জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে দেয়া লাগবে পরীক্ষা

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এখন থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে। আগামী বছর থেকেই এই নতুন ভর্তি পদ্ধতি চালু হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ। তিনি ১৬ নভেম্বর শনিবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা মহিলা ডিগ্রি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশে এই তথ্য প্রকাশ করেন।

অধ্যাপক আমানুল্লাহ আরো বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক টিমের সমস্ত সদস্য একসঙ্গে কাজ করে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ও সংস্কারের দিকে কাজ করছেন। আগামী ২০২৫ সালকে আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাবর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছি। আমাদের লক্ষ্য হল, যদি আগামী বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা আগের সব পরীক্ষা শেষ করতে পারি, তাহলে সেশনজট ৬০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারব।”

আরও পড়ুন: ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’ স্লোগানটির আসল উদ্দেশ্য কী ছিল?

গত কয়েক বছর ধরে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ এবং প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করা হতো এবং সেই তালিকার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শূন্য আসনে ভর্তি করা হতো। কিন্তু এই পদ্ধতিতে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনেক বিতর্কও ছিল। এবার ভর্তি পরীক্ষা চালু হলে, শিক্ষার্থীরা সুনির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতা অনুযায়ী ভর্তি হতে পারবেন, যা শিক্ষাব্যবস্থায় আরো স্বচ্ছতা আনার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) কোর্সের আওতায় রয়েছে সারাদেশের ৮৮১টি কলেজ, যার মধ্যে ২৬৪টি সরকারি কলেজ এবং ৬১৭টি বেসরকারি কলেজ। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে প্রথমবর্ষে ভর্তির জন্য মোট আসনের সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৮৫টি। পাশাপাশি, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ডিগ্রি (পাস কোর্স) প্রথমবর্ষে ভর্তির জন্য আসন ছিল ৪ লাখ ২১ হাজার ৯৯০টি, যা বিভিন্ন কলেজে বিভক্ত করা হয়। দেশের এক হাজার ৯৬৯টি কলেজে ডিগ্রি কোর্স পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া, এই কোর্সে কিছু কোটা সংরক্ষিত থাকবে, যাতে বিভিন্ন জনগণের জন্য সুযোগ তৈরি করা যায়।

আরও পড়ুন: জাবির নবীন শিক্ষার্থীর মাঝে দেড় হাজার কপি কুরআন বিতরণ

এর মধ্যে, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য তিনটি আসন, আদিবাসী জনগণের জন্য একটি, প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি, এবং পোষ্য কোটা তিনটি আসন সংরক্ষিত থাকবে। এই কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন সমাজের বৈষম্য কমানোর এবং সকল শিক্ষার্থীকে সমান সুযোগ প্রদানের উদ্দেশ্য রয়েছে।

এছাড়া, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য আরো নানা উদ্যোগ গ্রহণের পরিকল্পনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশা করছে, নতুন ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য আরও স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, যা তাদের ভবিষ্যত প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে।

  Juger Alo Google News যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

Leave a Comment