গুগল কি সব জানে? হয়তো! কিন্তু সব জানার দরকার কি?
আমরা একেকজন মানুষ গুগলকে অনেকটা “সবজান্তা দাদা” বানিয়ে ফেলেছি। মাথায় কিছু এলে, কারো সাথে না শেয়ার করে সরাসরি গুগলে ঢুকে পড়ি। আরে ভাই, গুগল তো তোমার বন্ধু, কিন্তু সব প্রশ্ন বন্ধুর সামনে করা যায় না, তাই না?
এই লেখায় আমরা বলব, গুগলে কিছু বিষয় কেন সার্চ করাই উচিত না। এটা শুধু সময়ের অপচয় না—মাঝে মাঝে রীতিমতো বিপদ ডেকে আনে! তাই চলো, দেখে নিই কোন কোন প্রশ্ন গুগলে না করলেই ভালো।
আরো পড়ুন: এক্স মানে কি গুগল? না জানলে জেনে নিন এর বিভিন্ন অর্থ ও ব্যবহার
১. যৌনতা নিয়ে সার্চ? নাহ, ভুলেও না!
একবার তুমি যদি গুগলে যৌনতা বা related কিছু সার্চ করো, তখন গুগল ভাববে, “ওই! এই ইউজার তো এই টপিকে খুবই আগ্রহী!”
ব্যস, এরপর থেকে তোমার মোবাইল স্ক্রিনে আসতে থাকবে সেই একই রকম ভিডিও, লিংক, অ্যাড—যা তুমি চাওনি।
সামনে কেউ বসে আছে, তুমি গুগল খুললে হঠাৎ একটা অদ্ভুত থাম্বনেইল! চুপচাপ ফাঁস হয়ে যাবে তোমার সার্চ হিস্ট্রি।
ভুলে গেলে চলবে না, গুগল জানে তুমি কি খুঁজো, কবে খুঁজো, কতবার খুঁজো।

২. ত্বকের সমস্যা? গুগল নয়, ডার্মাটোলজিস্টই ঠিক!
চেহারায় একটু র্যাশ উঠলেই গুগলে লিখে ফেলো “red spots on face remedy”… আরে দোস্ত, গুগল কি জানে তুমি কোন স্কিন টাইপের মানুষ?
তারপর গাদা গাদা ভিডিও, “টমেটো দিয়ে স্ক্রাব করো”, “বেকিং সোডা লাগাও”—সব দেখাবে। কিন্তু এসব ট্রাই করলে স্কিনের বারোটা তো বাজবে ঠিকই!
রিল বা টিউটোরিয়াল দেখে প্রাকৃতিক চিকিৎসা সবাইকে মানায় না।
আরো পড়ুন: ২০২৫ সালে সফলতা অর্জনের যে ৭টি অমূল্য মন্ত্র জানলে জীবন বদলে যেতে পারে
আরও পড়ুন
৩. পণ্য কেনার আগে গুগলে ঘাঁটাঘাঁটি? অতিরিক্ত হলে কনফিউশনই বাড়ে!
ধরো তুমি একটা মোবাইল কিনতে চাও। গুগলে লিখলে “best phone under 20k”—ব্যস, এত রিভিউ, এত ভিডিও, এত লিস্ট… শেষে কি হবে জানো?
তুমি আর বুঝতেই পারবে না কোনটা ভালো আর কোনটা শুধু স্পনসর করা।
সব ব্র্যান্ড নিজেদের সেরা দেখাতে চায়। আর ইউটিউবাররা? তারা তো স্পনসরের দাস হয়ে গেছে!
তোমার কেনার ইচ্ছা চলে যাবে—ডিপ্রেশনেই পড়ে যাবে একসময়
৪. শরীর খারাপ? উপসর্গ গুগলে সার্চ মানেই ভয় ধরানো ভুল!
হালকা মাথাব্যথা, তুমি লিখলে “constant headache meaning”—গুগল বলবে: ব্রেইন টিউমার!
পেটে ব্যথা মানে অ্যাপেন্ডিসাইটিস! মানে সরাসরি কবর পর্যন্ত চিন্তা করা লাগবে।
এই এক গুগল রোগ: সাইবারকন্ড্রিয়া (Cyberchondria)
একটা মাইনর অসুখ নিয়েও এমন ভয় পাবে যে শরীরেও বাড়তি চাপ পড়বে।
প্রথমে চিকিৎসক, তারপর গুগল—এই হওয়া উচিত অর্ডার।
আরো পড়ুন: প্রতিদিন কত টাকা আয় করলে একজন মানুষ সুখী হতে পারে?


৫. গর্ভপাত পদ্ধতি বা শিশু পর্ন? করলে সরাসরি আইনি ফাঁদে পড়বা!
এটা কোনো মজা না, একদম সিরিয়াস বিষয়।
গুগলে যদি তুমি “how to abort at home” বা এরকম কিছু সার্চ করো, তাহলে গুগল সেটাকে ট্র্যাক করে রাখতে পারে। অনেকে হয়তো জানেই না, কিছু সার্চ সরাসরি সাইবার ক্রাইম ইউনিট-এ যায়!
আর যদি ভুল করে ‘child pornography’ বা related কিছু টাইপ করো—তাহলে সরাসরি জেল!
এইসব টপিক legal, ethical, moral—সব দিক থেকেই red zone।
৬. বেশি সার্চ করলে গুগল তোমার আগ্রহ ‘প্রোফাইল’ বানিয়ে রাখে!
তুমি কি জানো?
তোমার সার্চ হিস্ট্রি থেকেই গুগল বুঝে নেয় তুমি কিসে আগ্রহী, কিসে ভয় পাও, তুমি কোন বয়সী, কোথায় থাকো!
তারপর শুরু হয় টার্গেটেড অ্যাড, ইউটিউব সাজেশন, অপ্রয়োজনীয় সাজেস্টেড কনটেন্ট।
তাই সার্চ করার সময় একটু ভাবো—তোমার সাইটে কি বসছে, সেটা শুধু তুমি না, গুগলও জানে!
✅ তাহলে কী করা উচিত?
✔️ ব্যক্তিগত, সংবেদনশীল, বা আইনি ঝুঁকিপূর্ণ টপিক গুগলে না খুঁজে, প্রফেশনাল কাউকে জিজ্ঞাসা করো।
✔️ “Incognito Mode” ব্যবহার করলেও সব কিছু গোপন থাকে না।
✔️ মনে রাখো—যেটা বলার মতো না, সেটা গুগলে লেখারও মতো না!
শেষ কথা
গুগল আমাদের অনেক কিছু দেয়, মানছি।
কিন্তু কিছু প্রশ্ন থাকে, যা নিজের মগজ দিয়েই ভাবতে হয়, গুগলের সার্চ বক্স দিয়ে না।
তাই গুগলকে সব কিছু জিজ্ঞাসা করার আগে একবার ভাবো—“এই প্রশ্নটা কি আমার ভবিষ্যৎ বদলে দেবে?” যদি উত্তর হয় “হ্যাঁ, খারাপভাবে” তাহলে—ব্যাকস্পেস চাপো, ভাই!
1 thought on “গুগলে যেসব জিনিস খুঁজলেই বিপদ!—৯৯% মানুষেরই অজানা”