রংপুরের শহিদ আবু সাঈদের পরিবারকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, এক বিশেষ সাক্ষাৎ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আবু সাঈদের পরিবার উপস্থিত হয়। এ সময় ড. ইউনূস আবু সাঈদের পরিবারকে রংপুরের একজন উপদেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানান এবং শহিদ আবু সাঈদের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানান।
আরও পড়ুন: আসিফ মাহতাবকে উপদেষ্টা পরিষদে রাখার দাবি
শহিদ আবু সাঈদ ছিলেন জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত অভ্যুত্থানকালে নিহত এক সংগ্রামী যুবক, যিনি ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তার আত্মত্যাগের কারণে তাকে রংপুরের একজন গর্বিত সন্তান হিসেবে মনে করেন ড. ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা এদিন এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে শহিদ আবু সাঈদ ফাউন্ডেশনের সনদ হাতে তুলে দেন, যা গ্রহণ করেন সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। এ সময় সাঈদের ভাতিজা মো. লিটন মিয়াও উপস্থিত ছিলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহিদ আবু সাঈদের পরিবারকে তার অবদানের জন্য শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “আমাকে রংপুরের একজন উপদেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করুন।” তিনি শহিদ সাঈদের পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আপনারা যদি কোনো ধরনের সাহায্য বা সহানুভূতি চান, আমরা সবসময় আপনার পাশে আছি।”
আরও পড়ুন: ৩ দিনের মধ্যে রংপুর থেকে উপদেষ্টা করা না হলে ‘নর্থ বেঙ্গল ব্লকেড’ কর্মসূচি
এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা শহিদ আবু সাঈদের বাবা-মায়ের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা ও সহযোগিতার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন। শহিদ সাঈদের পরিবারও এ সময় সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই উদ্যোগ রংপুরের শহিদ আবু সাঈদের পরিবার ও জনগণের কাছে একটি বড় ধরনের সমর্থন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে, শহিদ পরিবারের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার এই সহানুভূতি ও সহযোগিতার ঘোষণা তাদের হৃদয়ে এক ধরনের শাস্তি ও সম্মানের অনুভূতি সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন: চাকরি ছাড়লেন শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই- নেপথে কারণ কি?
এটি একটি পরিষ্কার বার্তা দেয় যে, সরকারের পক্ষ থেকে শহিদদের পরিবার ও তাদের প্রতি যারা আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের জন্য শ্রদ্ধা ও সহায়তা প্রদানের গুরুত্ব অপরিসীম। শহিদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি চিরন্তন অধ্যায় হিসেবে রয়ে যাবে এবং তার পরিবারও কখনো একা হবে না, বরং দেশের জনগণ ও সরকার তাদের পাশে থাকবে।
সাঈদের পরিবার আশা প্রকাশ করেছে যে, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে আরও নানা সহায়তা ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে, যা তাদের জীবনে কিছুটা শান্তি ও সুখ ফিরিয়ে আনবে।