কখনো কি এমন হয়েছে, রাত গভীর হলে আপনার চোখে ঘুম আসেনি? নিঃশব্দ অন্ধকারে মনে হয়েছে—আল্লাহ কি আমার দুঃখগুলো জানেন? আমার ভুলগুলো কি তিনি ক্ষমা করবেন?
রমজানের শেষ দশ রাত ঠিক তেমনই—একটি গোপন, রহমতভরা রাত লুকিয়ে থাকে সেখানেই। সেই রাতের নাম লাইলাতুল কদর—যে রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এমন একটি রাত, যেখানে হয়তো আপনার জীবনের সব দুয়ার খুলে দিতে পারেন আল্লাহ, যদি আপনি তাঁর কাছে ফিরে যান হৃদয় দিয়ে।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
এই পবিত্র রাতে ফেরেশতারা নেমে আসে, বান্দাদের নাম ধরে ডাকে, আর মাফ চাইলে আল্লাহ তাআলা বলেন—”তোমাকে আমি ক্ষমা করলাম।” ভাবুন তো, যদি সেই রাত হয় আজ? আপনি কি প্রস্তুত?
এখন প্রশ্ন হলো— লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস কি বলে এবং আমরা কিভাবে এই রাতটি চিনব? কিভাবে নিশ্চিত হব যে, আমরা লাইলাতুল কদরের বরকত থেকে বঞ্চিত হচ্ছি না?
এই লেখায় আমরা জানব—
- লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য
- রাসূল (সা.) এর বর্ণিত হাদিস
- কীভাবে নামাজ, দোয়া ও আমলের মাধ্যমে রাতটি পূর্ণতা দিতে পারি
- এবং লাইলাতুল কদর চেনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত
আপনি যদি এই বরকতময় রাতের ফজিলত পেতে চান, তাহলে চলুন—আসুন একসাথে জেনে নিই লাইলাতুল কদরের মহিমা এবং করণীয় সবকিছু।
লাইলাতুল কদর কি?
‘লাইলাতুল কদর’ শব্দটি এসেছে আরবি থেকে। “লাইলাহ” অর্থ রাত এবং “কদর” মানে মর্যাদা বা তাকদির। এটি এমন একটি রাত যখন মহান আল্লাহ বান্দার তাকদির নির্ধারণ করেন।
পবিত্র কোরআনের সুরা আল-কদরে আল্লাহ বলেন,
“লাইলাতুল কদর খাইরুম মিন আলফি শাহর”
অর্থাৎ: ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ (সুরা আল-কদর, আয়াত ৩)
হিসেব করে দেখলে, হাজার মাস মানে প্রায় ৮৩ বছরের বেশি! অর্থাৎ, আপনি যদি এই রাতে ইবাদত করেন, তা জীবনের প্রায় এক সম্পূর্ণ সময়ের ইবাদতের সমান।
লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
লাইলাতুল কদর, আল্লাহর বিশেষ রহমত ও মাগফিরাতের রাত, যেখানে গুনাহ মাফ করার সুযোগ থাকে। রাসূল (সা.) এই রাতের সম্পর্কে আমাদের বহু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস বর্ণনা করেছেন, যাতে আমরা আল্লাহর কাছ থেকে তাঁর অশেষ রহমত পেতে পারি।
রাসূল (সা.) এর বাণী:
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতসমূহে তালাশ করো।”
[সহীহ বুখারী, হাদীস: ২০১৭]
এটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা—রমজানের শেষ দশ রাতে, বিশেষত বিজোড় রাতগুলোতে, আমাদের ইবাদত বৃদ্ধি করতে হবে। রাতগুলোতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, তাঁর রহমত কামনা করতে হবে, কারণ লাইলাতুল কদর সেই রাতগুলোর মধ্যে লুকানো থাকতে পারে।
হযরত আয়েশা (রা.) এর প্রশ্ন ও রাসূল (সা.) এর উত্তর:
এছাড়াও, হযরত আয়েশা (রা.) একদিন রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন:
“হে আল্লাহর রাসূল! আমি যদি বুঝতে পারি যে এটা লাইলাতুল কদর, তাহলে আমি কী দোয়া করব?”
রাসূল (সা.) তাঁর অমূল্য উত্তর দেন:
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
“হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমাকে পছন্দ কর, সুতরাং আমাকে ক্ষমা কর।”
এই দোয়াটি এতটাই গভীর এবং অর্থপূর্ণ। রাসূল (সা.) আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে, এই রাতের সবচেয়ে মূল্যবান আমল হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। আল্লাহ তাআলা জানেন আমাদের অন্তরের সব গোপন কষ্ট, দুঃখ-বেদনা, এবং দুর্বলতা। যখন আমরা এই দোয়া পড়ি, তখন আল্লাহ আমাদের সমস্ত পাপ মাফ করে দেন এবং আমাদের আত্মাকে শুদ্ধ করেন।
আরো পড়ুন: ২৯ রমজানে দেখা যাবে না ঈদের চাঁদ: তাহলে কবে হচ্ছে ঈদুল ফিতর ২০২৫
লাইলাতুল কদর এর ফজিলত
লাইলাতুল কদর, যে রাতটি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম, এটি আমাদের জন্য আল্লাহর অশেষ রহমত ও মাগফিরাতের এক অমূল্য সুযোগ। রাসূল (সা.) আমাদেরকে জানিয়েছেন যে, এই রাতের বিশেষ ফজিলত ও বরকত রয়েছে, যা আমাদের জীবনের দিক বদলে দিতে পারে। চলুন, জানি এই রাতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত সম্পর্কে:
✅ হাজার মাসের চেয়েও উত্তম
একটি রাতেই এমন সওয়াব পাওয়া যায়, যা এক যুগের বেশি সময় ইবাদতের সমান।
যদি আপনি এক রাত পরিশ্রম করে ইবাদত করেন, তাহলে তার সওয়াব হাজার মাসের ইবাদতের সমান হবে। এটা তো আল্লাহর এক বিশাল রহমত! এই সুযোগটি হাতছাড়া না করার জন্য আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করা উচিত।
✅ ফেরেশতা ও জিবরাইল (আঃ) নেমে আসেন
এই রাতটি অত্যন্ত পবিত্র, কারণ সুরা আল-কদরে বলা হয়েছে—এই রাতে ফেরেশতা ও জিবরাইল (আঃ) আল্লাহর হুকুমে পৃথিবীতে নেমে আসেন। ফেরেশতারা বান্দাদের জন্য দোয়া করেন এবং আল্লাহর কাছে শান্তি ও মাগফিরাতের আবেদন করেন। এর মাধ্যমে রাতটি এমন এক রহমত ও বরকতের রাত হয়ে ওঠে, যা পৃথিবীকে আলোয় ভরিয়ে দেয়।
✅ সালাম ও নিরাপত্তার রাত
এই রাতের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো—এটি সালাম এবং নিরাপত্তার রাত।
রাতটি শেষ হওয়া পর্যন্ত, অর্থাৎ ফজর পর্যন্ত, এটি শান্তি, নিরাপত্তা ও রহমত পূর্ণ থাকে। আল্লাহ তাআলা এই রাতে এমন একটি বিশেষ বরকত নাযিল করেন, যা মানব জাতিকে তাঁর কৃপা এবং নিরাপত্তা দেয়। একে ‘সালাম’ রাত বলা হয় কারণ এই রাতটি শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতীক।
✅ গুনাহ মাফের সুযোগ
লাইলাতুল কদর হলো এমন একটি রাত, যা গুনাহ মাফ করার জন্য এক অপূর্ব সুযোগ দেয়।
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশা নিয়ে লাইলাতুল কদরে ইবাদত করবে, আল্লাহ তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন।”
[সহীহ বুখারী, হাদীস: ১৯০১]
এই হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, যে ব্যক্তি এই রাতের ইবাদত করবে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। এ যেন এক নতুন জীবনের সূচনা! আল্লাহ তাআলা এই রাতটি আমাদেরকে শুদ্ধ করতে, আমাদের পাপ মুছতে এবং তাঁর সাথে সম্পর্ক পুনর্নির্মাণের একটি অনন্য সুযোগ দেন।
এখন, আপনি কী ভাবছেন? এই রাতটির গুরুত্ব উপলব্ধি করে কি আমরা আমাদের সকল গুনাহ মাফের জন্য প্রস্তুত?
লাইলাতুল কদর কোন রাতে? চেনার উপায়
লাইলাতুল কদর একটি গোপন রহমতপূর্ণ রাত, যার মধ্যে রয়েছে আল্লাহর অশেষ দয়া, মাগফিরাত এবং রেহমতের অফুরন্ত বরকত। তবে, রাসূল (সা.) এই রাতটির সঠিক তারিখ উল্লেখ করেননি। তবুও, তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন কিভাবে আমরা এই বিশেষ রাতটি খুঁজে পেতে পারি।
✅ লাইলাতুল কদর খোঁজার সময়
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতসমূহে লাইলাতুল কদর খোঁজ করো।”
[সহীহ বুখারী]
এর মানে হলো, আমরা লাইলাতুল কদর খুঁজতে পারি রমজানের শেষ দশ রাতের মধ্যে, বিশেষত বিজোড় রাতগুলোতে। সুতরাং, লাইলাতুল কদর হতে পারে:
- ২১ রমজান
- ২৩ রমজান
- ২৫ রমজান
- ২৭ রমজান
- ২৯ রমজান
✅ লাইলাতুল কদর চেনার আলামত
প্রতিটি রাতই আল্লাহর রহমত নিয়ে আসে, তবে লাইলাতুল কদর একটি বিশেষ রাত, যা কিছু আলামতের মাধ্যমে চেনা যায়। এ রাতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত হলো:
- আকাশ পরিষ্কার থাকে:
লাইলাতুল কদরের রাতে আকাশ থাকে পরিষ্কার, মেঘমুক্ত। পরিবেশে এক ধরনের প্রশান্তি বিরাজ করে। - গরম কম হয়:
এই রাতটি স্নিগ্ধ ও শীতল থাকে। গরম অনুভূত হয় না, বরং রাতের বাতাসে এক ধরনের শান্তি ও স্বস্তি পাওয়া যায়। - সকালের সূর্য উজ্জ্বল হয় না, নরম আলো:
লাইলাতুল কদর শেষ হওয়ার পর, যখন সূর্য উঠবে, তখন তার আলো স্বাভাবিকের চেয়ে মৃদু ও নরম হয়। সূর্যের তেজ কম থাকে। - আত্মার এক প্রশান্তি অনুভূত হয়:
যারা এই রাতে ইবাদত করেন, তারা এক ধরনের আধ্যাত্মিক প্রশান্তি অনুভব করেন। মনে হয় যেন সমস্ত দুঃখ, কষ্ট, ও পাপ দূর হয়ে গেছে এবং আল্লাহর রহমত অনুভব করা যাচ্ছে।


লাইলাতুল কদরের আমল ও করণীয়
লাইলাতুল কদর একটি পবিত্র রাত, যা আল্লাহর অশেষ রহমত, মাগফিরাত এবং শান্তি নিয়ে আসে। এই রাতে আমাদের করণীয় হলো সেই রহমতকে গ্রহণ করা এবং নিজেদের আত্মাকে শুদ্ধ করা। রাসূল (সা.)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, আমরা বিশেষ কিছু ইবাদত ও আমল করার মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে এই রাতের বরকত লাভ করতে পারি। চলুন, জানি লাইলাতুল কদরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল ও করণীয় কী কী:
লাইলাতুল কদরে করণীয়
✅ ইবাদত:
১. তাহাজ্জুদ নামাজ
- লাইলাতুল কদর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি অতিরিক্ত নফল নামাজ, যা রাতের গভীরে পড়া হয়।
- এই রাতে তাহাজ্জুদ পড়লে, আল্লাহ তাআলা তার বান্দাকে বিশেষ রহমত দেন এবং গুনাহ মাফ করেন।
২. নফল নামাজ
- লাইলাতুল কদরের রাতকে নফল নামাজে অতিবাহিত করা অত্যন্ত ফলদায়ক। আপনি যত বেশি নামাজ পড়তে পারবেন, তত বেশি আল্লাহর রহমত লাভ করবেন।
- সাধারণত, এই রাতে একাধিক রাকাত নফল নামাজ পড়া যায়।
- কুরআন তিলাওয়াত
- কুরআন নাযিল হওয়ার রাত—অতএব এই রাতটি কুরআন তিলাওয়াতের জন্য একেবারে উপযুক্ত।
- আল্লাহর কিতাব পড়ার মাধ্যমে একে অপরের হৃদয়ে শান্তি এবং প্রশান্তি আনা সম্ভব।
- দরূদ শরীফ পাঠ
- রাসূল (সা.)-এর প্রতি দরূদ পাঠ করা অত্যন্ত বরকতপূর্ণ। আপনি যত বেশি দরূদ পাঠ করবেন, আল্লাহ তাআলা আপনার প্রতি রহমত ও বরকত দান করবেন।
- তাসবিহ ও জিকির
- তাসবিহ ও জিকির (আল্লাহর নাম স্মরণ) এই রাতে করা উচিত। আল্লাহর নাম স্মরণ করার মাধ্যমে অন্তর শান্ত হয় এবং এই রাতের বিশেষ বরকত লাভ হয়।
✅ কোরআন তিলাওয়াত:
লাইলাতুল কদর রাতে কুরআন তিলাওয়াত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কুরআনই এই রাতে নাযিল হয়েছে।
- তাই এই রাতটি কুরআনের প্রতি যত্নবান হওয়ার, তিলাওয়াত করার এবং কুরআন বোঝার রাত।
- আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাঁর কিতাব অনুসরণ করতে বলেছেন, এবং এই রাতটি আমাদের কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আরও কাছে যাওয়ার সুযোগ দেয়।
✅ ইস্তিগফার ও দোয়া:
এই রাতটি আমাদের গোনাহ মাফ করার শ্রেষ্ঠ সুযোগ—তাহলে আমাদের দুঃখ-কষ্ট এবং পাপগুলোর জন্য ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করা উচিত।
- আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া যেন আমাদের রুটিন হয়। আমরা যেন এই রাতে অশ্রুসিক্ত চোখে আল্লাহর কাছে আমাদের সমস্ত গুনাহ মাফের জন্য আবেদন করি।
- এই রাতে করণীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দোয়া হলো—
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
“হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমাকে পছন্দ কর, সুতরাং আমাকে ক্ষমা কর।”
লাইলাতুল কদরের দোয়া ও দুআ
লাইলাতুল কদর, যেটি হাজার মাসের চেয়ে উত্তম, একটি বিশেষ রাত যা আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত এবং বরকতের পূর্ণতা নিয়ে আসে। এই রাতে ইবাদত এবং দোয়া করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছ থেকে তার অশেষ রহমত লাভ করতে পারি। বিশেষত, আমরা যেসব দোয়া এবং দুআ পড়ি, সেগুলো আমাদের পাপ মাফের এবং শান্তির এক অপূর্ব সুযোগ এনে দেয়। চলুন, জেনে নেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ লাইলাতুল কদর দোয়া ও দুআ:
লাইলাতুল কদরের দুআ
✅ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দোয়া
রাসূল (সা.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী, লাইলাতুল কদরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দোয়া হলো:
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
“হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমাকে ভালোবাসো, সুতরাং আমাকে ক্ষমা কর।”
এটি এমন একটি দোয়া, যা আমাদের সব গুনাহ মাফ করার এবং আল্লাহর রহমত লাভ করার শ্রেষ্ঠ সুযোগ দেয়। এই দোয়াটি পড়লে, আল্লাহ আমাদের পাপ মাফ করেন এবং আমাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করেন। এটি লাইলাতুল কদরের রাতের অন্যতম কার্যকরী দোয়া।
✅ আরও কিছু দোয়া:
1. রিযিক বৃদ্ধির জন্য দোয়া:
اللّهُمّ ارزقني من حيث لا أحتسب
“হে আল্লাহ, আমাকে এমনভাবে রিযিক দাও, যা আমি কল্পনাও করি না।”
এই দোয়া রিযিক ও উপার্জনের বৃদ্ধি কামনা করার জন্য একটি দোয়া। লাইলাতুল কদরে এই দোয়া পাঠ করলে, আল্লাহ তাআলা আমাদের রিযিক বৃদ্ধি করবেন এবং নতুন পথ উন্মুক্ত করবেন।
2. পরিবারের শান্তির জন্য দোয়া:
اللّهُمّ اجعلنا من أهل بيتٍ مطمئنين
“হে আল্লাহ, আমাদের পরিবারকে শান্তি ও নিরাপত্তার অধিকারী বানাও।”
এই দোয়া আমাদের পরিবারে শান্তি এবং স্নেহের সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য। পরিবারের মধ্যে একতা এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য এটি একটি চমৎকার দোয়া।
3. মৃত আত্মীয়ের মাগফিরাত কামনার দোয়া:
اللّهُمّ اغفر لأمواتنا وأموات المسلمين
“হে আল্লাহ, আমাদের মৃত আত্মীয়দের এবং সমস্ত মুসলিমদের জন্য মাগফিরাত দান করো।”
এই দোয়া আমাদের মৃত আত্মীয়দের জন্য মাগফিরাত কামনা করার জন্য বিশেষ দোয়া। লাইলাতুল কদর রাতে, আমাদের প্রিয়জনদের জন্য দোয়া করে তাদের জান্নাতুল ফেরদাউস কামনা করা অত্যন্ত ফলদায়ক।
✅ লাইলাতুল কদরের নামাজের দোয়ার গুরুত্ব
লাইলাতুল কদরের রাতটি আমাদের জন্য পাপ মাফ, রহমত ও বরকতের এক বিশেষ রাত। এই রাতে আল্লাহ আমাদের সকল দোয়া কবুল করেন, যতটুকু sincere হৃদয় থেকে আমরা তাঁকে ডাকবো। তাই, এই রাতটি আমাদের দোয়া ও ইবাদতে অতিবাহিত করা উচিত—আমাদের নিজেদের, আমাদের পরিবারের এবং সমস্ত মুসলিম উম্মাহর জন্য।
এই রাতের দোয়াগুলির মধ্যে যে শান্তি এবং বিশেষ রহমত রয়েছে, তা আমাদের জীবনে আল্লাহর কাছ থেকে এক নতুন স্নিগ্ধতা এনে দেয়।
লাইলাতুল কদরের নামাজ ও তার নিয়মাবলী
লাইলাতুল কদর হলো এমন একটি রাত, যেখানে আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত এবং বরকত অফুরন্তভাবে বর্ষিত হয়। এই রাতে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত আল্লাহর কাছে ইবাদত করে, তাঁর রহমত লাভ করা। এই রাতের বিশেষ ইবাদত হলো নফল নামাজ। চলুন, জানি লাইলাতুল কদরের নামাজের নিয়ত ও নিয়মাবলী কীভাবে আদায় করা হয়।
✅ লাইলাতুল কদরের নামাজের নিয়ত
প্রথমে, লাইলাতুল কদরের নামাজের জন্য নিয়ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নামাজের নিয়ত সঠিকভাবে না করলে, ইবাদত পূর্ণতা পায় না। লাইলাতুল কদরের নিয়ত করার সময় আমরা মনে মনে বা মুখে বলতে পারি:
“আমি দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করিতে চাই লাইলাতুল কদরের ফজিলত লাভের জন্য, আল্লাহর উদ্দেশ্যে।”
এটি একটি সাধারণ নিয়ত, যা আপনি প্রতিটি নামাজের আগে করতে পারেন। নিয়ত করার মাধ্যমে আমরা আমাদের ইবাদতের উদ্দেশ্য স্পষ্ট করি এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে একাগ্রচিত্তে নামাজ আদায় করতে পারি।
✅ লাইলাতুল কদর নামাজের নিয়ম ও সূরা পাঠ
লাইলাতুল কদরের নামাজ সাধারণত দুই রাকাত নফল নামাজ হয়ে থাকে। এটি বিশেষভাবে লাইলাতুল কদরের বরকত ও ফজিলত লাভের জন্য আদায় করা হয়। নামাজে সূরা কদর এবং সূরা ইখলাস পড়া খুবই উত্তম। চলুন, বিস্তারিত জানি লাইলাতুল কদরের নামাজের নিয়ম ও সূরা পাঠের সম্পর্কে:
লাইলাতুল কদরের নামাজ আদায় করার নিয়ম:
- প্রথম রাকাতে:
- ফাতিহা পড়ার পর, ‘সূরা কদর’ পড়ুন। এটি লাইলাতুল কদরের রাতে পড়ার জন্য অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
- সূরা কদর পড়ার পর, রুকু ও সেজদা সঠিকভাবে আদায় করুন।
- দ্বিতীয় রাকাতে:
- প্রথম রাকাতের মতোই ফাতিহা পড়ুন।
- তারপর ‘সূরা ইখলাস’ পড়ুন। সূরা ইখলাস পড়লে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নেকির পরিমাণ বাড়ে।
- দ্বিতীয় রাকাত শেষ হলে, শান্তভাবে বসে তাশাহুদ পড়ুন এবং সালাম ফিরান।
✅ দোয়া ও প্রার্থনা:
নামাজের শেষে, সেজদার পর এবং তাশাহুদে যখন বসবেন, তখন আল্লাহর কাছে নিজের ব্যক্তিগত দোয়া করুন। নিজেকে এবং অন্যদের জন্য দোয়া করতে ভুলবেন না।
দোয়া করার সময়:
দোয়া যখন করুন, তখন নিজস্ব ভাষায় কথা বলুন, আপনার হৃদয় খুলে আল্লাহর কাছে সবকিছু চাইুন। আল্লাহ তাআলা তাঁর রহমতের দরজা খুলে দেন এবং সকল দোয়া কবুল করেন।


লাইলাতুল কদর সূরা ও তাফসির
লাইলাতুল কদর হলো সেই রাত, যেখানে আল্লাহ তাআলা তাঁর অশেষ রহমত ও মাগফিরাত বিতরণ করেন, এবং এটি কুরআন নাযিল হওয়ার রাত হিসেবে পরিচিত। এই রাতের বিশেষ গুরুত্ব এবং মহিমা আল্লাহ নিজেই সুরা আল-কদর (৯৭তম সূরা)-তে বর্ণনা করেছেন। চলুন, এই সুরাটি ও তার তাফসির সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
✅ সুরা আল-কদর (৯৭তম সূরা):
আল-কদর সুরাটি ৯৭তম সুরা এবং এতে মাত্র পাঁচটি আয়াত রয়েছে। এই সূরা কুরআনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সূরা, যা লাইলাতুল কদরের রাতের গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত বর্ণনা করে।
“নিশ্চয়ই আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি লাইলাতুল কদরে।
আর আপনি কি জানেন, লাইলাতুল কদর কি?
লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।
এই রাতে ফেরেশতারা ও রুহ (জিবরাইল) নেমে আসেন, তাদের পবিত্রতা ও শান্তির সাথে।
এটি ভোর পর্যন্ত শান্তি ও নিরাপত্তার রাত।”
[সুরা আল-কদর, আয়াত ১-৫]
✅ সূরার তাফসির:
- নাযিল হওয়া কুরআন:
সুরা আল-কদরের প্রথম আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, “নিশ্চয়ই আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি লাইলাতুল কদরে।” এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, কুরআন এই রাতেই পৃথিবীতে নাযিল হয়েছে। কুরআনের প্রতিটি শব্দ আমাদের জন্য এক অমূল্য দান, এবং এই রাতের মর্যাদা আরও বাড়িয়ে দেয়। - লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব:
পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, “আর আপনি কি জানেন, লাইলাতুল কদর কি?” এটি একটি প্রশ্নের মাধ্যমে আমাদের মনে গভীর তাগিদ সৃষ্টি করে, যেন আমরা জানি এবং বুঝি এই রাতের কী বিশাল গুরুত্ব। রাসূল (সা.) বলেছেন, লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম—এটা কোনো সাধারণ রাত নয়, এটি এক অপূর্ব রাত, যেখানে একটি রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের সমান। - ফেরেশতাদের অবতরণ:
“এই রাতে ফেরেশতারা ও রুহ (জিবরাইল) নেমে আসেন, তাদের পবিত্রতা ও শান্তির সাথে।” এই আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে, লাইলাতুল কদরের রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং তারা শান্তির পরিবেশ নিয়ে আসে। এটি একটি বিশেষ মুহূর্ত যখন আসমানী রহমত আমাদের উপর বর্ষিত হয়। - শান্তি ও নিরাপত্তা:
সূরার শেষ আয়াতে বলা হয়েছে, “এটি ভোর পর্যন্ত শান্তি ও নিরাপত্তার রাত।” অর্থাৎ, এই রাতে সব ধরনের বিপদ ও সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং আল্লাহর রহমত ও শান্তি প্রতিটি মানুষের জন্য উপলব্ধ থাকে। এই রাতটি পুরো পৃথিবীকে শান্তিতে ভরিয়ে দেয়।
নারী ও শিশুদের করণীয়
লাইলাতুল কদরের রাতে, যেহেতু সবাই মসজিদে যেতে পারেন না, বিশেষ করে নারীদের জন্য ঘরেই ইবাদত করার পরামর্শ রয়েছে। নারীরা ঘরে বসে আল্লাহর ইবাদত করতে পারেন এবং তাদেরও সমান ফজিলত অর্জনের সুযোগ রয়েছে। ঘরেই তারা লাইলাতুল কদরের বরকত ও রহমত লাভ করতে পারেন, এবং নিজেদের আত্মাকে শুদ্ধ করতে পারেন।
✅ করণীয়:
- ঘরে নফল নামাজ পড়া
- নারীরা ঘরে বসে নফল নামাজ পড়তে পারেন। নফল নামাজে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও দয়া পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। দু’রাকাত করে নামাজ পড়লে, আল্লাহ তাআলা তাঁর রহমত ও মাগফিরাত দিয়ে তাদের অন্তর শুদ্ধ করেন।
- কুরআন তিলাওয়াত
- লাইলাতুল কদরের রাতে কুরআন তিলাওয়াত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীরা কুরআন তিলাওয়াত করে এই রাতের বিশেষ ফজিলত ও রহমত লাভ করতে পারেন। কুরআন পাঠের মাধ্যমে আত্মার শান্তি ও আল্লাহর নিকট আরও কাছে পৌঁছানো সম্ভব।
- ছোটদের কুরআনের গল্প বলা
- শিশুরা ভবিষ্যতে আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বড় হোক, সে জন্য কুরআনের গল্প বলা একটি চমৎকার উপায়। শিশুকে কুরআনের সহজ গল্প শুনিয়ে তাদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা গড়ে তোলা সম্ভব।
- একসাথে দোয়া করা
- পরিবারের সকল সদস্য মিলে একসাথে দোয়া করা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হতে পারে। একসাথে দোয়া করলে, আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল দোয়া কবুল করেন এবং আমাদের জীবনে শান্তি ও সুখ দেন।
এই রাতের একটি বড় সুবিধা হলো, আল্লাহ তাআলা নারীদের ঘরেই বিশেষ ইবাদত করার সুযোগ দিয়েছেন। নারীরা যখন আল্লাহর ইবাদত করেন, তখন তাদের জন্য আল্লাহর রহমত এবং মাগফিরাতের দ্বার খোলামেলা থাকে। তাই, ঘরে বসে ইবাদত, দোয়া ও কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে এই রাতে পূর্ণরূপে বরকত লাভ করা উচিত।
আমাদের অনুভূতি ও উপলব্ধি
লাইলাতুল কদর হলো সেই রাত, যখন আল্লাহ তাআলা আমাদের পাপ মাফ করার জন্য অপেক্ষা করছেন। এই রাতটি আমাদের গুনাহ মোচনের এক সুবর্ণ সুযোগ, যা আমাদের আত্মাকে বিশুদ্ধ করার এবং আল্লাহর কাছ থেকে তাঁর অশেষ রহমত গ্রহণ করার সময়। আমরা সবাই পাপী, আমরা সবাই ভুল করি, প্রতিদিনের ছোট বড় অনেক ভুল আমাদের জীবনকে ভারী করে তোলে। কিন্তু এই রাতে আল্লাহ আমাদের সেই ভুলগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিতে পারেন, আমাদের নব-জন্ম দিতে পারেন।
একবার চোখ বন্ধ করে ভাবুন—এই রাতের মধ্যে আল্লাহ নিজেই আমাদের কাছে আসছেন, তাঁর রহমত ছড়িয়ে দিচ্ছেন, আমাদের দোয়া গ্রহণ করছেন। তাঁর রহমতের দোয়ার দরজা এতটা প্রশস্ত যে, আমরা যদি আমাদের অন্তর খুলে আল্লাহর কাছে ফিরে যাই, তিনি আমাদের সব পাপ মাফ করবেন। এটা ভাবলে কি আপনার হৃদয়ে শান্তির অনুভূতি আসেনি?
এমন রাতের মধ্যে আমাদের অবশ্যই ইবাদত, দোয়া, ইস্তিগফার ও কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে। প্রতিটি দোয়া যেন এক অমূল্য রত্ন—যে রত্ন একদিন আমাদেরকে শান্তি ও পরিপূর্ণতা দেবে। লাইলাতুল কদরের রাত সত্যিই আমাদের জীবনের একটি আশ্চর্য মুহূর্ত, যখন আমরা আল্লাহর কাছ থেকে এক নতুন শুরু আশা করতে পারি।
আমরা যদি এই রাতটিকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি, তবে আমাদের জন্য সব কিছুই সম্ভব। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করবেন, আমাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করবেন, এবং আমাদের পরবর্তী জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করবেন।
কিছু সাধারণ প্রশ্ন (FAQs)
আমি যদি ঘুমিয়ে পড়ি, তাহলে কি আমি ফজিলত পাব না?
নিয়তের উপর আল্লাহর নজর। আপনি ইচ্ছা করলে, অল্প সময়ও ইবাদতে ব্যয় করে ফজিলত পেতে পারেন।
আমি সূরা কদর জানি না, কী করবো?
আপনি অন্য যে কোন ছোট সূরা পড়তে পারেন, এটি বাধ্যতামূলক নয়।
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত?
লাইলাতুল কদরের নামাজ সাধারণত দুই রাকাত নফল নামাজ হয়ে থাকে, যা প্রতিটি দুই রাকাত করে পড়া যায়। আপনি একাধিক রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে পারেন। নামাজের নিয়ত এবং সূরা কদর, সূরা ইখলাস পড়া উত্তম।
লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য কী?
লাইলাতুল কদর হলো হাজার মাসের চেয়েও উত্তম একটি রাত। এই রাতে ফেরেশতারা নেমে আসেন, আল্লাহ তাআলা বান্দাদের গুনাহ মাফ করেন এবং তাদের দোয়া কবুল করেন। এই রাতটি আল্লাহর মাগফিরাত, রহমত ও শান্তির রাত, যখন কোনো গুনাহ অবশিষ্ট থাকে না এবং আল্লাহ বান্দাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করেন।
লাইলাতুল কদর জোড় নাকি বিজোড় রাত?
রাসূল (সা.)-এর হাদিস অনুযায়ী, লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশ রাতের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকে। অর্থাৎ, ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ রমজান হতে পারে লাইলাতুল কদর, তবে এটি নিশ্চিত নয়। রমজানের শেষ দশ দিনের মধ্যে বিজোড় রাতগুলোতে ইবাদত করা উত্তম।
লাইলাতুল কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম কী?
উত্তর: লাইলাতুল কদরের নামাজ দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করা যায়। নামাজের নিয়ত করার সময় বলা হয়, “আমি দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে চাই লাইলাতুল কদরের ফজিলত লাভের জন্য, আল্লাহর উদ্দেশ্যে।”
নামাজের নিয়ম: প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহা ও সূরা কদর পড়ুন।
দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও সূরা ইখলাস পড়ুন।
নামাজ শেষ হলে দোয়া করুন এবং নিজের প্রয়োজনের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন।
এই রাতে আপনি যত বেশি নামাজ ও ইবাদত করবেন, তত বেশি বরকত লাভ করবেন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, আমরা লাইলাতুল কদর সম্পর্কে আলোচনা করে বুঝতে পারলাম যে,
লাইলাতুল কদর এমন এক রাত যা শুধু মুসলিম জীবনের অংশ নয়, বরং আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও ভালোবাসার এক বিশেষ উপলক্ষ। আমাদের উচিত এই রাতটিকে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগানো।
আসুন, আমরা সবাই মিলে এই রাতকে ইবাদতে পূর্ণ করি। নিজেকে সংশোধনের শপথ নেই। এই রাত আমাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে—শুধু একটু চেষ্টার দরকার।
আপনার জন্য করণীয় এখনই:
- নিজের দোয়ার তালিকা প্রস্তুত করুন
- পরিবারকে জানিয়ে দিন এই রাতের গুরুত্ব
- শেষ দশকে অন্তত একটি বিজোড় রাতে জেগে থাকুন