বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) এবং বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, শিশুদের হাতে স্মার্টফোন দেওয়ার সময় সীমাবদ্ধ করা উচিত। বিশেষ করে, দেড় বছরের কম বয়সী শিশুদের স্ক্রিন ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। দুই থেকে চার বছর বয়সী শিশুদের বেশি করে শারীরিক ক্রিয়াকলাপে ব্যস্ত থাকা উচিত।
আরও পড়ুন: যে ৫ ভুলের কারণে আয়ু কমছে স্মার্টফোনের
স্মার্টফোনে বেশি সময় কাটানো শিশুরা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা, যেমন চোখ, মানসিক চাপ, নিদ্রাহীনতা এবং মেধা বিকাশের সমস্যায় পড়তে পারে। এছাড়াও, স্মার্টফোনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা শিশুর মস্তিষ্কের গঠনও আলাদা হতে পারে।
স্মার্টফোনে সময় কাটানোর ফলে শিশুরা সামাজিক ভাব বিনিময়ে সময় পায় না এবং বন্ধুত্ব বজায় রাখতে অসুবিধা হয়। এছাড়াও, সাইবার বুলিং একটি বড় সমস্যা যা কিশোর বয়সে মনের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্মার্টফোনে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হতে হয় অনেক শিশুকে।
অভিভাবকদের ভূমিকা এখানে গুরুত্বপূর্ণ। তাদের শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহার থেকে বিরত করানো এবং অন্যান্য আকর্ষণীয় ক্রিয়াকলাপে যেমন ছবি আঁকা, গান গাওয়া বা কোনো বাদ্যযন্ত্রের প্রতি আগ্রহ বাড়ানো উচিত। সন্তানকে পড়াশোনার পাশাপাশি কম্পিউটার কোডিং ল্যাঙ্গুয়েজ শেখানো ও বিভিন্ন রহস্য-রোমাঞ্চকর গল্পের প্রতি ঝোঁক তৈরি করানো উচিত।
বিভিন্ন গবেষণা ও বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুসারে, শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় সীমিত রাখা উচিত:
– **১৮ মাসের কম বয়সী শিশুদের** কোন স্ক্রিন টাইম দেওয়া উচিত নয়।
– **১৮ মাস থেকে ২ বছর বয়স** পর্যন্ত শিশুদের দিনে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টার জন্য উচ্চ মানের ভিডিও দেখানো যেতে পারে, যদি সাথে কোন প্রাপ্তবয়স্ক থাকেন।
– **২ থেকে ৫ বছর বয়সী** শিশুদের জন্য দিনে ১ ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন টাইম ঠিক নয়।
– **৫ বছরের বেশি বয়সী** শিশুদের জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সীমিত স্ক্রিন টাইম দেওয়া যেতে পারে।
সাধারণত, শিশুদের জন্য প্রতিদিন ১ ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন টাইম ঠিক নয় বলে মনে করা হয়। স্ক্রিনের সামনে অতিরিক্ত সময় কাটালে শিশুদের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক উন্নতিতে বাধা হয়।
সবশেষে, শিশুদের হাতে স্মার্টফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অভিভাবকদের সচেতন হওয়া এবং সমস্যাগুলোর সম্পর্কে তাদের জ্ঞান বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।