আপনি কি আপনার টুথব্রাশটি বাথরুমে একটি মগে রাখেন? সম্ভবত আপনার টুথব্রাশটি পরিবারের অন্য সদস্য বা রুমমেটদের অন্যান্য টুথব্রাশের সঙ্গে রাখেন, তাই না? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে আপনি এই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসটি একা অনুসরণ করছেন না, আপনার মতো আরও অনেকেই আছে যারা একটি করে থাকেন। এখন প্রশ্ন হলো এতে সমস্যা কি? এটি কেন অস্বাস্থ্যকর?আবার অনেকেই প্রশ্ন করেন বাথরুমে টুথব্রাশ রাখা কি ঠিক?
ডেন্টাল স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনার টুথব্রাশ বাথরুমে রাখলে তা মল কণার সংস্পর্শে আসতে পারে এবং একই মগে এক সঙ্গে সবার টুথব্রাশ রাখলে একজনের জীবানু অন্য ব্রাশের সাথে লেগে যেতে পারে।
আরও পড়ুন :বুড়ো বয়সেও চিরতরুণ থাকতে খান এই শাকের চচ্চড়ি
কেন এটি অস্বাস্থ্যকর?
বাথরুমে টুথব্রাশ রাখার ফলে তা মল কণার সংস্পর্শে আসতে পারে। বাথরুমের পরিবেশ সাধারণত আর্দ্র ও উষ্ণ থাকে, যা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের বৃদ্ধির জন্য আদর্শ। টয়লেট ফ্লাশ করার সময় বায়ুবাহিত জীবাণু টুথব্রাশে লেগে থাকতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাথরুমে টুথব্রাশ রাখা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বাথরুমের আর্দ্র ও উষ্ণ পরিবেশ ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের বৃদ্ধির জন্য সুবিধা করে দেয়। এছাড়াও টয়লেট ফ্লাশ করার সময় বায়ুবাহিত জীবাণু টুথব্রাশে লেগে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন : সেক্সে রসুনের উপকারিতা কি এবং খাওয়ার নিয়ম
বাথরুমের পরিবেশ ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির কারণ
- বাথরুম সারাক্ষণ ভিজে থাকে এবং তাপমাত্রা বেশি থাকে, যা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির জন্য সুবিধা করে দেয়।
- টয়লেট ফ্লাশ করার সময় বায়ুবাহিত জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে এবং টুথব্রাশে লেগে থাকতে পারে।
- বাথরুমের মেঝেতে বিভিন্ন জীবাণু থাকে যা টুথব্রাশে লেগে থাকতে পারে।
টুথব্রাশে জীবাণু থাকার ক্ষতি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টুথব্রাশে জীবাণু থাকলে তা মুখের বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। যেমন দাঁতের পচন, মাড়ির সমস্যা এবং পেটের অসুখ। এছাড়াও টুথব্রাশে থাকা জীবাণু শরীরের অন্যান্য অঙ্গেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
টুথব্রাশ সংরক্ষণের সঠিক উপায়
বিশেষজ্ঞরা টুথব্রাশ সংরক্ষণের কিছু উপায় সুপারিশ করেছেন:
- বাথরুমের বাইরে রাখুন: টুথব্রাশ বাথরুমের বাইরে শুকনো ও বাতাসপ্রবাহযুক্ত জায়গায় রাখুন।
- ভালোভাবে ধুয়ে রাখুন: ব্যবহারের পর টুথব্রাশ ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন এবং উল্লম্ব অবস্থায় রাখুন।
- কভার ব্যবহার করুন: টুথব্রাশ একটি কভার দিয়ে ঢেকে রাখুন যাতে বায়ুবাহিত জীবাণু থেকে রক্ষা করা যায়।
- নিয়মিত পরিবর্তন করুন: প্রতি ৩-৪ মাস অন্তর টুথব্রাশ বদলে ফেলুন।
- টয়লেটের ঢাকনা বন্ধ রাখুন: ফ্লাশ করার আগে টয়লেটের ঢাকনা বন্ধ রাখুন যাতে বায়ুবাহিত জীবাণু ছড়ায় না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টুথব্রাশ সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও পরিচর্যা করলে মুখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই টুথব্রাশের যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রায় মানুষের জ্ঞিজ্ঞাসিত বাথরুমে টুথব্রাশ রাখা নিয়ে কিছু প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্ন: বাথরুমে টুথব্রাশ রাখা কি ঠিক?
উত্তর: না, বাথরুমে টুথব্রাশ রাখা উচিত নয়। কারণ বাথরুম জীবাণুর আঁতুড়ঘর। টয়লেট ফ্লাশ করলে মলের কণা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে যা টুথব্রাশে লেগে থাকতে পারে। এছাড়া বাথরুমের আর্দ্রতায় ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন: তাহলে টুথব্রাশ কোথায় রাখা উচিত?
উত্তর: টুথব্রাশ বাথরুমের বাইরে, একটি খোলা, শুকনো ও পরিষ্কার জায়গায় রাখা উচিত। যেমন- বেডরুমের ড্রয়ারে বা আলমারিতে।
প্রশ্ন: টুথব্রাশ কিভাবে রাখলে ভালো হবে?
উত্তর: টুথব্রাশ সোজা করে দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে যাতে করে পানি ঝরে যায় এবং ব্রাশ শুকিয়ে যায়। ব্যবহারের পর ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। টুথব্রাশের উপর ঢাকনা দেয়া ঠিক নয়।
প্রশ্ন: বাথরুমে টুথব্রাশ লুকিয়ে রাখার উপায় কি?
উত্তর: বাথরুমে টুথব্রাশ লুকিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। তবে যদি রাখতেই হয়, তাহলে ব্রাশের উপর ভেন্টেড ক্যাপ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে ক্যাবিনেটে বা ড্রয়ারে ভেজা অবস্থায় রাখা যাবে না।
প্রশ্ন: কত দিন পর পর টুথব্রাশ বদলাতে হয়?
উত্তর: প্রতি ৩-৪ মাস পর পর টুথব্রাশ বদলে ফেলা উচিত। তবে ব্রিসেল নষ্ট হলে আগেই বদলাতে হবে। অসুস্থ হলেও নতুন টুথব্রাশ ব্যবহার করা ভালো।
তাই স্বাস্থ্যকর ও পরিষ্কার দাঁতের জন্য টুথব্রাশ সঠিকভাবে রাখা ও যত্ন নেয়া খুবই জরুরি। বাথরুমের বাইরে, শুকনো ও বাতাসচলাচল পূর্ণ স্থানে টুথব্রাশ রাখলে জীবাণুর সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন |
3 thoughts on “বাথরুমে টুথব্রাশ রাখেন? জেনে নিন কী ক্ষতি করছেন”