বাংলাদেশ নিয়ে ভারতে বাড়াবাড়ি হচ্ছে, বললেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী সম্প্রতি বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং রাজনৈতিক পরিসরে চলমান বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশ সম্পর্কিত ইস্যুগুলো নিয়ে ভারতে অযথা বাড়াবাড়ি হচ্ছে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে দেখার প্রয়োজন। ২৯ নভেম্বর এক সভায় চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে ভারতে বাড়াবাড়ি হচ্ছে। এসব ইস্যু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়,” এবং তিনি আরও যোগ করেন, “এগুলো নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।”

Juger Alo Google Newsযুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

ভারতে গত কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগ এবং সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি সরকারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং গণমাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এমনকি কলকাতায় বাংলাদেশের পতাকা অবমাননা ও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কুশপুত্তলিকা দাহের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতে উত্তেজনা তীব্র হয়েছে।

আরও পড়ুন: সৌদি নাগরিককে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে পাগলা মসজিদ দানবাক্সে চিঠি

এই পরিস্থিতিতে, সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন যে ভারতে এসব ঘটনাকে বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে এবং এসব কিছু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হওয়া সত্ত্বেও ভারতের মধ্যে তা নিয়ে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “মাদ্রাসার ছেলেরা মন্দির পাহারা দিয়ে পূজা করার সুযোগ করে দিয়েছে। এগুলো দেখতে পান না?” চৌধুরী আরও বলেন, “পাল্টা হামলা যারা করছে, তারা অস্থির মস্তিষ্কের।” তিনি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করার সময় যুক্তি দেন যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভারতের মন্তব্যের যোগ্য নয়, কারণ সেখানে হিন্দুদের প্রশাসনিক পদের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মীরা রয়েছে।

আরও পড়ুন: সাংবাদিক মুন্নী সাহা গ্রেফতার: নেওয়া হলো ডিবিতে

ভারতে বিভিন্ন গণমাধ্যম বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের খবর প্রচার করলেও, চৌধুরী এটির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে বসে রয়েছেন হিন্দুরা। থানার বড় বাবু, বিচারপতি, এসপি, ডিএমপিতে কত হিন্দু। এগুলো দেখা যায় না?” তিনি আরও বলেন, “অত্যাচার হলে অবশ্যই তার নিন্দা করতে হবে, তবে সেটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।”

চৌধুরী মনে করেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কোনো দেশের মন্তব্য করা উচিত নয়, এবং তিনি তার মন্তব্যের মাধ্যমে ভারতীয় সরকার এবং গণমাধ্যমের ওপর সমালোচনাও করেছেন। তিনি বাবরি মসজিদ ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, “যখন বাংলাদেশ বাবরি মসজিদ ইস্যু নিয়ে মুখ খুলেছিল, তখন মোদিজি বলেছিলেন, এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ইউনূস সাহেবও ভালো উত্তর দিয়েছেন, এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।”

আরও পড়ুন: যেভাবে ডিসেম্বরে মিলতে পারে টানা ৪ দিন ছুটি

পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী চৌধুরী আরও বলেন, “সন্ন্যাসী যদি অপরাধ করে সে অপরাধী, ইমাম অপরাধ করলে সে-ও অপরাধী। ভালো সন্ন্যাসী হলে সে কি অপরাধ করবে?” তিনি তার ৪০ বছরের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে বলেন, “কটা থানায় কেস দেখেছেন? অপরাধ অপরাধই।”

এভাবে চৌধুরী বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতীয় নেতাদের সমালোচনা করে আসলে, দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর সমাধান নিজস্বভাবে করার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন। তিনি মনে করেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে দেশের বাইরে থেকে মন্তব্য না করাই উচিত।

Leave a Comment