বর্তমান যুগে, প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় পেশায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের শিক্ষিত যুবক-যুব নারীদের জন্য এটি একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। সরকারের নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে, দেশের ৪৮ জেলায় ফ্রি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষিত বেকার যুবকদের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
আরও পড়ুন: 2024 সালের ফ্রি টাকা ইনকাম করার সেরা Apps ও ওয়েবসাইট
প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষিত বেকারদের দক্ষতা প্রদান করে তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে তারা ঘরে বসেই বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজ করতে পারবেন, যা দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ খুলে দেবে।
আরও পড়ুন: মোবাইল দিয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা ইনকাম: বিকাশ, নগদ বা রকেটে পেমেন্ট
৪৮ জেলায় বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ: এইচএসসি পাস ১৮-৩৫ বছর বয়সীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ!
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ৪৮ জেলার শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের জন্য এক দারুণ সুযোগ দিচ্ছে! ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা যাবে, এবং প্রশিক্ষণ চলাকালীন দৈনিক ২০০ টাকা ভাতা দেওয়া হবে।
প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করবে ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড, ঠিকানা: ৭ দক্ষিণ কল্যাণপুর, মিরপুর রোড, ঢাকা-১২০৭।
আরও পড়ুন
প্রশিক্ষণের প্রধান সুবিধাগুলো:
✅ ফ্রি প্রশিক্ষণ: কোনো ভর্তি ফি লাগবে না।
✅ দৈনিক ২০০ টাকা ভাতা: যাতায়াত খরচের জন্য।
✅ বিনামূল্যে খাবার: সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার ও বিকেলের নাশতা দেওয়া হবে।
✅ সনদপত্র প্রদান: কোর্স শেষে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সার্টিফিকেট পাবেন।
✅ ৩ মাসের প্রশিক্ষণ: মোট ৬০০ ঘণ্টা, সপ্তাহে ৬ দিন, প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ক্লাস।
✅ অফলাইনে প্রশিক্ষণ: নির্ধারিত কেন্দ্রে সরাসরি ক্লাস করতে হবে।
কে আবেদন করতে পারবেন?
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কমপক্ষে এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে।
বয়স: ১৮-৩৫ বছর।
লিঙ্গ: নারী ও পুরুষ উভয়েই আবেদন করতে পারবেন।
কোন জেলাগুলোর জন্য সুযোগ রয়েছে?
- ঢাকা বিভাগ: নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর।
- ময়মনসিংহ বিভাগ: ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা।
- চট্টগ্রাম বিভাগ: চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, নোয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া।
- রাজশাহী বিভাগ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ।
- খুলনা বিভাগ: খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া।
- রংপুর বিভাগ: রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী, দিনাজপুর, পঞ্চগড়।
- বরিশাল বিভাগ: বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা।
- সিলেট বিভাগ: হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার।


আবেদন প্রক্রিয়া
অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ: ২০ মার্চ রাত ১১:৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
আবেদন লিংক: https://e-laeltd.com/48-student-reg-jubo
নির্ধারিত সময়ের পর আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।
পরীক্ষার সময়সূচি
লিখিত পরীক্ষা: ২৩ মার্চ। স্থান ও সময় এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে।
মৌখিক পরীক্ষা: ২৫ মার্চ।
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ: ২৭ মার্চ।
এটি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ার জন্য একটি দারুণ সুযোগ! এখনই আবেদন করুন এবং ফ্রি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আপনার ক্যারিয়ার শুরু করুন!
*আবেদনের বিস্তারিত দেখুন এখানে
আরও পড়ুন: ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা: জেনে নিন আয় বৃদ্ধির নিঞ্জা টেকনিক
ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ-এ কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে?
এই প্রশিক্ষণে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যেমন:
- বেসিক ইংরেজি শেখানো: ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য মৌলিক ইংরেজি ভাষার দক্ষতা অর্জন।
- কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন: অফিসের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ব্যবহারের দক্ষতা।
- গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং: ডিজাইন এবং এডিটিংয়ের মৌলিক কৌশল শেখানো হবে।
- ডিজিটাল মার্কেটিং: অনলাইন মার্কেটিংয়ের কৌশল ও পদ্ধতি।
- সফট স্কিল ট্রেনিং: যোগাযোগ, সমস্যা সমাধান ও নেতৃত্ব গুণাবলীর উন্নয়ন।


প্রকল্পের বাস্তবায়ন সময়সীমা
এই প্রকল্পটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হবে এবং এর মেয়াদ থাকবে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: কিভাবে ফেসবুকে প্রতিদিন 500 আয় করা যায়?
ফ্রিল্যান্সিংয়ে পিছিয়ে পড়ার কারণ
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিংয়ে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যেমন:
- প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব
- সঠিক প্রশিক্ষণের অভাব
- আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তুলনায় কম প্রতিযোগিতা
উপসংহার
ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের যুবকদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং দেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা আনার সম্ভাবনা বাড়াবে। আশা করা হচ্ছে, এই প্রকল্প সফল হলে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং খাত আরও শক্তিশালী হবে এবং যুবকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে।
এখন সময় এসেছে আমাদের যুবকদের এই সুযোগ গ্রহণ করার এবং নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করার। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে তারা শুধু নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়বে না, বরং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।