জানা গেল বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আসনা যে প্রভাব ফেলতে পারে

ঘূর্ণিঝড় আসনা

আরব সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঝড়টি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের উপকূলে আছড়ে পড়বে। এরই মধ্যে এর প্রভাবে পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাতে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানের দেযা নাম আসনা ঘূর্ণিঝড় টি ভারত ও পাকিস্তানে আঘাত হানলেও বাংলাদেশে আঘাতের কোনো আশঙ্কা নেই। এর প্রভাবে দেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শনিবার (৩১ আগস্ট) ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি), পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তর (পিএমডি) ও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) বরাত দিয়ে এ খবর জানা গেছে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ধেয়ে আসতে থাকা ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘আসনা’। পাকিস্তান রেখেছে এই নামটি। গুজরাটের পাশাপাশি পাকিস্তানের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সিন্ধেও ‘আসনা’ আঘাত হানবে।

আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতি: ছেলের হাত থেকেই বৃদ্ধ বাবাকে ভাসিয়ে নেয় বান

ঘূর্ণিঝড় আসনার প্রভাব

আইএমডির সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে গুজরাটের নালিয়া শহরের পশ্চিম উপকূল থেকে ২৫০ কিলোমিটার, পাকিস্তানের করাচির উপকূল থেকে ১৬০ কিলোমিটার এবং বেলুচিস্তানের পাসনি উপকূল থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। বর্তমানে ঘণ্টায় ১৪ কিলোমিটার গতিতে এগোচ্ছে ‘আসনা’। এর প্রভাবে গুজরাটের জামনগর, সুরাট, পোরবন্দর, মোরবি, দ্বারকা এবং কুচ জেলায় গত বুধবার রাত থেকে শুরু হয়েছে ভারী বর্ষণ। অতি বর্ষণের জেরে এসব জেলার অনেক এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে কচ্ছ জেলায়।

আইএমডির জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ রামাশ্রয় যাদব বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় কচ্ছ জেলায় ৮৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া সুরাট এবং কুচ জেলাতেও গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণ হয়েছে।’

আরও পড়ুন: ভ্যানে লাশের স্তূপের ভিডিও ভাইরাল: কোথায় আছেন সেই পুলিশ সদস্যরা?

পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তরের (পিএমডি) বরাত দিয়ে দ্য ডন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় আসনার জেরে তাদের দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে সরাসরি কোনো হুমকি নেই। তবে এর প্রভাবে শুক্র ও শনিবারের মধ্যে সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে ঝড়ো বাতাস ও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

উত্তরের আপার দিরে অবিরাম বর্ষণে ভূমিধসের কারণে বাড়ির ছাদ ধসে এক পরিবারের ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ভোরে ভূমিধসের সময় নিহতরা রাময়াল গ্রামে তাদের বাড়িতে ছিলেন। সিন্ধুর জামশোরো, দাদু ও মিরপুরখাস জেলায় বৃষ্টিজনিত ঘটনায় অন্তত ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া ৩০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। টোবা টেক সিং-এর একটি গ্রামে একজন ব্যক্তি ও তার বোন মারা গেছেন। এ ছাড়া প্রবল বৃষ্টিতে বাড়ির ছাদ ধসে নিচে চাপা পড়ে একই পরিবারের তিনজন আহত হয়েছে।

বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আসনার প্রভাব

বাংলাদেশে এই ঘূর্ণিঝড়ের কোনো প্রভাব পড়বে কিনা এ বিষয়ে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ভারতের গুজরাটে একটি ঘূর্ণিঝড় (আসনা) তৈরি হয়েছে। এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে গিয়ে মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে কিছুটা মিলিত হতে পারে। এ ছাড়া পশ্চিম-মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ অবস্থান করছে। এটিও ধীরে ধীরে স্থলভাগে উঠে মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে মিলিত হতে পারে। দুইয়ের প্রভাবে ৩ বা ৪ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিশেষ করে সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চলে বৃষ্টি বাড়তে পারে।

Juger Alo Google News   যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন