ইসলামে কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম ও কেন

কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম

রোজা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি এবং এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি অত্যন্ত পবিত্র ইবাদত। রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ হলেও, বছরের বিভিন্ন সময়ে নফল রোজা রাখার প্রচলন রয়েছে। তবে, ইসলামে কিছু নির্দিষ্ট দিন রয়েছে যেগুলোতে রোজা রাখা নিষিদ্ধ বা হারাম বলে গণ্য করা হয়। আপনি জানেন কি? বছরের কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম ও নিষিদ্ধ এবং কেন? আজ আমরা এই নিষিদ্ধ দিনগুলো এবং তার কারণ সম্পর্কে আলোচনা করবো। তো চলুন শুরু করা যাক-

আরও পড়ুন: পাদরির যে কথা শুনে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তালহা রা.

নিষিদ্ধ দিনগুলো ও কারণ

1. **ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন**:
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা ইসলামের দুই বড় উৎসব। এই দুই দিনে রোজা রাখা নিষিদ্ধ। ঈদের দিনগুলো আনন্দ ও উৎসবের দিন হিসেবে পালিত হয়, এবং এই দিনগুলোতে মুসলিমরা একে অপরের সাথে খাবার ভাগাভাগি করে নেয়।

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সা. ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দুই দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন। মুসলিম শরিফ; হাদিস: ১১৩৮। এমনিভাবে অসংখ্য হাদিসে ঈদুল আজহার পরবর্তী আইয়্যেমে তাশরিকের তিনদিন রোজা রাখা নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে।

2. **ঈদুল আজহার পরের আইয়ামে তাশরিকের তিন দিন**:
ঈদুল আজহার পরবর্তী তিন দিন, যা আইয়ামে তাশরিক নামে পরিচিত, এই দিনগুলোতেও রোজা রাখা নিষিদ্ধ। এই দিনগুলোতে হজ্জ পালনকারীরা মিনায় প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করে এবং কুরবানি দেয়। এই দিনগুলোতে মুসলিমরা কুরবানির মাংস ভাগাভাগি করে নেয় এবং আল্লাহর স্মরণে সময় কাটায়।

হযরত আবু দাউদের এক হাদিসে এসেছে, হযরত উকবা ইবনে আমের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, আরাফার দিন, ঈদুল আজহার দিন ও আইয়্যেমে তাশরিকের দিনগুলো আমাদের মুসলমানদের ঈদের দিন। এবং তা পানাহারের দিন। আবু দাউদ; হাদিস: ২৪১৯।

কেন এই দিনগুলোতে রোজা নিষিদ্ধ?

ঈদের দিনগুলোতে রোজা নিষিদ্ধের প্রধান কারণ হলো, এই দিনগুলো আনন্দ ও উৎসবের দিন। ঈদের দিন মুসলিমরা একে অপরের সাথে খাবার ভাগাভাগি করে নেয় এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এই দিনগুলোতে রোজা রাখা হলে, উৎসবের আনন্দ ও সামাজিক বন্ধন উপভোগ করা সম্ভব হয় না। তাছাড়া, হাদিসে পাকে এই দিনগুলোতে রোজা রাখা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ রয়েছে, যা মুসলিমদের জন্য অনুসরণীয়।

যাই হোক আমরা জানার চেষ্টা করলাম কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম ও নিষিদ্ধ এবং কেন। তাই, আমাদের উচিত, উক্ত দিনগুলোতে আল্লাহর নির্দেশিত পস্থাবলম্বন করা। করণীয় কাজগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে করা এবং বর্জনীয় বিষয়গুলি থেকে পরিপূর্ণ বিরত থাকা। আল্লাহ তায়ালা তৌফিক দান করুন। আমিন।

Juger Alo Google News   যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন