ফেসবুক স্টোরি থেকে আয়ের সুযোগ: কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য সুখবর, পারবনে আপনিও

আপনি কি কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ডিজিটাল মার্কেটার, নাকি একজন উদ্যোক্তা? যদি হ্যাঁ, তাহলে আপনার জন্য আছে দারুণ এক সুখবর!

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন আর শুধু বন্ধুদের সঙ্গে কানেক্ট থাকার জায়গা নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে আয়ের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। ফেসবুক ইতিমধ্যে কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য বিভিন্ন মনিটাইজেশন সুবিধা এনেছে, আর এবার নতুনভাবে স্টোরির মাধ্যমেও আয়ের সুযোগ চালু করেছে!

Juger Alo Google Newsযুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

এর মানে হলো, এখন থেকে শুধুমাত্র ভিডিও বা রিলস নয়, বরং আপনার পাবলিক স্টোরির ভিউয়ের মাধ্যমেও ইনকাম করা সম্ভব! কোনো অতিরিক্ত ঝামেলা ছাড়াই এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হবে, যা নির্মাতাদের জন্য আরও একটি উপার্জনের দ্বার খুলে দেবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে ফেসবুক স্টোরি ব্যবহার করে আয় করা যায়?
এই ব্লগ পোস্টে আমরা জানবো:
ফেসবুক স্টোরি মনিটাইজেশনের নিয়ম ও শর্ত
এর সুবিধাসমূহ এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ
সফলভাবে স্টোরি পরিচালনার কিছু কার্যকর কৌশল

আপনার যদি ফেসবুক পেজ বা প্রোফাইলে সক্রিয় অডিয়েন্স থাকে, তাহলে আপনি এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে সহজেই এক্সট্রা ইনকাম শুরু করতে পারেন! চলুন, বিস্তারিত জানি কিভাবে এই সুযোগ কাজে লাগানো যায়!

আরও পড়ুন

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ফেসবুক স্টোরি কী এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

ফেসবুক স্টোরি হলো এমন একটি ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট ফরম্যাট যা ২৪ ঘণ্টার জন্য প্রদর্শিত হয় এবং তারপর অদৃশ্য হয়ে যায়। এটি সাধারণত ছবি, ভিডিও বা এনিমেটেড টেক্সটের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।

কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

  • উচ্চ এনগেজমেন্ট রেট: ফেসবুক স্টোরি অন্যান্য পোস্টের তুলনায় বেশি ভিউ এবং এনগেজমেন্ট পায়।
  • সরাসরি ব্র্যান্ড প্রচারণার সুযোগ: ব্র্যান্ড ও প্রোডাক্ট মার্কেটিংয়ের জন্য এটি দারুণ কার্যকর।
  • ব্যবহারকারীর মনোযোগ আকর্ষণ: এটি দ্রুত এবং সহজে তথ্য পরিবেশন করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
  • শুধু ফলোয়ারদের জন্য কন্টেন্ট: সাধারণ পোস্টের তুলনায় স্টোরি শুধু আগ্রহী ব্যবহারকারীদের মধ্যেই দেখানো হয়, ফলে রিয়েল এনগেজমেন্ট পাওয়া যায়।
ফেসবুক স্টোরি থেকে আয়ের সুযোগ

কীভাবে আয় করা যাবে?

যদি আপনি কনটেন্ট ক্রিয়েটর হন এবং নিয়মিত ভিডিও, রিলস কিংবা আপনার দৈনন্দিন জীবনের মুহূর্তগুলো শেয়ার করেন, তাহলে এবার স্টোরির মাধ্যমেও আয়ের সুযোগ পাবেন।

আর সবচেয়ে ভালো খবর হলো—কোনো অতিরিক্ত সেটআপ ছাড়াই এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হবে

উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি একটি রেসিপি ভিডিও তৈরি করেন এবং তার কিছু অংশ স্টোরিতে শেয়ার করেন, তাহলে শুধু সেই স্টোরির ভিউ থেকেও আপনি আয় করতে পারবেন!

এখন চলুন, ফেসবুক স্টোরি ব্যবহার করে আয়ের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক!

আরো পড়ুন: ২৪০ টাকা ফ্রী বিকাশ পেমেন্ট – সত্যিটা কী? অফার নেই, কিন্তু ইনকামের সুযোগ আছে!

1️⃣ ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ ও স্পন্সরশিপ

যদি আপনার ভালো সংখ্যক ফলোয়ার থাকে, তাহলে বিভিন্ন ব্র্যান্ড আপনার স্টোরির মাধ্যমে তাদের পণ্য বা সার্ভিস প্রচারের জন্য আপনাকে স্পন্সর করতে পারে

কীভাবে ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ পাবেন?

একটি নির্দিষ্ট নিস বা ক্যাটাগরি নির্বাচন করুন (যেমন ফ্যাশন, প্রযুক্তি, ফিটনেস ইত্যাদি)।
নিয়মিত উচ্চ মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরি করুন, যাতে ব্র্যান্ডগুলোর নজরে আসতে পারেন।
ব্র্যান্ডের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন বা ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন করুন।

টিপস: ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুক স্টোরি দুটোতেই একই কনটেন্ট ব্যবহার করুন, যাতে আরও বেশি স্পন্সর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে!

2️⃣ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

আপনি চাইলে ফেসবুক স্টোরির মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করে কমিশন উপার্জন করতে পারেন!

কীভাবে শুরু করবেন?

  • জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস (যেমন Amazon, ClickBank, Daraz) থেকে যোগ দিন।
  • প্রোডাক্টের জন্য ইউনিক অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক সংগ্রহ করুন।
  • ফেসবুক স্টোরিতে আকর্ষণীয় ভিজ্যুয়ালসহ লিঙ্ক শেয়ার করুন।

টিপস: যদি আপনার নিচ (Niche) হয় ফ্যাশন, তাহলে ফ্যাশন প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করুন—এতে আপনার কমিশন পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে!

3️⃣ নিজের পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি

আপনার যদি নিজস্ব কোনো ব্যবসা বা সার্ভিস থাকে, তাহলে ফেসবুক স্টোরি ব্যবহার করে সহজেই প্রচার করতে পারেন!

উদাহরণ:
✅ অনলাইন কোর্স বিক্রি
✅ হ্যান্ডমেড পণ্য বা কাস্টম সার্ভিস
✅ ই-কমার্স ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট প্রচার

টিপস: স্টোরিতে গ্রাহকদের রিভিউ বা প্রোডাক্টের ডেমো ভিডিও শেয়ার করুন, এতে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা আরও সহজ হবে!

4️⃣ ফেসবুক স্টারস ও মনিটাইজেশন

ফেসবুক কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য এনেছে “ফেসবুক স্টারস” ফিচার, যেখানে দর্শকরা আপনাকে স্টারস পাঠিয়ে সমর্থন করতে পারে!

এই সুবিধাটি পেতে আপনাকে ফেসবুকের নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণ করতে হবে

কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?
✅ লাইভ ভিডিওতে দর্শকদের কাছ থেকে স্টারস সংগ্রহ করা যায়।
✅ জনপ্রিয়তা বাড়লে ফেসবুক নিজেও বোনাস বা অন্যান্য সুবিধা দিতে পারে!

ফেসবুক স্টোরি থেকে আয়ের সুযোগ

স্টোরির পেমেন্ট কীভাবে নির্ধারিত হবে?

ফেসবুকের মতে, স্টোরির আয়ের পরিমাণ নির্ভর করবে কনটেন্টের পারফরম্যান্সের ওপর। অর্থাৎ, নির্দিষ্টসংখ্যক ভিউয়ের শর্ত ছাড়াই নির্মাতারা আয়ের সুযোগ পাবেন। এটি নির্মাতাদের জন্য আরও বেশি সৃজনশীল ও স্বাধীনভাবে কাজ করার একটি সুযোগ তৈরি করবে।

ফেসবুক ক্রিয়েটরদের জন্য আরও কী সুবিধা থাকছে?

ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুক উভয় প্ল্যাটফর্মেই কনটেন্ট মনিটাইজেশন আরও সহজ হবে।
স্টোরির মাধ্যমে নতুন আয়ের সুযোগ পাওয়া যাবে।
অতিরিক্ত কোনো সেটআপ ছাড়াই এই সুবিধা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, টিকটকের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় ফেসবুকও ক্রিয়েটরদের আরও বেশি আকৃষ্ট করতে চাইছে। এর আগে মেটা নগদ বোনাস, কনটেন্ট চুক্তি এবং অন্যান্য সুবিধা দিয়ে নির্মাতাদের আগ্রহী করার চেষ্টা করেছে। এবার স্টোরির মাধ্যমে আয়ের সুযোগ এনে তারা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো।

কেন এটি বড় সুযোগ কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য?

বর্তমানে ফেসবুকের সক্রিয় ব্যবহারকারী ২.৯৩ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে অসংখ্য নির্মাতা রয়েছেন, যারা ভিডিও, রিলস এবং অন্যান্য কনটেন্ট তৈরি করে আয়ের সুযোগ খুঁজছেন। এখন থেকে স্টোরির মাধ্যমেও নতুনভাবে ইনকাম করা সম্ভব হবে – যা অনেক নির্মাতার জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে!

আপনি কি একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর? তাহলে এখনই স্টোরিতে কনটেন্ট শেয়ার শুরু করুন আর নতুন এই সুযোগের সর্বোচ্চ সুবিধা নিন!

ফেসবুক স্টোরি ব্যবহার করার কার্যকরী কৌশল

ফেসবুক স্টোরির মাধ্যমে আরও বেশি দর্শক আকৃষ্ট করতে এবং আয়ের সুযোগ বাড়াতে কিছু স্ট্র্যাটেজিক কৌশল অনুসরণ করা জরুরি। এখানে কিছু কার্যকরী টিপস দেওয়া হলো, যা আপনাকে স্টোরি এনগেজমেন্ট এবং রিচ বাড়াতে সাহায্য করবে!

1️⃣ আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করুন

উচ্চ মানের ছবি এবং ভিডিও ব্যবহার করুন – স্টোরির ভিজ্যুয়াল যত ভালো হবে, দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ তত বেশি হবে।
ট্রেন্ড অনুসরণ করুন এবং ক্রিয়েটিভ আইডিয়া প্রয়োগ করুন – জনপ্রিয় ট্রেন্ডগুলোর সাথে নিজস্ব টাচ যোগ করুন।
ইনফরমেটিভ এবং বিনোদনমূলক কন্টেন্টের মিশ্রণ করুন – শুধুমাত্র প্রচার নয়, বরং শিক্ষামূলক ও মজাদার কনটেন্টও শেয়ার করুন।

2️⃣ স্টোরির কনসিস্টেন্সি বজায় রাখুন

প্রতিদিন বা অন্তত প্রতি দুই দিনে একটি স্টোরি পোস্ট করুন – ধারাবাহিকভাবে কন্টেন্ট পোস্ট করলে অডিয়েন্স ধরে রাখা সহজ হবে।
ধারাবাহিক কন্টেন্ট সিরিজ তৈরি করুন – উদাহরণস্বরূপ, “Monday Motivation”, “Fun Friday” বা “Behind the Scenes” টাইপের ধারাবাহিক সিরিজ করতে পারেন।

3️⃣ ইন্টারঅ্যাক্টিভ ফিচার ব্যবহার করুন

পোল এবং কুইজ ব্যবহার করে দর্শকদের এনগেজ করুন – সহজ প্রশ্ন দিয়ে অডিয়েন্সের মতামত নিন।
‘Ask Me Anything’ ফিচার ব্যবহার করুন – এতে আপনার ফলোয়াররা সরাসরি আপনার সাথে সংযুক্ত হতে পারবে এবং এনগেজমেন্ট বাড়বে।

4️⃣ সঠিক CTA (Call-to-Action) ব্যবহার করুন

“Swipe Up”, “Shop Now” বা “DM for Details” টাইপের CTA ব্যবহার করুন – সঠিকভাবে CTA ব্যবহার করলে দর্শকদের ক্রয় সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করা সহজ হয়
✅ আপনার ওয়েবসাইট, পণ্য, বা অন্য কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ট্রাফিক নিয়ে যাওয়ার জন্য স্টোরি লিংক যুক্ত করুন।

সফল ফেসবুক স্টোরি মার্কেটিংয়ের উদাহরণ

ফেসবুক স্টোরি কেবল ব্যক্তিগত মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য নয়, এটি হতে পারে একটি শক্তিশালী মার্কেটিং টুল, যা ব্যবসা ও ব্র্যান্ড বৃদ্ধির নতুন সুযোগ তৈরি করে। নিচে কয়েকটি বাস্তব উদাহরণ দেওয়া হলো, যেখানে ফেসবুক স্টোরির মাধ্যমে সফলভাবে ব্র্যান্ড বিল্ডিং ও আয়ের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে

1️⃣ ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সার

✅ একজন ফ্যাশন ব্লগার বা ইনফ্লুয়েন্সার প্রতিদিন নতুন পোশাকের রিভিউ ও স্টাইলিং টিপস শেয়ার করেন।
ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ পান, যেখানে বিভিন্ন ফ্যাশন ব্র্যান্ড তাদের নতুন পোশাক বা এক্সেসরিজ স্টোরির মাধ্যমে প্রচার করতে দেয়।
CTA: “Swipe Up for Discount”, “Buy Now”, “Check My Outfit Details” ইত্যাদি লিংক ব্যবহার করে বিক্রয় বাড়ান।

ফলাফল: ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি!

2️⃣ ফিটনেস কোচ

✅ একজন ফিটনেস ট্রেইনার প্রতিদিন একটি শরীরচর্চার টিপস বা শর্ট ওয়ার্কআউট ভিডিও স্টোরিতে শেয়ার করেন।
ফিটনেস গিয়ার, প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট বা ওয়ার্কআউট প্ল্যানের জন্য অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করেন।
✅ নিজের অনলাইন কোর্স বা পার্সোনাল ট্রেনিং সেশন বিক্রি করেন

ফলাফল: স্টোরির মাধ্যমে কোর্স বিক্রি, অ্যাফিলিয়েট ইনকাম এবং পার্সোনাল ট্রেনিং সেশনের রেজিস্ট্রেশন বৃদ্ধি!

3️⃣ ছোট ব্যবসা (Small Business)

হ্যান্ডমেড জুয়েলারি, স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট, ফুড ডেলিভারি বা অন্যান্য প্রোডাক্ট বিক্রেতারা ফেসবুক স্টোরির মাধ্যমে তাদের পণ্য প্রচার করেন।
লাইভ ডেমো, কাস্টমার রিভিউ ও নতুন অফার স্টোরিতে শেয়ার করে বিক্রয় বাড়ানো হয়।
CTA: “Order Now”, “DM for Custom Orders”, “Limited Stock Available” ইত্যাদি ব্যবহার করে কাস্টমার আকর্ষণ করা হয়।

ফলাফল: স্টোরির মাধ্যমে বিক্রয় বৃদ্ধি এবং ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়ানো!

আপনি কি ফেসবুক স্টোরি ব্যবহার করছেন?

আপনি যদি ইনফ্লুয়েন্সার, কোচ বা ব্যবসায়ী হন, তাহলে এখনই ফেসবুক স্টোরিকে কাজে লাগান এবং নতুন আয়ের সুযোগ তৈরি করুন!

তো দেরি কেন? চলুন শুরু করি? জেনে কিভাবে শুরু করবেন?

কীভাবে শুরু করবেন?

আপনি কি ফেসবুক স্টোরি ব্যবহার করে আয় করতে চান? তাহলে সঠিকভাবে পরিকল্পনা ও স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে ধাপে ধাপে আপনার ফেসবুক স্টোরি মনিটাইজেশন শুরু করার পদ্ধতি দেওয়া হলো!

1️⃣ প্রথম ধাপ: পেজ বা প্রোফাইল সেটআপ করুন

ফেসবুক পেজ বা প্রোফাইলের ‘Professional Mode’ চালু করুন – এতে আপনি ফেসবুকের মনিটাইজেশন সুবিধা ও ইনসাইট দেখতে পারবেন।
ব্যবসায়িক বা ইনফ্লুয়েন্সার ব্র্যান্ডিং নিশ্চিত করুন – প্রোফাইল পিকচার, কভার ফটো ও বায়ো আপডেট রাখুন।

টিপস:
✔️ যদি ব্যবসা বা ব্র্যান্ড চালান, তাহলে Business Page খুলুন।
✔️ যদি ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড গড়ে তুলতে চান, তাহলে Personal Profile-এর “Professional Mode” চালু করুন।

2️⃣ কন্টেন্ট প্ল্যান তৈরি করুন

সপ্তাহে কমপক্ষে ৪-৫টি স্টোরি পোস্ট করুন – ধারাবাহিক কন্টেন্ট ছাড়া এনগেজমেন্ট পাওয়া কঠিন।
ট্রেন্ডি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন – #TrendingTopics, #ViralContent, #YourBrand ইত্যাদি হ্যাশট্যাগ দিয়ে রিচ বাড়ান।
কনটেন্টের ধরন নির্ধারণ করুন – বিনোদনমূলক, শিক্ষামূলক, বা প্রচারমূলক স্টোরির ব্যালেন্স রাখুন।

টিপস:
✔️ স্টোরি থিম নির্ধারণ করুন – যেমন “Monday Motivation,” “Behind the Scenes,” “Quick Tips” ইত্যাদি।
✔️ ভিডিও স্টোরি বেশি পোস্ট করুন – কারণ ভিডিও এনগেজমেন্ট বেশি পায়!

3️⃣ ট্রেন্ড ফলো করুন

ফেসবুকের নতুন ফিচার সম্পর্কে আপডেট থাকুন – প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার আসে, তাই সেগুলো ভালোভাবে জানুন।
প্রতিযোগীদের কন্টেন্ট বিশ্লেষণ করুন – কীভাবে সফল কনটেন্ট ক্রিয়েটররা স্টোরি ব্যবহার করছেন, তা পর্যবেক্ষণ করুন।
জনপ্রিয় ট্রেন্ডে অংশ নিন – মজার চ্যালেঞ্জ, নতুন মিউজিক ট্রেন্ড বা ভাইরাল আইডিয়া অনুসরণ করুন।

টিপস:
✔️ Reels এবং Story মিলিয়ে পোস্ট করুন – এতে অ্যালগরিদম আপনাকে বেশি রিচ দেবে!
✔️ Poll, Quiz ও Stickers ব্যবহার করুন – এতে আপনার স্টোরি আরও ইন্টারঅ্যাকটিভ হবে।

ফেসবুক স্টোরি সম্পর্কিত FAQ:

১. ফেসবুক স্টোরি আর্কাইভ কতদিন স্থায়ী হয়?

ফেসবুক স্টোরি আর্কাইভ আপনার স্টোরি পোস্ট করার ২৪ ঘণ্টা পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে আর্কাইভে চলে যায়। আপনি এই আর্কাইভে থাকা স্টোরিগুলি ৩০ দিন পর্যন্ত দেখতে পারবেন।

২. ফেসবুক স্টোরি ডাউনলোড করব কিভাবে?

ফেসবুক স্টোরি ডাউনলোড করতে, আপনার প্রোফাইলে গিয়ে যে স্টোরিটি আপনি ডাউনলোড করতে চান সেটিতে ক্লিক করুন। তারপর তিনটি ডট (…) আইকন উপর ক্লিক করুন এবং “ডাউনলোড” অপশনটি সিলেক্ট করুন।

৩. ফেসবুক স্টোরিতে সাড়া দিলে কি হয়?

ফেসবুক স্টোরিতে সাড়া দিলে আপনার স্টোরি পোস্ট করা ব্যক্তি জানবে আপনি তাদের স্টোরি দেখেছেন বা লাইক দিয়েছেন। এই সাড়া প্রদানের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আপনার যোগাযোগ বা প্রতিক্রিয়া প্রদর্শিত হবে।

৪. ফেসবুকে পুরাতন স্টোরি কিভাবে দেখব?

ফেসবুকে পুরাতন স্টোরি দেখতে হলে আপনার প্রোফাইল পেজে যান। সেখানে স্টোরি আর্কাইভে প্রবেশ করে, আপনি আপনার পুরাতন স্টোরিগুলির তালিকা দেখতে পারবেন। এটি কেবল আপনি নিজে দেখতে পারবেন।

শেষ কথা

ফেসবুক স্টোরি এখন আর শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে একটি কার্যকর ইনকাম সোর্স। আপনি যদি ধারাবাহিকভাবে মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করেন, ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ গ্রহণ করেন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেন বা নিজের পণ্য প্রচার করেন, তাহলে এটি আপনার জন্য একটি লাভজনক প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে।

সঠিক কৌশল, সৃজনশীলতা এবং ধারাবাহিকতা—এই তিনটি জিনিস আপনাকে সফল ফেসবুক স্টোরি মার্কেটিংয়ের পথে এগিয়ে নিতে পারে

এখনই সুযোগ কাজে লাগান!
আপনি কি কনটেন্ট ক্রিয়েটর, উদ্যোক্তা, নাকি ছোট ব্যবসার মালিক? তাহলে ফেসবুক স্টোরিকে কাজে লাগিয়ে ইনকামের নতুন দুয়ার খুলুন!

সংক্ষেপে: আকর্ষণীয়, ধারাবাহিক ও ইন্টারঅ্যাকটিভ কনটেন্ট আপনাকে বেশি দর্শক ও বেশি ইনকামের সুযোগ এনে দেবে!

আপনার জন্য কোন স্ট্র্যাটেজি সবচেয়ে বেশি কার্যকর মনে হচ্ছে? নিচে কমেন্টে জানান!

1 thought on “ফেসবুক স্টোরি থেকে আয়ের সুযোগ: কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য সুখবর, পারবনে আপনিও”

Leave a Comment