চা পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আর সেই চায়ের সঙ্গে যদি মেলে মিষ্টির রাজা রসগোল্লা, তাহলে তো উৎসবের আমেজ শুরু! চা আর রসগোল্লার এই অদ্ভুত কিন্তু মজাদার সংমিশ্রণ নিয়ে রংপুরে হাজির হয়েছেন অনন্যা ও দীপক দম্পতি। চা প্রেমীদের নতুন কিছু উপহার দিতে এই উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: শহীদ আবু সাঈদ: মেধাতালিকায় ১৪তম হয়ে স্নাতক পাস করলেন
রংপুর নগরীর সুরভী উদ্যান সংলগ্ন ফুটপাতে শুরু হওয়া তাদের এই ব্যতিক্রমী যাত্রা ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে।
চায়ের সাথে রসগোল্লা: নতুনত্বে ভরা অভিজ্ঞতা
‘রসগোল্লা চা’ নামেই যেন মিষ্টি! কিন্তু শুধু নামেই নয়, পরিবেশনের ধরণেও রয়েছে দারুণ অভিনবত্ব। সাধারণত মাটির কাপে চা পরিবেশনের চল থাকলেও, এই দম্পতি ব্যবহার করছেন নকশা করা বিশেষ মাটির কাপ। চিনি ছাড়া দুধ ও লিকারের মিশ্রণে একটি আস্ত রসগোল্লা দিয়ে তৈরি হচ্ছে এই বিশেষ চা। নান্দনিক উপস্থাপন আর অনন্য স্বাদে চায়ের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন ক্রেতারা।
প্রথমবারের অভিজ্ঞতা: খাবে আগে চা, না রসগোল্লা?
রসগোল্লা চায়ের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন চা-প্রেমীরা। স্বাদ নেওয়ার পাশাপাশি মজার একটি প্রশ্নও উঠে আসছে তাদের মনে—আগে রসগোল্লা খাবেন নাকি চা? শহরের এক ক্রেতা জানান,
“এরকম চা আগে কখনো শুনিনি। নাম শুনেই আগ্রহ নিয়ে চলে এসেছি। কাপ হাতে নিয়েই ভাবছিলাম, আগে কী খাব! খাওয়ার চেয়েও বেশি মজা লেগেছে পুরো অভিজ্ঞতাটা। একবার খেলে আরেকবার আসতেই হবে। মুখে লেগে থাকার মতো স্বাদ!”
নারী উদ্যোক্তার পথচলা: প্রতিবন্ধকতা জয় করে সাফল্যের পথে
এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের পেছনে আছেন অনন্যা ও তার স্বামী দীপক। চাকরি ছেড়ে ভিন্ন কিছু করার বাসনা থেকেই অনন্যার এই যাত্রা শুরু। ইউটিউব থেকে শেখার পর নিজের চেষ্টায় চা বানানোর প্রক্রিয়া রপ্ত করেন তিনি। পরে ঋণ নিয়ে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে চালু করেন এই দোকান।
অনন্যা জানান,
“নতুন উদ্যোগ হিসেবে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। নতুন এই আইটেম রসগোল্লা চায়ের গুণগত মান ধরে রেখে ক্রেতাদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে এই ব্যবসাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।”
অনুপ্রেরণার গল্প: নারীর অগ্রযাত্রা
অনন্যার এই উদ্যোগ শুধুই ব্যবসা নয়, এটি অন্য নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার এক দৃষ্টান্ত। স্থানীয় এক চা-প্রেমী তারিফ বলেন,
“নারী হয়েও তিনি প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে নিজের জায়গা করে নিচ্ছেন। তার উদ্যোগ অন্য নারীদেরও উৎসাহিত করবে। রসগোল্লা চায়ের মতো ব্যতিক্রমী উদ্যোগ একটি বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
দোকানটিকে শুধু ব্যবসা নয়, অনন্যা এটিকে একটি নতুন ধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। তিনি আরও জানান,
“গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে চায়ের মান এবং পরিবেশনের শৈলী ধরে রাখার চেষ্টা করব। ভবিষ্যতে এই চায়ের স্বাদ আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে।”
উপসংহার
রসগোল্লা চায়ের এই উদ্যোগে নতুনত্বের ছোঁয়া এনে রংপুরের চায়ের জগতে আলোড়ন তুলেছেন অনন্যা ও দীপক। এটি শুধু চায়ের স্বাদের নতুন সংযোজন নয়, বরং উদ্যোক্তা হওয়ার সাহসী পদক্ষেপেরও প্রতীক। রংপুরবাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া এই দম্পতির যাত্রা আরও সফল হোক, সেই প্রত্যাশা সকলের।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
1 thought on “রংপুর মাতাচ্ছে ‘অনন্যার রসগোল্লা চা’: চায়ের নতুন অধ্যায় শুরু”