সেটিংসে ছোট্ট পরিবর্তন করলে, পাসওয়ার্ড জানতে পারবে না হ্যাকার

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড

বর্তমানে তথ্য-প্রযুক্তির যুগে, স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে অনলােইন নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাকাররা নানা কৌশলে পাসওয়ার্ড চুরি করে থাকে, যা আমাদের অনলাইন পরিচয় এবং তথ্য সুরক্ষার জন্য বড় ধরনের হুমকি। তাই অনলাইনে নানা ধরনের অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এর গুরুত্ব অপরিসীম।

একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড হ্যাকিং থেকে আমাদের ডিজিটাল জীবনকে সুরক্ষিত রাখতে পারে। এই প্রবন্ধে, আমরা কিছু সহজ কিন্তু কার্যকরী উপায় তুলে ধরব, যা আপনার পাসওয়ার্ডকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।

আরও পড়ুন : বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার কারণ কী? কমানোর উপায় ও করণীয়

সেটিংস পরিবর্তনের কৌশল

ডিজিটাল যুগে আমাদের অনলাইন নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  তবে, কিছু সাধারণ সেটিংস পরিবর্তন করে আমরা এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারি। এখানে এমন কিছু সেটিংস পরিবর্তনের উপায় আলোচনা করা হলো, যা হ্যাকারদের পাসওয়ার্ড জানা বা অনুমান করা কঠিন করে তুলবে।

দুর্বল পাসওয়ার্ড পরিহার করা

প্রথমেই আমাদের দুর্বল পাসওয়ার্ড পরিহার করতে হবে। ‘123456’, ‘password’, ‘qwerty’ এর মতো সাধারণ পাসওয়ার্ড হ্যাকারদের জন্য অনুমান করা সহজ। একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ডে বড় হাতের অক্ষর, ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা, এবং বিশেষ চিহ্ন থাকা উচিত।

পাসওয়ার্ড ইন্ডিকেটরের ব্যবহার

পাসওয়ার্ড তৈরির সময় অনেক ওয়েবসাইট ও অ্যাপ কালার ইন্ডিকেটর প্রদান করে। এই ইন্ডিকেটরগুলি পাসওয়ার্ডের শক্তি নির্দেশ করে। লাল রং দুর্বল পাসওয়ার্ডের ইঙ্গিত দেয়, অন্যদিকে সবুজ রং পাসওয়ার্ডের শক্তি নির্দেশ করে। এই ইন্ডিকেটরগুলি ব্যবহার করে আপনি আপনার পাসওয়ার্ডকে আরও শক্তিশালী করতে পারেন।

টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA)

টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হল একটি অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্তর যা পাসওয়ার্ডের পাশাপাশি আরেকটি প্রমাণীকরণ পদ্ধতি যোগ করে। এটি হতে পারে একটি টেক্সট মেসেজ, একটি অ্যাপ থেকে জেনারেট করা কোড, বা একটি বায়োমেট্রিক তথ্য।

পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার

পাসওয়ার্ড ম্যানেজার অ্যাপ বা সেবা ব্যবহার করা উচিত, যা আপনার সব পাসওয়ার্ড নিরাপদে সংরক্ষণ করে এবং প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য শক্তিশালী এবং অনন্য পাসওয়ার্ড তৈরি করে।

বর্তমানে বিভিন্ন পাসওয়ার্ড ম্যানেজার টুল রয়েছে যেমন লাস্ট পাস এবং ডেলিনিয়া, যা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করতে সাহায্য করে। এই টুলগুলি পাসওয়ার্ডের শক্তি নির্ধারণ করে এবং সেই অনুযায়ী পরামর্শ দেয়।

ব্রাউজারের পাসওয়ার্ড সাজেশন ফিচার

আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের জন্য বিভিন্ন ব্রাউজার যেমন ক্রোম এবং সাফারি পাসওয়ার্ড সাজেশন এবং সেভ করার অপশন প্রদান করে। এই ফিচারগুলি ব্যবহার করে আপনি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি এবং সেগুলি সহজে মনে রাখতে পারেন।

পাসওয়ার্ডের দৈর্ঘ্য ও জটিলতা

সাইবার বিশেষজ্ঞরা সাধারণত পরামর্শ দেন যে, পাসওয়ার্ড অন্তত ১২ অক্ষরের হওয়া উচিত। এছাড়াও, ছোট ও বড় হাতের অক্ষর, সংখ্যা, এবং বিশেষ অক্ষরের মিশ্রণে পাসওয়ার্ড সেট করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ এই প্যাটার্ন মেনে চলতে পারেন – তিনটে বড় হাতের অক্ষর, চারটি ছোট হাতের অক্ষর, দুটি সংখ্যা এবং তিনটে বিশেষ অক্ষর।

নিরাপদ নেটওয়ার্ক ব্যবহার

অনিরাপদ ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে লগইন করা এড়িয়ে চলুন। পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলে VPN ব্যবহার করুন, যা আপনার ডেটা এনক্রিপ্ট করে এবং হ্যাকারদের কাছ থেকে রক্ষা করে।

সফটওয়্যার আপডেট রাখা

নিয়মিত আপনার অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজার, এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলি আপডেট রাখুন। আপডেটগুলি প্রায়ই নিরাপত্তা ফিক্স এবং প্যাচ নিয়ে আসে যা হ্যাকারদের প্রবেশ কঠিন করে তোলে।

সচেতন থাকা

ফিশিং ইমেইল, সন্দেহজনক লিংক, এবং অজানা সোর্স থেকে আসা অ্যাটাচমেন্ট এড়িয়ে চলুন। এগুলি হ্যাকারদের প্রিয় কৌশল যা তারা পাসওয়ার্ড চুরি করার জন্য ব্যবহার করে।

উপসংহার

এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে, আমরা আমাদের ডিজিটাল জীবনকে আরও নিরাপদ করতে পারি। হ্যাকাররা সবসময় নতুন কৌশল খুঁজে বের করে, তাই আমাদের নিরাপত্তা প্রক্রিয়াগুলি সবসময় আপডেট রাখা এবং সচেতন থাকা জরুরি।

Juger Alo Google News   যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন