আদিম মানুষের পোশাক কি, কবে থেকে পরা শুরু

আদিম মানুষের পোশাক

মানব সভ্যতার ইতিহাস হল বিবর্তনের এক অসাধারণ যাত্রা। এই যাত্রাপথে মানুষ নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করে আজকের এই উন্নত অবস্থানে পৌঁছেছে এবং এক অনন্য অধ্যায় হলো পোশাক পরার শুরু। একটা সময় মানুষ গুহায় বাস করত এবং লজ্জা নিবারণের জন্য কোনো আচ্ছাদনের প্রয়োজন মনে করেনি। তবে সময়ের সাথে সাথে মানুষ গাছের ছালবাকল পরিধান করে পোশাক পরার প্রথম ধাপ নেয়। প্রাচীন সময় থেকে আজ পর্যন্ত, পোশাক শুধু মানুষের শারীরিক আচ্ছাদনই নয়, বরং সাংস্কৃতিক পরিচয়, সামাজিক মর্যাদা এবং শিল্পকলার এক অনন্য মাধ্যম। তবে, ঠিক কবে থেকে মানুষের পোশাক পরা শুরু এবং আদিম মানুষের পোশাক কি ছিল?

আরও  পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জিন্স ও টি শার্ট পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা

প্রাচীনতম প্রমাণ

জার্মানির একদল প্রত্নতত্ত্ববিদের সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, প্রায় তিন লাখ বছর আগে মানুষ পোশাক পরা শুরু করে। এই গবেষণা জার্মানির উত্তরাঞ্চলের শোইনিংয়েন নামের এক শহরে পাওয়া গেছে, যা মানুষের পোশাক পরার সবচেয়ে ‘প্রাচীন’ প্রমাণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে। এই আবিষ্কার মানুষের পোশাক পরার ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

আদিম মানুষের পোশাক ও উপাদান

আদিম বা প্রাচীন মানুষ প্রাথমিকভাবে গাছের ছালবাকল এবং পশুর চামড়া পরিধান করত। গুহা ভালুকের লম্বা লোম এবং চামড়া তাদের শীত নিবারণে সাহায্য করত এবং এসব লোম বাতাস আটকানোর ক্ষমতা রাখত। এই প্রাচীন পোশাক তৈরির প্রমাণ আমাদের বোঝায় যে, মানুষ প্রাকৃতিক উপাদান থেকে নিজেদের শরীরকে রক্ষা করার জন্য কীভাবে উদ্ভাবনী পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। বলা চলে আদিম মানুষের পোশাক ছিল গাছের ছালবাকল এবং পশুর চামড়া।

পোশাক পরার উদ্দেশ্য

প্রাথমিকভাবে, পোশাক পরার মূল উদ্দেশ্য ছিল শীত থেকে রক্ষা করা এবং লজ্জা নিবারণ করা। তবে, সময়ের সাথে সাথে পোশাক সামাজিক মর্যাদা, সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছদের এক অপরিহার্য অংশ হয়ে ওঠে।

উকুনের জিনতাত্ত্বিক গবেষণা

মানুষের পোশাক পরার ইতিহাস নির্ধারণে উকুনের জিনতাত্ত্বিক গবেষণা এক অনন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, লোমশ পোশাকে মূলত যেসব উকুন তৈরি হয়, সেগুলো মানুষের মাথায় হওয়া উকুনের চেয়ে অন্তত ৮৩ হাজার বছর আগের[1]। এই তথ্য মানুষের পোশাক পরার ইতিহাসের সময়কাল নির্ধারণে এক মূল্যবান সংযোজন।

সমাপ্তি

মানুষের পোশাক পরার ইতিহাস শুধু একটি শারীরিক আচ্ছাদনের গল্প নয়, বরং এটি মানব সভ্যতার বিবর্তন, সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং শিল্পকলার এক অনন্য যাত্রাপথের প্রতিফলন। প্রাচীন সময় থেকে আজ পর্যন্ত, পোশাক মানুষের জীবনে এক অপরিহার্য অংশ হিসেবে তার গুরুত্ব বজায় রেখেছে।

Juger Alo Google News   যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন