পবিত্র শবে বরাতে যে ৪টি কাজ করবেন না

শবে বরাত

পবিত্র শবে বরাত ইসলাম ধর্মের এক অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ রাত, যে রাতে মুসলিম উম্মাহ আল্লাহর কাছে নিজেদের পাপ মোচন এবং ভালো ভাগ্যের জন্য প্রার্থনা করে। এই রাতে বিশেষ ইবাদত, দোয়া এবং নফল নামাজ আদায় করা হয়। তবে, কিছু মানুষ এই পুণ্যময় রাতে কিছু কাজ করে যা ইসলামে অনুমোদিত নয়। এই নিবন্ধে আমরা সেই ৪টি কাজের কথা বলব, যা শবে বরাতে এড়িয়ে চলা উচিত।

আরও পড়ুন: পাদরির যে কথা শুনে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তালহা রা.

আতশবাজি ও পটকা ফোটানো:

শবে বরাতে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো অনেকের কাছে উৎসবের অংশ মনে হলেও, এটি ইসলামিক শিক্ষার বিপরীত। এই ধরনের কার্যকলাপ শুধু অর্থের অপচয় নয়, বরং এটি বিপদজনকও বটে। এছাড়া, এই কাজগুলো থেকে উদ্ভূত শব্দ ও দূষণ পরিবেশ এবং মানুষের জন্য ক্ষতিকর।

কিছু মানুষ এই রাতে আতশবাজি ফোটানোর চেষ্টা করে যা বিদ্যমান সমাজে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরিণত হতে পারে অগ্নিকাণ্ড এবং ভয়ানক দুর্ঘটনা। এ সম্পর্কে বৃদ্ধ ও শিশুরা ভয়ে বের হতে পারে এবং এটি ইসলামের প্রধান উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে প্রতিকূল।

আলোকসজ্জা করা:

অনেক সময় শবে বরাতে বাড়ি বা মসজিদে ব্যাপক আলোকসজ্জা করা হয়, যা অপ্রয়োজনীয়। ইসলামে সাদাসিধে জীবনযাপনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। তাই, এই ধরনের আলোকসজ্জা বর্জন করে সেই অর্থ দান করা বা দরিদ্রদের সাহায্যে ব্যয় করা অধিক পুণ্যের কাজ।

কিছু স্থানে এই রাতে আলোকসজ্জা করা হয়, যা একটি উৎসবের মতো জানানো হয়। তবে, এটি শবে বরাতের সাথে কোনো সম্পর্ক রাখে না এবং ইসলামে প্রতিষ্ঠিত নয়। এই ধরনের অব্যাহতি কোরআনে নিষেধারূপে উল্লেখিত আছে।

গুনাহে জড়ানো:

শবে বরাতে যেকোনো ধরনের গুনাহে জড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত। এই রাতে আমাদের উচিত পাপ থেকে দূরে থাকা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। অযথা বিনোদন, অশ্লীলতা বা অন্য কোনো পাপের কাজে লিপ্ত হওয়া এই রাতের পবিত্রতা নষ্ট করে।

কিছু মানুষ অজান্তে এই রাতে অনেক গুনাহ করে। যেমন, হিংসা, জাদুটোনা, বিশ্বাসের অপচয়, পিতা-মাতার অবাধ্যতা, যৌন পরিতৃপ্তি ইত্যাদি। এই ধরনের কাজ ইসলামের প্রধান আদর্শের বিরুদ্ধে এবং এই রাতের পুণ্যময় অবস্থা বিকৃত করে।

হালুয়া-রুটি:

শবে বরাতে হালুয়া-রুটি বিতরণ একটি প্রচলিত রীতি, তবে এটি অতিরিক্ত খাবারের অপচয় এবং অপ্রয়োজনীয় খরচের কারণ হতে পারে। এর পরিবর্তে, আমরা যদি দরিদ্র এবং অভাবী মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করি, তাহলে এটি আরও বেশি পুণ্যের কাজ হবে। এই রাতে আমাদের উচিত দান-খয়রাত এবং সাহায্যের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।

কিছু মানুষ মিথ্যা হাদিসের ভিত্তিতে এই রাতে হালুয়া-রুটি তৈরি করে। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বিপর্যস্ত ধারণা। কোনো ধরণের মূল হাদিসে এমন কিছু উল্লেখ করা হয়নি।”

সমস্ত বিষয়ে মনোনিবেশ করে বুদ্ধিমত্তা ও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, যাতে পবিত্র শবে বরাত সঠিকভাবে উপভোগ করা যায়।”

মোটকথা, শবে বরাত একটি অত্যন্ত পবিত্র সময়, যখন মুসলিমরা আল্লাহর কাছে নিজেদের পাপ মোচন এবং ভালো ভাগ্যের জন্য প্রার্থনা করে। এই রাতে উপরে উল্লিখিত ৪টি কাজ এড়িয়ে চলা উচিত, যাতে আমাদের ইবাদত আরও খাঁটি এবং আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। আসুন, আমরা এই পবিত্র রাতে আমাদের মনোযোগ এবং প্রার্থনা আল্লাহর দিকে নিবদ্ধ করি এবং আমাদের জীবনকে আরও সুন্দর ও অর্থপূর্ণ করি।

Juger Alo Google News   যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন