রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় জনতা ভাঙারির দোকানে বিক্রির সময় বস্তাভর্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ মণ বই আটক করেছে। এই ঘটনা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার একটি মর্মান্তিক চিত্র তুলে ধরে।
আরও পড়ুন: রংপুর শহর শব্দ ও বায়ু দূষণের হুমকির মুখে
তথ্য অনুযায়ী, ৭ই মার্চ দুপুরে ছাওলা ইউনিয়নের পাওটানা হাট সংলগ্ন এলাকা থেকে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ৪৪০ কেজি প্রাথমিকের নতুন বই ভাঙারি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন দক্ষিণ ছাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইদুল ইসলাম। কেজি প্রতি মাত্র ২০ টাকায় এই লেনদেন সম্পন্ন হয়। কিন্তু বইগুলো ভ্যানে বোঝাই করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন তা আটক করে।
এই ঘটনা নিঃসন্দেহে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতার পরিচয় বহন করে। প্রশ্ন জাগে, কীভাবে একজন প্রধান শিক্ষক এত বিপুল পরিমাণ সরকারি বই বিক্রি করতে পারেন? স্থানীয়দের অভিযোগ, এই শিক্ষক দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা অফিসের কিছু কর্মকর্তার সহযোগিতায় একাধিক বেসরকারি স্কুলের নামে প্রচুর বই সংগ্রহ করে পরে তা বাজারে বিক্রি করে আসছেন।
আরও পড়ুন : রংপুরে নতুন খনির সন্ধান, বদলে দেবে অর্থনীতি, কী আছে সেখানে?
এমন নীতিবিবর্জিত কর্মকাণ্ড আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মূল ভিত্তিকেই নাড়িয়ে দেয়। শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত বই যখন এভাবে পাচার হয়, তখন তা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার শামিল। এটি শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের সুষ্ঠু মানসিক বিকাশের পথেও বাধা সৃষ্টি করে।
কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা জরুরি। পাশাপাশি, সমগ্র বই বিতরণ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। নইলে, শিক্ষার মতো পবিত্র ক্ষেত্রে দুর্নীতির এই অশনি সংকেত ভবিষ্যতে আরও ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন |