ফুটবল মাঠে সাধারণত উত্তেজনা, আনন্দ ও রেকর্ড গঠনের মুহূর্তগুলো দেখা যায়, কিন্তু সম্প্রতি গিনির এনজেরেকোরে ফুটবল খেলা নিয়ে ঘটে যাওয়া এক হতাশাজনক ঘটনা ফুটবল প্রেমী দর্শকদের চিরকাল মনে থাকবে। রেফারির একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জন ফুটবল সমর্থক প্রাণ হারিয়েছেন।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
ঘটনাটি ঘটে গিনির এনজেরেকোর ফুটবল স্টেডিয়ামে, যেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় রেফারির একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক হওয়ার পর। ঘটনাটি এতটাই ভয়াবহ রূপ নেয় যে, সংঘর্ষের পরে তা স্টেডিয়ামের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত জনতা থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়, এবং পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বনাম ফিলিস্তিন : খেই হারিয়ে ৫ গোল হজম বাংলাদেশের
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা এখনও নির্দিষ্ট করা সম্ভব হয়নি, তবে স্থানীয় হাসপাতালে মর্গে লাশে পরিপূর্ণ। এক স্থানীয় চিকিৎসক জানান, “হাসপাতালের যতদূর চোখ যায়, শুধু লাশের সারি। অন্যরা হলওয়েতে মেঝেতে পড়ে আছেন। মর্গে মৃতদেহ ঠাসা।” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, স্টেডিয়ামের বাইরে বিশৃঙ্খলার দৃশ্য, অসংখ্য মৃতদেহ মাটিতে পড়ে থাকতে।
আরও পড়ুন: আর্জেন্টিনার নতুন জার্সির বিজ্ঞাপনে জায়গা পেল বাংলাদেশ
এই ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন মাঠে উপস্থিত কয়েকজন সমর্থক রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে তর্ক শুরু করেন। এরপর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা হয়। উত্তেজিত জনতা পুলিশের স্টেশন লক্ষ্য করে হামলা চালায় এবং সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
উল্লেখযোগ্য যে, এই ফুটবল ম্যাচটি গিনির জুন্টা নেতা মামাদি দৌমবৌয়াকে সম্মানিত করার উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হয়েছিল। ২০২১ সালে গিনিতে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন মামাদি। নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন এবং পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ক্ষমতা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এখন তিনি আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, যা দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরও অবনতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল প্রতিপক্ষ হওয়ায় খেলা বয়কট করলেন গ্র্যান্ডমাস্টার রাজীব
এই হত্যাকাণ্ড এবং সংঘর্ষ গিনির ফুটবল ইতিহাসের এক দুঃখজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে, যা বিশ্বব্যাপী ফুটবল এবং সামগ্রিকভাবে সমাজের নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুত্বকে পুনর্ব্যক্ত করেছে।