনতে পাচ্ছে। VPN যেন আপনার জন্য একটি বিশেষ “টানেল” তৈরি করে যেখান দিয়ে শুধুমাত্র আপনিই যাতায়াত করতে পারবেন এবং কেউ আপনাকে দেখতে পাবে না। আশাকরি VPN আসলে কি? তা আপনার বুঝতে পেরেছেন।
VPN কীভাবে কাজ করে?
১. এনক্রিপশন: আপনি যখন VPN ব্যবহার করেন, আপনার ইন্টারনেট ট্র্যাফিক (যেমন ব্রাউজিং ডেটা, পাসওয়ার্ড, ডাউনলোড ইত্যাদি) এনক্রিপ্ট করা হয়। এনক্রিপশন হল একটি প্রক্রিয়া যা আপনার তথ্যকে এমন ভাবে পরিবর্তন করে যা কেবলমাত্র ইচ্ছাকৃত প্রাপক বুঝতে পারে।
২. টানেলিং: এনক্রিপ্ট করা তথ্য তারপর আপনার ডিভাইস থেকে VPN সার্ভারের মাধ্যমে ইন্টারনেটে পাঠানো হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি একটি “টানেল” এর মধ্য দিয়ে ঘটে, যা আপনার তথ্যকে বাইরের দুনিয়া থেকে গোপন রাখে।
৩. IP ঠিকানা পরিবর্তন: VPN সার্ভার আপনার আসল IP ঠিকানা (যা আপনার অবস্থান চিহ্নিত করে) গোপন করে এবং আপনাকে সার্ভারের একটি নতুন IP ঠিকানা প্রদান করে। এতে মনে হয় যেন আপনি অন্য কোন অবস্থান থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।
সহজভাবে বলতে গেলে, VPN আপনার অনলাইন কার্যকলাপ এবং অবস্থান গোপন রাখতে একটি সুরক্ষিত এবং বেনামী পদ্ধতি প্রদান করে।
আরও পড়ুন: 143 মানে কি? না জানলে জেনে নিন
VPN কেন ব্যবহার করবেন?
আজকের ডিজিটাল যুগে, আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং অনলাইন গোপনীয়তা ক্রমবর্ধমান হারে ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। VPN ব্যবহার আপনার অনলাইন সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য একটি কার্যকর পদ্ধতি।
VPN ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা নীচে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো:
১. পাবলিক Wi-Fi নেটওয়ার্কে সুরক্ষা:
- ঝুঁকি: পাবলিক Wi-Fi নেটওয়ার্ক (যেমন – ক্যাফে, বিমানবন্দর) অসুরক্ষিত হতে পারে। হ্যাকাররা সহজেই এই নেটওয়ার্কগুলিতে আপনার তথ্য চুরি করতে পারে।
- VPN কিভাবে সাহায্য করে: VPN আপনার ইন্টারনেট সংযোগকে এনক্রিপ্ট করে, যা পাবলিক Wi-Fi ব্যবহারের সময় আপনার তথ্য সুরক্ষিত রাখে।
২. ভৌগোলিকভাবে নিষিদ্ধ কন্টেন্ট অ্যাক্সেস করা:
- ঝুঁকি: অনেক ওয়েবসাইট এবং স্ট্রিমিং পরিষেবা (Netflix, Hulu, etc.) তাদের কন্টেন্ট নির্দিষ্ট দেশ বা অঞ্চলের জন্য সীমাবদ্ধ রাখে।
- VPN কিভাবে সাহায্য করে: VPN আপনার IP ঠিকানা পরিবর্তন করে এবং অন্য দেশের একটি IP ঠিকানা ব্যবহার করতে দেয়, যা আপনাকে ভৌগোলিকভাবে নিষিদ্ধ কন্টেন্ট অ্যাক্সেস করতে সাহায্য করে।
৩. গোপনীয়তা রক্ষা:
- ঝুঁকি: আপনার ISP (ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী), সরকার এবং অন্যান্য তৃতীয় পক্ষ আপনার অনলাইন কার্যকলাপ ট্র্যাক করতে পারে।
- VPN কিভাবে সাহায্য করে: VPN আপনার IP ঠিকানা গোপন করে এবং আপনার ইন্টারনেট ট্র্যাফিক এনক্রিপ্ট করে, যা আপনার অনলাইন গোপনীয়তা রক্ষা করতে সাহায্য করে।
৪. ডেটা সুরক্ষা:
- ঝুঁকি: হ্যাকাররা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন ব্যাংকিং তথ্য, পাসওয়ার্ড) চুরি করতে পারে যখন আপনি অনলাইনে কেনাকাটা করেন অথবা ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করেন।
- VPN কিভাবে সাহায্য করে: VPN একটি নিরাপদ টানেল তৈরি করে যা আপনার ডেটা এনক্রিপ্ট করে এবং হ্যাকারদের থেকে সুরক্ষিত রাখে।
৫. বাইপাস সেন্সরশিপ:
- ঝুঁকি: কিছু দেশ সরকারী সেন্সরশিপ প্রয়োগ করে এবং নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট এবং পরিষেবা অবরুদ্ধ করে।
- VPN কিভাবে সাহায্য করে: VPN আপনাকে একটি ভিন্ন অবস্থান থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে এই সেন্সরশিপ বাইপাস করতে সাহায্য করে।
VPN ব্যবহার আপনার অনলাইন গোপনীয়তা, সুরক্ষা, এবং স্বাধীনতা বৃদ্ধি করতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের কোন জেলা কোন পণ্য নিয়ে পরিচিত- জেনে রাখুন কাজে আসবে
VPN ব্যবহারের আগে জানতে হবে যেসব বিষয়:
VPN ব্যবহার শুরু করার আগে, নিজের সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা সুনিশ্চিত করতে এবং সঠিক VPN পছন্দ করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন:
১. VPN প্রোভাইডারের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং সুনাম:
- গবেষণা করা: ব্যবহারকারী সমীক্ষা, স্বাধীন পর্যালোচনা এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতামত পড়ুন।
- লগ রাখার নীতি যাচাই করা: VPN প্রোভাইডার আপনার অনলাইন কার্যকলাপের কোন তথ্য (যেমন ব্রাউজিং ইতিহাস, IP ঠিকানা, ডাউনলোড ইতিহাস) সংরক্ষণ করে কিনা তা জেনে নিন। “no-logs” নীতি সম্পন্ন VPN বেছে নেওয়া উত্তম।
২. নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য:
- এনক্রিপশন প্রোটোকল: VPN প্রোভাইডার কোন এনক্রিপশন প্রোটোকল ব্যবহার করে তা যাচাই করুন। OpenVPN, IKEv2/IPSec এবং WireGuard জনপ্রিয় এবং নিরাপদ প্রোটোকল।
- Kill switch: Kill switch বৈশিষ্ট্যটি VPN সংযোগ বিলুপ্ত হলে আপনার ইন্টারনেট সংযোগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেয়, যা আপনার আসল IP ঠিকানা প্রকাশ হওয়া থেকে রাখে।
- DNS leak protection: আপনার DNS রিকোয়েস্ট VPN টানেলের মাধ্যমে যাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে এই বৈশিষ্ট্যটি গুরুত্বপূর্ণ।
৩. গতি এবং পারফর্ম্যান্স:
- সার্ভার অবস্থান: আপনার কাছের অবস্থানে যথেষ্ট সংখ্যক সার্ভার থাকলে VPN গতি ভালো হয়।
- গতি পরীক্ষা: VPN ব্যবহারের আগে এবং পরে আপনার ইন্টারনেট গতি পরীক্ষা করে দেখুন যে VPN আপনার গতিতে কতটা প্রভাব ফেলছে।
৪. সামঞ্জস্য এবং ব্যবহার সহজলভ্যতা:
- ডিভাইস সামঞ্জস্য: আপনার সকল ডিভাইস (কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, রাউটার) এবং অপারেটিং সিস্টেমের সাথে VPN সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা নিশ্চিত করুন।
- ব্যবহারকারী বান্ধব অ্যাপ: একটি সহজেই ব্যবহারযোগ্য VPN অ্যাপ বাছাই করুন।
৫. মূল্য এবং পেমেন্ট বিকল্প:
- বিনামূল্যে vs. বেতনভিত্তিক: বিনামূল্যে VPN সীমিত বৈশিষ্ট্য এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে আসতে পারে।
- পেমেন্ট পদ্ধতি: নিরাপদ পেমেন্ট পদ্ধতি (ক্রেডিট কার্ড, PayPal) ব্যবহার করুন।
৬. গ্রাহক সেবা:
- ২৪/৭ গ্রাহক সেবা: যেকোন সমস্যার জন্য ২৪/৭ গ্রাহক সেবা প্রদান করে এমন VPN প্রোভাইডার বেছে নিন।
৭. অতিরিক্ত বিষয়:
- ডেটা সীমা: কিছু VPN প্রোভাইডার ডেটা ব্যবহারের সীমা থাকে।
- একযোগে সংযোগের সংখ্যা: একই সময়ে কত টি ডিভাইস VPN এ সংযুক্ত করা যাবে তা যাচাই করুন।
মনে রাখবেন, VPN ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। সঠিক VPN পছন্দ করার জন্য সময় নিন।
আরও পড়ুন: নীল নদ বনাম আমাজন নদী: কোনটি দীর্ঘতম? দীর্ঘদিন ধরে চলছে বিতর্ক
সব থেকে ভালো VPN কোনটি?
“সবথেকে ভালো VPN” বলতে কোন নির্দিষ্ট VPN কে বোঝায়, তা সরাসরি বলা কঠিন কারণ এটি আপনার নিজস্ব চাহিদা এবং পছন্দের উপর নির্ভর করে।
তবে, আপনার জন্য সঠিক VPN নির্বাচনে সাহায্য করার জন্য কিছু জনপ্রিয় এবং সুনামধন্য VPN প্রোভাইডারের নাম এবং তাদের বৈশিষ্ট্য নিচে তুলে ধরা হলো:
১. ExpressVPN:
- সুবিধা: অতি দ্রুত গতি, শক্তিশালী নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা, ব্যবহারকারী বান্ধব অ্যাপ, ৯৪ টি দেশে সার্ভার।
- অসুবিধা: অপেক্ষাকৃত দামি।
২. NordVPN:
- সুবিধা: দ্রুত গতি, শক্তিশালী নিরাপত্তা, অনেক গুলি সার্ভার (৫৫০০+ সার্ভার ৬০ টিরও বেশি দেশে), একসাথে ৬ টি ডিভাইসে ব্যবহার করার সুবিধা।
- অসুবিধা: কিছু সার্ভারের গতি ধীর হতে পারে।
৩. CyberGhost:
- সুবিধা: ব্যবহারকারী বান্ধব ইন্টারফেস, সুলভ মূল্য, অনেক গুলি সার্ভার (৯০০০+ সার্ভার ৯১ টি দেশে), Netflix, torrenting, gaming ইত্যাদির জন্য বিশেষায়িত সার্ভার।
- অসুবিধা: কিছু ক্ষেত্রে গতি একটু কম।
৪. Surfshark:
- সুবিধা: সুলভ মূল্য, সীমাহীন ডিভাইসে ব্যবহার করার সুবিধা, ভালো গতি, শক্তিশালী নিরাপত্তা।
- অসুবিধা: নতুন প্রতিষ্ঠান, কিছু ক্ষেত্রে সার্ভার সংযোগ একটু অস্থির হতে পারে।
৫. ProtonVPN:
- সুবিধা: শক্তিশালী গোপনীয়তা নীতি, বিনামূল্যে ব্যবহারের সুবিধা, ভালো গতি।
- অসুবিধা: বিনামূল্যে প্যাকেজে সীমিত বৈশিষ্ট্য এবং সার্ভার অ্যাক্সেস।
কোন VPN আপনার জন্য সঠিক, তা নির্ভর করবে আপনার ব্যবহার, চাহিদা, এবং বাজেটের উপর।
আপনার জন্য VPN নির্বাচন করার আগে এই বিষয় গুলি বিবেচনা করুন:
- গতি: VPN আপনার ইন্টারনেট গতি কমিয়ে দিতে পারে। দ্রুত গতির VPN সার্ভার প্রদান করে এমন VPN পছন্দ করুন।
- নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা: আপনার তথ্য সুরক্ষিত রাখতে VPN প্রোভাইডারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং গোপনীয়তা নীতি যাচাই করুন।
- সার্ভার অবস্থান: আপনার পছন্দের দেশ এবং অঞ্চলে যথেষ্ট সংখ্যক সার্ভার আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
- বৈশিষ্ট্য: আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি (kill switch, split tunneling, etc.) সরবরাহ করে এমন VPN পছন্দ করুন।
- মূল্য: বিনামূল্যে এবং বেতনভিত্তিক VPN উভয়ই রয়েছে। আপনার বাজেট এবং চাহিদা অনুযায়ী পছন্দ করুন।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে যে ৭টি বিষয় মেনে চললে পাবেন সফলতা
VPN ব্যবহারের নিয়ম: ধাপে ধাপে গাইড
VPN ব্যবহার করা মোটামুটি সহজ। বেশিরভাগ VPN প্রোভাইডার ব্যবহারকারী বান্ধব অ্যাপ এবং সফটওয়্যার প্রদান করে যা প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজ করে তোলে।
ধাপ ১: VPN প্রোভাইডার নির্বাচন করুন:
প্রথমত, আপনার জন্য সঠিক VPN প্রোভাইডার নির্বাচন করুন। আপনার আবশ্যকতা এবং বাজেট বিবেচনা করে একটি বিশ্বস্ত এবং সুনামধন্য VPN প্রোভাইডার পছন্দ করুন।
ধাপ ২: VPN অ্যাপ/সফটওয়্যার ডাউনলোড এবং ইনস্টল করুন:
আপনার নির্বাচিত VPN প্রোভাইডারের ওয়েবসাইট থেকে আপনার ডিভাইসের (কম্পিউটার, স্মার্টফোন , ট্যাবলেট) জন্য VPN অ্যাপ বা সফটওয়্যার ডাউনলোড করুন এবং ইনস্টল করুন।
ধাপ ৩: VPN একাউন্ট তৈরি করুন:
VPN অ্যাপ/সফটওয়্যার ইনস্টল করার পর, একটি নতুন VPN একাউন্ট তৈরি করুন। আপনার ইমেল ঠিকানা এবং পছন্দের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে একাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
ধাপ ৪: VPN সার্ভারে সংযোগ স্থাপন করুন:
VPN অ্যাপ/সফটওয়্যার খুলুন এবং আপনার VPN একাউন্টে লগ ইন করুন। তারপর, আপনার পছন্দের VPN সার্ভারে সংযোগ স্থাপন করুন। বেশিরভাগ VPN অ্যাপ একটি তালিকা থেকে সার্ভার নির্বাচন করার সুবিধা প্রদান করে।
ধাপ ৫: VPN সংযোগ যাচাই করুন :
VPN সংযোগ স্থাপন হওয়ার পর, আপনার নতুন IP ঠিকানা যাচাই করুন। অনেক ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ রয়েছে যা আপনার IP ঠিকানা দেখাতে পারে। আপনার VPN যথাযথভাবে কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত করতে এটি করুন।
আরও কিছু টিপস:
- সর্বদা একটি বিশ্বস্ত Wi-Fi নেটওয়ার্ক ব্যবহার করুন: যদিও VPN আপনার তথ্য এনক্রিপ্ট করে, তবুও একটি সুরক্ষিত Wi-Fi নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা সর্বোত্তম।
- আপনার VPN অ্যাপ/সফটওয়্যার আপডেট রাখুন : নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে নিয়মিত আপডেট প্রকাশ করা হয়।
VPN ব্যবহার করে, আপনি নিরাপদে এবং বেসরকারীভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ইন্টারনেটে আপনার ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করলে করণীয় কি
VPN ব্যবহার করলে কোন দেশে কেমন শাস্তি:
VPN ব্যবহারের বৈধতা ও শাস্তির বিষয়টি দেশভেদে ভিন্ন। বেশিরভাগ দেশেই ব্যক্তিগত, আইনসম্মত কাজের জন্য VPN ব্যবহার বৈধ। তবে, কিছু দেশে VPN ব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত्रिত অথবা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
কিছু দেশ যেখানে VPN ব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত বা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ:
- চীন: শুধুমাত্র সরকার অনুমোদিত VPN ব্যবহার করা বৈধ।
- রাশিয়া: সরকার নির্ধারিত ওয়েবসাইট ব্লক করার জন্য ব্যবহার করা VPN নিষিদ্ধ।
- বেলারুশ: সরকার-অননুমোদিত VPN ব্যবহার নিষিদ্ধ।
- ইরান: সরকার-অনুমোদিত VPN ব্যবহার ব্যতীত অন্য VPN ব্যবহার নিষিদ্ধ।
- ওমান: শুধুমাত্র সরকার-অনুমোদিত VPN ব্যবহার করা বৈধ।
শাস্তির ধরন:
VPN ব্যবহারের জন্য শাস্তি দেশভেদে ভিন্ন হতে পারে:
- জরিমানা: কিছু দেশে, VPN ব্যবহারের জন্য জরিমানা ধার্য করা হতে পারে।
- কারাদণ্ড: কিছু দেশে, VPN ব্যবহার গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে এবং কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
- ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা: কিছু ক্ষেত্রে, VPN ব্যবহার ধরা পড়লে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ:
- ভ্রমণের আগে: কোন দেশে ভ্রমণ করার আগে, VPN সম্পর্কিত আইন সম্পর্কে জ্ঞাত হন।
- ব্যক্তিগত ঝুঁকি: আপনার অবস্থান এবং কার্যকলাপের উপর VPN ব্যবহারের ঝুঁকি নির্ভর করে।
- আইনজীবীর পরামর্শ: VPN ব্যবহার সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে একজন আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করুন।
মনে রাখবেন: এই তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞানের জন্য প্রদান করা হয়েছে এবং আইনগত পরামর্শ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়।
আরও পড়ুন: 2024 সালে ফ্রি টাকা ইনকাম করার সেরা Apps এবং সাইট
উপসংহার
VPN একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি যা আজকের ইন্টারনেট বিশ্বে আমাদের অনলাইন গোপনীয়তা এবং সুরক্ষা রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাবলিক Wi-Fi নেটওয়ার্কে সুরক্ষা, ভৌগোলিক নিষেধাজ্ঞা বাইপাস করা এবং সরকারী নজরদারি থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য VPN একটি কার্যকরী পদ্ধতি ।
তবে, VPN কোন জাদুকরী সমাধান নয় । VPN ব্যবহারের সাথে কিছু ঝুঁকি ও জড়িত থাকতে পারে এবং সকল VPN প্রোভাইডার একই রকম নিরাপদ ও বিশ্বস্ত নয়। তাই, একটি VPN সেবা ব্যবহার করার আগে বিশ্বস্ত প্রোভাইডার, সঠিক এনক্রিপশন প্রোটোকল, লগ রাখার নীতি এবং আইনি দিক গুলি ভালোভাবে যাচাই করে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মনে রাখবেন, অনলাইন সুরক্ষার জন্য কেবলমাত্র VPN এর উপর নির্ভর না করে সতর্কতা এবং সচেতনতা অভ্যাস বজায় রাখা অপরিহার্য।
আমরা এতক্ষন VPN কি, কিভাবে কাজ করে, ব্যবহারের সম্পূর্ণ গাইড: সুবিধা, ঝুঁকি এবং আইনি দিক সম্পর্কে আলোচনা করলাম। আশাকরি আপনাদের একটু হলেও উপকারে আসবে। পোস্টটি শেয়ার ও কমেন্ট করে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন। ধন্যবাদ পাশে থাকবেন।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
4 thoughts on “VPN কি, জেনে নিন ব্যবহারের সম্পূর্ণ গাইড: সুবিধা, ঝুঁকি এবং আইনি দিক”