১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস কেন? প্রশ্নটি খুবই প্রচলিত, তবে এর উত্তর অনেকেরই অজানা। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয় ভালোবাসা দিবস, যেটি আমাদের কাছে “ভ্যালেন্টাইনস ডে” হিসেবে পরিচিত। এই দিনটিকে কেন্দ্র করে প্রেমিক-প্রেমিকা, স্বামী-স্ত্রী, বন্ধুবান্ধবরা একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাতে নানা উপায়ে উদযাপন করে থাকে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি কেন এই বিশেষ দিন হিসেবে নির্বাচন করা হলো? আর এই ভালোবাসার সম্পর্ক কীভাবে ভ্যালেন্টাইনের সাথে জড়িয়ে? আজকের ব্লগ পোস্টে আমরা জানবো, কীভাবে এই দিনটি বিশ্বের এক বিরাট ভালোবাসা উৎসবে পরিণত হয়েছে এবং এর ইতিহাস কীভাবে জন্ম নিয়েছে।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস কেন?
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখতে পাবেন এর পেছনের কাহিনি মোটেও সহজ কিছু নয়। রক্তাক্ত এক ইতিহাস জড়িয়ে আছে ভালোবাসা দিবসের সঙ্গে। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন খ্রিস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক বসবাস করতেন ২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে। সেই সময়ে রোমতে খ্রিস্ট ধর্মের প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু তখনকার রাজার আদেশ অমান্য করে খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারে নেমে পড়েন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন।

রোমের সিংহাসনে থাকা সম্রাট ক্লডিয়াস মেনে নিতে পারেননি এই ঘটনা। সম্রাট ক্লডিয়াস বিশ্বাস ছিল, প্রেম কিংবা বিয়ের কারণে পুরুষের বুদ্ধি আর শক্তি কমে যায়। তার সমস্ত সৈন্যর ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল এ বিষয়ে। তারা কেউ প্রেম বা বিয়ের সম্পর্কে জড়াতে পারতেন না। একই সময়ে রোমে খ্রিস্টধর্মের প্রচারও নিষিদ্ধ করেন সম্রাট ক্লডিয়াস।
আরও পড়ুন: ভালোবাসা দিবসের মেসেজ : প্রেমের বার্তায় মুগ্ধতা ও আন্তরিকতা
আরও পড়ুন
নিয়ম ভাঙার জন্যই আগমন ঘটেছিল সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের। সম্রাটের আদেশের বিরোধিতা তিনি প্রকাশ্যেই শুরু করলে। যে কারণে তাকে বন্দি হতে হলো রাজার সৈন্যদের হাতে। কিন্তু তাতে কী! বন্দি থাকাকালীনও মানুষের প্রতি ভালোবাসা তাকে বেশ জনপ্রিয় করে তুললো। ভ্যালেন্টাইন পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। কারাগারে থাকাকালীন এক নারীকে চিকিৎসা করে তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন।
এরপর রাজার রোষে পড়েন আরও বেশি। ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জীবন উৎসর্গ করা ভালোবাসার কারণেই তার মৃত্যুর দিনটি ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। নাম দেওয়া হয় ভ্যালেন্টাইন ডে। এই উদযাপনের শুরু ইউরোপ থেকেই।
রোমে একটি আঞ্চলিক উৎসব ছিল লুপারকেলিয়া নামে। এই উৎসব পালন করা হতো ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪-১৫ তারিখের দিকে। লুপারকেলিয়া উৎসবটিকে বিবেচনা করা হতো বসন্তের আগমনী দিন হিসেবে। সেই উৎসবে একটু বক্স থেকে আগ্রহী ছেলেমেয়েরা নাম লেখা কাগজ তুলতেন। এরপর একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতেন। এমনকী অনেকের সম্পর্ক গড়াতো বিয়ে পর্যন্ত। এরপর ধীরে ধীরে সেই উৎসব এবং সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগ একসঙ্গে মিলে রূপ নিয়েছে ভালোবাসা দিবসে।
ভ্যালেন্টাইনস ডে ও ভালোবাসার সম্পর্ক
ভ্যালেন্টাইনস ডে এবং ভালোবাসা দিবস দুটির সম্পর্ক সহজেই প্রাচীন ইতিহাসে পাওয়া যায়। সেটি আরেকটি নামেও পরিচিত হয়েছিল, যা সাধারণত প্রেমের ও ভালোবাসার দিনগুলির জন্য ব্যবহৃত হতো। এই উৎসব পালনের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে ভালোবাসার প্রকাশ ও প্রেম ও আপেক্ষিকতা বাড়ানো।
আরও পড়ুন: 300+ ভালোবাসার ক্যাপশন বাংলা- Love Caption Bangla
ভ্যালেন্টাইনস ডে এবং ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি ও ইতিহাস খুঁজে পেতে গিয়ে মানুষের মধ্যে আদরের ও ভালোবাসার আরো গভীর সংবাদ প্রকাশ করে। এই উৎসবের মাধ্যমে মানুষ একে অপরের প্রতি আদর, সম্মান, ও স্বাগতম প্রকাশ করতে পারে এবং প্রেম এবং ভালোবাসার মূল্য বুঝতে পারে। এই দিনটি সবার জন্যে একটি অমূল্য সম্পত্তি, একটি সম্প্রতি সম্পাদিত মূল্যবান দিন।


আপনাদের জিজ্ঞাাসি কিছু প্রশ্ন ও উত্তর (F&Q)
ভ্যালেন্টাইন মানে কি?
ভ্যালেন্টাইন হলো একজন খ্রিষ্টান পাদ্রি, সেন্ট ভ্যালেন্টাইন, যিনি রোমে বসবাস করতেন এবং তার জীবনে প্রেম ও ভালোবাসার প্রতি আনুগত্য দেখানোর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। তিনি যুবকদের গোপনে বিয়েতে সহায়তা করতেন, যা তখন রোমান সম্রাটের নির্দেশনা অনুযায়ী নিষিদ্ধ ছিল। তার জীবনের এই সাহসিকতা এবং ভালোবাসা প্রচারের জন্য ভ্যালেন্টাইনস ডে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস কি?
ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস প্রাচীন যুগে ফিরে যায়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামের এক পাদ্রি, যিনি রোমে বসবাস করতেন, তিনি প্রেমিক-প্রেমিকাদের গোপনে বিয়ে করানোর জন্য একাধিক জীবন বাজি রেখে কাজ করতেন। তিনি তার নিষ্ঠুর মৃত্যুর আগে প্রেমের প্রতীক হয়ে ওঠেন এবং তার মৃত্যুর পর, ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভালোবাসার দিন হিসেবে পালন করার প্রথা শুরু হয়।
ভ্যালেন্টাইন্স ডে কিভাবে আসলো?
ভ্যালেন্টাইনস ডে এসেছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুর দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে। তিনি একজন খ্রিষ্টান পাদ্রি ছিলেন এবং তার সাহসিকতা ও ভালোবাসার প্রতি আনুগত্যের জন্য তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে “ভ্যালেন্টাইনস ডে” হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনটি প্রেম ও ভালোবাসার উদযাপন হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয়ে থাকে।
১৪ ফেব্রুয়ারি কি দিবস?
১৪ ফেব্রুয়ারি হলো বিশ্বব্যাপী পালিত “ভালোবাসা দিবস” বা “ভ্যালেন্টাইনস ডে”। এই দিনটি প্রেমিক-প্রেমিকাদের, স্বামী-স্ত্রী, বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশের দিন হিসেবে পরিচিত। একে “ভালোবাসা দিবস” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যেখানে মানুষ একে অপরকে উপহার, ফুল, চিঠি বা কথামালা দিয়ে তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে।
ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস কি?
ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামক পাদ্রির জীবনের সাথে সম্পর্কিত। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন রোমে একজন পাদ্রি ছিলেন, যিনি যুবকদের বিয়েতে সাহায্য করতেন, যদিও সে সময় রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস দ্বিতীয় বিয়ে নিষিদ্ধ করেছিলেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুর দিন হিসেবে পরিচিত এবং এই দিনটি প্রেম ও ভালোবাসার উদযাপন হিসেবে পালিত হতে শুরু করে।
ভালোবাসা দিবসের উদ্ভাবক কে এবং কেন?
ভালোবাসা দিবসের উদ্ভাবক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। যদিও এটি কোনো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ভাবিত দিন নয়, তবে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জীবন ও তার ভালোবাসার প্রতি অঙ্গীকার তাকে এই দিনে স্মরণ করার ভিত্তি দিয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটি তার মৃত্যুর সাথে যুক্ত হওয়ায়, এটি পরে ভালোবাসা দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ভ্যালেন্টাইন্স ডে বাংলা কি?
ভ্যালেন্টাইনস ডে বাংলা ভাষায় “ভালোবাসা দিবস” নামে পরিচিত। এই দিনটি প্রেম, স্নেহ ও ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে পৃথিবীজুড়ে পালিত হয়। বাংলায় “ভালোবাসা দিবস” একটি সাধারণ ও জনপ্রিয় উৎসব, যা প্রেমিক-প্রেমিকা, বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের মধ্যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের একটি বিশেষ দিন হিসেবে উদযাপন করা হয়।
১৪ ফেব্রুয়ারি কেন ভ্যালেন্টাইনস ডে বলা হয়?
১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডে বলা হয় সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যু দিবস হিসেবে, যিনি রোমে একজন পাদ্রি ছিলেন। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন তার জীবনে প্রেম ও ভালোবাসার জন্য প্রখ্যাত ছিলেন এবং এই দিনটিকে প্রেম ও ভালোবাসার দিবস হিসেবে পালনের প্রথা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি তার সাহসিকতা, ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের কারণে এই দিনটি “ভ্যালেন্টাইনস ডে” নামে পরিচিত।
2 thoughts on “১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস কেন? অনেকেরই জানা নেই”