মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌর জেলার এক পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিজেপি নেতা মনোহরলাল ধাকড় সম্প্রতি তীব্র বিতর্কের মুখে পড়েছেন। দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়েতে এক নারীর সঙ্গে প্রকাশ্যে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার পর, তার ভিডিও দ্রুত ভাইরাল হয় সামাজিক মাধ্যমে।
ঘটনাটি ঘটেছে ১৩ মে রাতে, আর ভিডিওটি সিসিটিভি ফুটেজ থেকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, ধাকড় ও এক নারী সাদা গাড়ির পাশে প্রকাশ্যে আপত্তিকর আচরণে লিপ্ত।
কী ঘটেছিল?
ঘটনার পরপরই মন্দসৌর পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে। ভারতীয় আইন অনুযায়ী, প্রকাশ্যে অশ্লীলতা, জনপথে বাধা সৃষ্টি এবং যৌথ অপরাধের অভিযোগে ধাকড় ও ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিওটি টোল বুথের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে এবং দ্রুত নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ধাকড় আত্মগোপনে চলে যান, পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
মনোহরলাল ধাকড়ের স্ত্রী সোহন বাই নিজেও বিজেপি-সমর্থিত জেলা পঞ্চায়েত সদস্য এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। তবে বিজেপি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ধাকড় দলের কোনও প্রাথমিক সদস্য নন; তার স্ত্রী দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তিনি নন। এ নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। ধাকড়কে তার সামাজিক সংগঠন থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।
ব্ল্যাকমেইল ও ভিডিও ফাঁসের অভিযোগ
ঘটনার আরেকটি দিক হলো, ধাকড় দাবি করেছেন—তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছিল। কিছু কর্মী নাকি ভিডিও না ছড়ানোর শর্তে তার কাছে ৮০ হাজার টাকা দাবি করে, তিনি ২০ হাজার টাকা দেন, এরপর চুক্তি ভেস্তে গেলে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। পুলিশ এই ব্ল্যাকমেইলের দিকটিও তদন্ত করছে।
ধাকড়ের বক্তব্য
বেল পাওয়ার পর ধাকড় দাবি করেন, ভিডিওটি ভুয়া এবং ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার সম্মানহানি করা হয়েছে। তিনি বলেন, “গাড়িটাও আমার ছিল না, আমি বিক্রি করে দিয়েছি। তদন্তে সত্য বেরিয়ে আসবে”। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিওতে দেখা গাড়িটি তার নামে রেজিস্টার্ড ছিল।

আইনগত পদক্ষেপ
ধাকড় ও ওই নারীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। ধাকড় এখন জামিনে মুক্ত, তবে তদন্তের স্বার্থে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এই ঘটনাটি শুধু ব্যক্তিগত নয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্তরেও ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। তদন্তের পরই প্রকৃত সত্য জানা যাবে—এটাই এখন সকলের প্রত্যাশা।