নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরহাজারী ইউনিয়নের ১২ বছর বয়সী মো. মুনতাছির আলম মাত্র ছয় মাসে কোরআনের হাফেজ হয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে পুরো ৩০ পারা কোরআন মুখস্থ করে সে পরিবার, এলাকাবাসী এবং শিক্ষকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। মুনতাছির দারুল ফালাহ মাদরাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র এবং উপজেলার বেপারী বাড়ির মো. শাহ আলম ও রোকসানা আক্তার দম্পতির ছেলে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে আমির হামজার কুরআন মাহফিলে ১০ সনাতনী হিন্দুর ইসলাম গ্রহণ!
মা-বাবার স্বপ্নপূরণ
জানা গেছে, মুনতাছিরের মা-বাবা অনেক আগেই ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন যে তাদের ছেলে কোরআনের হাফেজ হবে। মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলে হলে তাকে হাফেজ বানাবেন, এবং বাবারও ছিল একই মত। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে, তাঁরা ছেলে মুনতাছিরকে বাড়ির পাশে দারুল ফালাহ মাদরাসার হিফজ বিভাগে ভর্তি করেন। মুনতাছিরও একনিষ্ঠ পরিশ্রমের মাধ্যমে মাত্র ছয় মাসে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করে ফেলে। এতে পরিবারে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে, এবং সবার মাঝে ধর্মীয় আচার-আচরণ ও নামাজ-কোরআনের চর্চা বৃদ্ধি পায়।
শিক্ষক ও স্থানীয়দের প্রশংসা
মাদরাসার শিক্ষক ও স্থানীয়রা মুনতাছিরের এ সাফল্যে গর্বিত। তারা জানান, মা-বাবার ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মুনতাছির তার কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে অল্প সময়ে কোরআন মুখস্থ করেছে। শিক্ষকদের মতে, একজন মুসলিমের জীবনে কোরআনের হাফেজ হওয়া একটি বড় অর্জন, যা মুনতাছির পরিবার এবং সমাজের জন্য একটি সম্মানের বিষয়।
আরও পড়ুন: জান্নাতে যেতে চান? পালন করুন ৪টি গুরুত্বপূর্ণ আমল
মুনতাছিরের নিজের অনুভূতি
মুনতাছির জানায়, “মা-বাবা ও মাদরাসার ওস্তাদদের সহযোগিতায় আমি মাত্র ছয় মাসের মধ্যে হিফজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। আমি সবার কাছে দোয়া চাই, যেন ভবিষ্যতে একজন দেশবরেণ্য হাফেজ ও আলেম হতে পারি।”
এলাকাবাসীর প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় বাসিন্দা আবু নাছের বলেন, মাদরাসার শিক্ষকদের পাশাপাশি এলাকাবাসীও মুনতাছিরের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন। তাদের প্রত্যাশা, মুনতাছির ভবিষ্যতে ইসলাম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং তার সাফল্য সমাজের অন্যান্য শিশুদের দ্বিনি শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করবে।
আরও পড়ুন: টয়লেটযুক্ত গোসলখানায় অযু করার সময় দোয়া পড়া যাবে কি?
পরিবারের আশা
মুনতাছিরের বাবা শাহ আলম জানান, “আমার ছেলে জন্ম নেওয়ার আগেই তার মা ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন যে তাকে হাফেজ বানাবেন। আল্লাহর রহমতে আমাদের সেই আশা পূর্ণ হয়েছে। আমরা সবার কাছে দোয়া চাই, আমার ছেলে যেন একজন দেশবরেণ্য হাফেজ ও আলেম হয়ে ওঠে।”
মাদরাসার ভূমিকা
দারুল ফালাহ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবুবক্কর ছিদ্দিক জানান, ২০২৪ সালের শুরুতে মুনতাছির মাদরাসায় হিফজ বিভাগে ভর্তি হয় এবং মাত্র ছয় মাসের মধ্যে কোরআন হিফজ সম্পন্ন করে। তিনি আরও বলেন, মাদরাসাটি ২০১৮ সালে হিফজ বিভাগ চালু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৪ জন ছাত্র হিফজ সম্পন্ন করেছে এবং বর্তমানে ৬৪ জন ছাত্র সেখানে অধ্যয়নরত। মুনতাছির ভবিষ্যতে দেশবরেণ্য হাফেজ ও আলেম হতে চায়, এবং তার জন্য বাবা-মা ও মাদরাসার পক্ষ থেকে দোয়া চাওয়া হয়েছে।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
1 thought on “১২ বছর বয়সে ৬ মাসে কোরআনের হাফেজ হলেন মুনতাছির”