কুড়িগ্রামে তীব্র শীত: কৃষক-শ্রমিকদের ভোগান্তি, শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা
কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে, এবং এলাকাজুড়ে ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। শীতে কাবু হয়ে পড়েছে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ, বিশেষত খেটে খাওয়া কৃষক এবং শ্রমিকরা।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
কৃষক-শ্রমিকদের ভোগান্তি
এ অঞ্চলের কৃষক ও কৃষি শ্রমিকেরা শীতের প্রকোপে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন। তীব্র শীতে কৃষি কাজ করার জন্য পা ও হাত অবশ হয়ে যাচ্ছে, তারপরও তারা বোরো বীজতলা তৈরির কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। সদর উপজেলার কলেজ মোড় এলাকার কৃষি শ্রমিক ছাত্তার বলেন, “এত শীতের মধ্যেও বোরো বীজতলা তৈরি করতে হচ্ছে। সকালে পানিতে নামানো যাচ্ছে না। হাত-পা বরফ হয়ে যায়, কিন্তু কাজ তো করতে হয়।”
কুড়িগ্রামে তীব্র শীত: শীতজনিত রোগ বৃদ্ধি
কুড়িগ্রামে শীতজনিত রোগের প্রকোপও বাড়ছে। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষত শিশুরা এবং বয়স্ক মানুষ শীতের কারণে বিপাকে পড়েছে। অসহায় মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কষ্ট পাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, “ঠান্ডা এমনই যে, রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশা পড়ে। বাইরে বের হতে পারি না, বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে বড় সমস্যা।”
আরও পড়ুন: প্রকৃতি বিরূপ রংপুরে সূর্যের দেখা যায়নি: বাড়ছে জনদুর্ভোগ
কুড়িগ্রামে তীব্র শীতশৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস
আরও পড়ুন
- দুপুরের মধ্যেই ঝড়ের আশঙ্কা ৮ অঞ্চলে: প্রস্তুত থাকুন – বলছে আবহাওয়া অফিস
- আজকের আবহাওয়ার খবর: ধেয়ে আসছে শক্তিশালী বৃষ্টিবলয় ‘রিমঝিম’, তিন বিভাগে বন্যার শঙ্কা
- রংপুরের আবহাওয়া: বৃষ্টির বদলে সকালেই ৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রা!
- টানা বৃষ্টিতে ডুবলো রংপুর, তলিয়েছে ফসলের মাঠ, বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ
- ১৩ বছর পর রংপুর আবহাওয়ায় প্রযুক্তির বিপ্লব, আসলো নতুন ডপলার রাডার
এদিকে কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, “এ মাসের ১৫ তারিখের পর কমপক্ষে দুটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” এর ফলে শীত আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কুড়িগ্রামের শীতের তীব্রতা ও বৃষ্টির মতো কুয়াশা এলাকায় বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে কৃষকদের জন্য শীতজনিত এই পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর পাশাপাশি, স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে, যার ফলে শীতের মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।
উপসংহার
কুড়িগ্রামের শীত ও কুয়াশার কারণে কৃষক এবং খেটে খাওয়া মানুষের জীবনযাত্রা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। শীতজনিত রোগের প্রভাবও বাড়ছে, এবং শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কায় পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। শীত থেকে নিরাপদ থাকতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।