ঘূর্ণিঝড় আবহাওয়া: দুপুরের মধ্যে যেসব অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে হতে পাড়ে ঝড়

ঘূর্ণিঝড় আবহাওয়া: ঘূর্ণিঝড় দানার অবস্থান ছিল উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন ওডিশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলীয় এলাকায়। মধ্যরাতেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। তবে দেশে এর প্রভাব খুব বেশি আশঙ্কাজনক না হলেও সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত বলবৎ রয়েছে। 

এদিকে আজ ঢাকাসহ ১৪ অঞ্চলের ওপর দিয়ে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। নদীবন্দরগুলোতে চলছে দুই নম্বর নৌ সতর্কতা। সেই সঙ্গে সারা দেশে তাপমাত্রাও খানিকটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আরও পড়ুন: সরকারি ছুটির তালিকা ২০২৫ অনুমোদন: যা গত বছরের চেয়ে বেড়েছে ৪ দিন

আবহাওয়ার ১২ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে

—ঘূর্ণিঝড়টি মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং আজ সকালের মধ্যে পুরী ও সাগরদ্বীপের মাঝখান দিয়ে ভারতের উত্তর ওডিশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। 

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

যেসব অঞ্চলে আঘাত হানবে

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে বারবার ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। 

এদিকে আজ দুপুর ১টার মধ্যে ঢাকা, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে বারবার ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। 

অন্যদিকে আজ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। এই সময়ের মধ্যে তাপমাত্রাও সামান্য বাড়বে। 

স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের বরাতে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গতকাল রাতেই স্থলভাগে আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ঘূর্ণিঝড় দানার। ওডিশার স্থলভাগ অতিক্রম শুরু করছে ঘূর্ণিঝড়ের সামনের অংশ। এই সময়ে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি ১২০ কিলোমিটার। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এই ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া চলবে।

সুত্র: আজকের পত্রিকা

Juger Alo Google Newsযুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

Leave a Comment