বুড়ো বয়সেও চিরতরুণ থাকতে খান এই শাকের চচ্চড়ি

বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটতে থাকে। চেহারায় ভাঁজ পড়া, চুল পাকা, শারীরিক দুর্বলতা বৃদ্ধির লক্ষণ। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা বুড়ো বয়সেও তরুণদের মত সজীব ও কর্মক্ষম থাকেন। তাদের দেখে মনে হয় যেন বয়স তাদের ছুঁতেই পারেনি। এমন প্রাণবন্ত থাকার পেছনে রয়েছে তাদের সুষম খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন। এক্ষেত্রে কলমি শাক হতে পারে আপনার অকৃত্রিম বন্ধু। কলমি শাকের চচ্চড়ি খেলে বুড়ো বয়সেও জোয়ান থাকা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে।

কলমি শাকের পুষ্টিগুণ

শাকসবজি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এদের মধ্যে একটি হলো কলমি শাকের চচ্চড়ি। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এই শাক শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আরও পড়ুন : লবণ দিয়ে চা খেলে কী হয় জানেন?

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি ও কে। এছাড়াও এতে থাকে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি খনিজ উপাদান। কলমি শাকে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।

হজম ক্ষমতা বাড়ায়

কলমি শাকে প্রচুর আঁশ থাকে। এই আঁশ হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। ফলে খাদ্য সহজে হজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়। নিয়মিত কলমি শাক খেলে পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে।

হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

কলমি শাকে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন কে প্রভৃতি উপাদান থাকে। এগুলো হাড়ের গঠন ও মজবুতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন কলমি শাক খেলে বয়স বাড়লেও হাড় ভাঙ্গার ঝুঁকি কমে।

আরও পড়ুন : ঘুমের আগে বালিশের নিচে রসুন রেখে দেখুন ম্যাজিক

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

কলমি শাকে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপস্থিত। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

কলমি শাকের চচ্চড়ি রেসিপি

উপকরণ:
– কলমি শাক (কাটা): ২ কাপ
– সরিষার তেল: ২ টেবিল চামচ
– পেঁয়াজ কুচি: ১ কাপ
– রসুন কুচি: ১ টেবিল চামচ
– হলুদ গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ
– লবণ: স্বাদমতো
– মরিচ গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ
– কাঁচা মরিচ: ২-৩টি

আরও পড়ুন : সেক্সে রসুনের উপকারিতা কি এবং খাওয়ার নিয়ম

প্রণালী:
১. প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি দিয়ে কষান।
২. এরপর হলুদ, মরিচ গুঁড়ো ও লবণ দিয়ে কষান।
৩. কাটা কলমি শাক দিয়ে নাড়ুন। ঢাকনা দিয়ে আঁচ কমিয়ে ১০ মিনিট রান্না করুন।
৪. কাঁচা মরিচ দিয়ে নামিয়ে নিন।

উপসংহার

কলমি শাকের চচ্চড়ি খেলে শুধু যে বুড়ো বয়সে জোয়ান থাকা যায় তা নয়, সার্বিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলমি শাক অন্তর্ভুক্ত করুন। নিজে সুস্থ থাকুন, অন্যকেও সুস্থ থাকতে উৎসাহিত করুন। তাই প্রতিদিনের খাবারে শাকের চচ্চড়ি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এটি বিভিন্নভাবে রান্না করা যায়। যেমন – বাটা দিয়ে চচ্চড়ি, মাছ দিয়ে চচ্চড়ি, ডিম দিয়ে চচ্চড়ি ইত্যাদি। স্বাদের পাশাপাশি পুষ্টিগুণেও এটি অনন্য।

শুধু খাদ্যাভ্যাসই নয়, নিয়মিত ব্যায়াম, ইতিবাচক চিন্তাভাবনা, সুস্থ জীবনযাপনও বয়স বাড়লেও তরুণ থাকার অন্যতম উপায়। মানসিক চাপ এড়িয়ে শান্ত থাকা, পরিমিত খাওয়া-দাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম – এসব অভ্যাস গড়ে তুললে দীর্ঘদিন সুস্থ ও প্রাণবন্ত থাকা সম্ভব। তাই বুড়ো বয়সেও যৌবনের ছোঁয়া ধরে রাখতে চাইলে জীবনযাপনে এই ছোট ছোট পরিবর্তন আনতে হবে। প্রতিদিন শাকের চচ্চড়ি খাওয়ার অভ্যাস করুন। দেখবেন, বয়স যতই বাড়ুক, আপনি থাকবেন চিরতরুণ!

Juger Alo Google News   যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

3 thoughts on “বুড়ো বয়সেও চিরতরুণ থাকতে খান এই শাকের চচ্চড়ি”

Leave a Comment