বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ডলারের মূল্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ডলারের বিনিময় হার দেশের আমদানি-রপ্তানি, রেমিট্যান্স, এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। আজকের (১৭ই মে ২০২৪) ডলার রেট এবং সাম্প্রতিক ডলার রেটের পরিবর্তন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। তো শুরু করা যাক বাংলাদেশ এর আজকের টকার রেট কত?
আজকের ডলার রেট বাংলাদেশ
প্রচুর মানুষ বিভিন্ন কারণে ডলার এক্সচেঞ্জ করে থাকেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে। তাই আপনাদের আজকের ডলারের রেট বাংলাদেশ ব্যাংকে কত চলছে তা জেনে নেয়া উচিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ই মে ২০২৪ তারিখে ডলারের রেট নিম্নরূপ:
ক. ইন্টারব্যাংক USD/BDT এক্সচেঞ্জ রেট (১৬ই মে ২০২৪ অনুযায়ী):
মুদ্রা | দিনের সর্বনিম্ন | দিনের সর্বোচ্চ | বর্তমান WAR | স্পট ভলিউম |
USD | 117.4500 | 117.4500 | 117.4500 | 0.0000 |
খ. অন্যান্য সূত্র অনুযায়ী, ১৮ই মে ২০২৪ তারিখে ডলারের রেট:
ডলার পরিমাণ | টাকার পরিমাণ |
১ ডলার = | ১১৭.১০ টাকা |
৫ ডলার = | ৫৮৫.৫০ টাকা |
১০০ ডলার = | ১১,৭১০ টাকা |
৫০০ ডলার = | ৫৮,৫৫০ টাকা |
বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের টাকার রেট
দেশ ও বৈদিশিক মুদ্রা | বাংলাদেশি টাকা ৳ (BDT) |
---|---|
আমেরিকান ডলার | ১১৭ টাকা ১ পয়সা ● (ব্যাংক) (বিকাশ ১১৭.১) (ক্যাশ ১১৫.৮৩) |
ইউরোপ ইউরো | ১২৮ টাকা ৩০ পয়সা ▲ (ব্যাংক)বিকাশ ১২৮.৩০) (ক্যাশ ১২৮.৩০) |
ইতালিয়ান ইউরো | ১২৮ টাকা ৩০ পয়সা ▲ (ব্যাংক)(বিকাশ ১২৭.৫২)(ক্যাশ ১২৭.১৮) |
ব্রিটেন পাউন্ড | ১৪৮ টাকা ৭২ পয়সা ▲ (ব্যাংক/বিকাশ ) (ক্যাশ ১৪৮.১১) |
সৌদি রিয়াল | ৩১ টাকা ২৩ পয়সা ● (ব্যাংক/বিকাশ) (ক্যাশ ৩০.৫৫) |
দুবাই দিরহাম | ৩২ টাকা ১০ পয়সা ▲ (ব্যাংক/বিকাশ/ক্যাশ) |
ওমান রিয়াল | ৩০৫ টাকা ০০ পয়সা ● (ব্যাংক/বিকাশ/ক্যাশ) |
বাহরাইন দিনার | ৩১১ টাকা ১১ পয়সা ▲ (ব্যাংক) (বিকাশ ৩১১.১১) (ক্যাশ ৩১০.০০) |
কাতার রিয়াল | ৩২ টাকা ১৭ পয়সা ● (ব্যাংক/বিকাশ/ক্যাশ) |
কুয়েতি দিনার | ৩৮৫ টাকা ০০ পয়সা ▲ (ব্যাংক/বিকাশ) (ক্যাশ ৩৮৫.০০) |
মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত | ২৪ টাকা ৯০ পয়সা ▲ (ব্যাংক)(বিকাশ ২৪.৭৫)(ক্যাশ ২৪.৭৫) |
ইন্ডিয়ান রুপি | ১ টাকা ৩৭ পয়সা ▲ |
সিঙ্গাপুর ডলার | ৮৭ টাকা ৩ পয়সা ▲ (ব্যাংক) (বিকাশ ৮৬.৭৩) (ক্যাশ ৮৬.৬৪) |
অস্ট্রেলিয়ান ডলার | ৭৮ টাকা ১৪ পয়সা ▲ (ব্যাংক/ বিকাশ) (ক্যাশ ৭৭ টাকা ৮৭ পয়সা) |
কানাডিয়ান ডলার | ৮৫ টাকা ১০ পয়সা ▲ (ব্যাংক)(বিকাশ ৮৩.৫০) (ক্যাশ ৮৪.১৬) |
জাপানি ইয়েন | ০ টাকা ৭৪৫ পয়সা ▼ (ব্যাংক) (বিকাশ ০.৭৪৫) (ক্যাশ ০.৭৪৫) |
দক্ষিণ আফ্রিকান রান্ড | ৬ টাকা ৪২ পয়সা ▲ |
দক্ষিণ কোরিয়ান ওন | ০ টাকা ০.০৮৬৬২৫ পয়সা ▲ (ব্যাংক) (বিকাশ ০.০৮৪১) (ক্যাশ ০.০৮৩৮) |
সুইজারল্যান্ড ফ্রেঞ্চ | ১২৮ টাকা ৫৫ পয়সা ▼ (ব্যাংক) (বিকাশ ১২৬.৬৫) (ক্যাশ ১২৭.৪৭) |
নিউজিল্যান্ড ডলার | ৭০ টাকা ৮৯ পয়সা ▲ (ব্যাংক) (বিকাশ ৭০.৯২) (ক্যাশ ৬৮.৭৯) |
তবে বাজারে ডলারের চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে এই রেট পরিবর্তন হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এলসি খোলার ক্ষেত্রে ১২০ টাকা এবং খোলাবাজারে প্রতি ডলারের দাম ১২৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছে বলে জানা গেছে। বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালুর ঘোষণা দিয়েছে।
বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বাংলাদেশি টাকার (BDT) বিনিময় হারগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
দেশ | মুদ্রা | রেট (BDT) |
যুক্তরাষ্ট্র | USD | ১ USD = ১১৭.০২৫০ |
ইউরোপীয় ইউনিয়ন | EUR | ১ EUR = ১২৮.০১৯৪ |
যুক্তরাজ্য | GBP | ১ GBP = ১৪৯.১৮৭৪ |
অস্ট্রেলিয়া | AUD | ১ AUD = ৭৮.৭৩৩২ |
জাপান | JPY | ১ JPY = ০.৭৫৮০ |
ভারত | INR | ১ INR = ১.৪০০৬৫ |
সৌদি আরব | SAR | ১ SAR = ৩১.১৯২৮১৭ |
বি: দ্র: এই তথ্যগুলো বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত, তাই বাজারের অবস্থা অনুযায়ী পরিবর্তনশীল হতে পারে।
ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও প্রভাব
বিশ্বব্যাপী ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এবং অন্যান্য মুদ্রার অবমূল্যায়ন একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন ডলার প্রধানতম বৈশ্বিক মুদ্রা হিসেবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রে মার্কিন ডলারের অংশ ৬৪ শতাংশের বেশি, যেখানে ইউরোর অংশ প্রায় ২০ শতাংশ।
আরও পড়ুন : মানুষ কীভাবে ‘গাধা’ হয়? জেনে নিন লক্ষণগুলো
ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বিপরীতে ডলার কিনতে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়। এর ফলে আমদানিকারকরা বেশি চাপে পড়েন, কারণ তাদের আমদানি খরচ বেড়ে যায়। অন্যদিকে, রপ্তানিকারকরা কিছুটা সুবিধা পেতে পারেন, কারণ তাদের পণ্য বিদেশে বিক্রি করে বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারেন।
ডলারের মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিভিন্ন প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রভাব হলো:
- আমদানিকারকদের চাপ: ডলারের দাম বাড়ায় আমদানিকারকদের খরচ বেড়ে যায়, যা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
- রেমিট্যান্সের বৃদ্ধি: ডলারের মূল্যবৃদ্ধি রেমিট্যান্স প্রেরকদের জন্য লাভজনক হতে পারে, কারণ তারা বেশি টাকার বিনিময়ে ডলার পায়।
- মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ: ডলারের মূল্যবৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে, কারণ এটি আমদানি কমিয়ে দেয় এবং দেশের মুদ্রার চাহিদা বাড়ায়।
ডলারের ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণ
বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণে নতুন নিয়ম চালু করেছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, ডলারের ভবিষ্যৎ দাম (ফরওয়ার্ড রেট) নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৩ টাকা ৩৫ পয়সা। এই নতুন নিয়মের মাধ্যমে ডলার-সংকট ও ডলারের দামের অস্থিতিশীলতা রোধে ‘ক্রলিং পেগ’ নামে নতুন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।
ডলারের দাম নির্ধারণে সমস্যা
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ডলার রেট নির্ধারণে কিছু সমস্যা রয়েছে বলে মুদ্রাবাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন। মানি এক্সচেঞ্জগুলোও ডলারের দাম নির্ধারণে গলদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।
সাম্প্রতিক ডলার রেটের পরিবর্তন
সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের রেটের পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। উদাহরণস্বরূপ, গত মাসে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ৪ টাকা বেড়েছে। এছাড়া, দেশের আমদানি কমে যাওয়ায় ডলারের চাহিদা কমে গেছে, ফলে ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমেছে।
উপসংহার
ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এবং এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের রেট নির্ধারণে নতুন নিয়ম চালু করেছে এবং ডলারের ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে, ডলারের দাম নির্ধারণে কিছু সমস্যা রয়েছে যা সমাধান করা প্রয়োজন। সামগ্রিকভাবে, ডলারের রেটের পরিবর্তন এবং এর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থাকা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।