আম খাওয়ার পর আমরা সাধারণত আঁটি ফেলে দিই। কিন্তু জানেন কি, এই আঁটি ত্বক, চুল এবং স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী হতে পারে? আমের আঁটিতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ফলেট এবং ম্যাঞ্জিফেরিন, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের খুব ভালো উৎস। আসুন জেনে নিই কীভাবে আমের আঁটি ব্যবহার করা যায় এবং এর উপকারিতা ও পুষ্টিগুন সম্পর্কে।
আরও পড়ুন : অমলেট ও মামলেট এর মধ্যে পার্থক্য কি? অনেকেই জানেন না
আমের আঁটির উপকারিতা ও ঔষধি গুনাগুন
আমরা সবাই আম খেতে ভালোবাসি, তবে বেশিরভাগ সময় আমের আঁটি ফেলে দেই। কিন্তু এই আঁটি অনেক ঔষধি গুনাগুনে ভরপুর যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমের আঁটি বিভিন্ন রূপে ব্যবহার করা যায় যেমন বাটার, তেল বা পাউডার। আসুন জেনে নিই আমের আঁটির কিছু অসাধারণ উপকারিতা ও ঔষধি গুনাগুন।
আমের আঁটির পুষ্টিগুণ
আমের আঁটি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, এবং ফ্যাট থাকে। এছাড়া এতে রয়েছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইবার, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আমের আঁটির তেলে ওলেইক অ্যাসিড, স্টেয়ারিক অ্যাসিড, এবং বিভিন্ন ফাইটোস্টেরল থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
আরও পড়ুন: এক্স মানে কি গুগল? না জানলে জেনে নিনmvv’lfho;hfolk
আমের আঁটির উপকারিতা
- হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক: আমের আঁটির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি কোলেস্টেরল কমাতে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সহায়ক।
- হজমে সহায়ক: আমের আঁটির ফাইবার এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। এটি ডায়রিয়া, ডিসেন্ট্রি, এবং বদহজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: আমের আঁটির নির্যাস রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায়।
- ওজন কমাতে সহায়ক: আমের আঁটির ফাইবার ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি মেটাবলিজম বাড়ায় এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমাতে সাহায্য করে।
- ত্বকের যত্নে: আমের আঁটির ভেতরের শাঁস থেকে ম্যাংগো বাটার তৈরি করা যায়, যা শিয়া বাটারের মতোই ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা যায়। এটি ত্বককে নরম ও কোমল করে এবং সূর্যের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়া, আমের আঁটির তেল ত্বকের ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক লিপিড ব্যারিয়ারকে শক্তিশালী করে।
- চুলের যত্নে: আমের আঁটির ভেতরের শাঁস রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগানো যায়। এটি চুলকে ঝলমলে ও মজবুত করে। এছাড়া, আমের আঁটির তেল চুলের গোড়া মজবুত করে এবং খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
- দাঁতের যত্নে: আমের আঁটির গুঁড়া টুথপেস্টের সঙ্গে মিশিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত উজ্জ্বল হয় এবং মাড়ি সুস্থ থাকে।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় 2024
আমের আঁটির ব্যবহার
- পাউডার: এটি শুকিয়ে পাউডার তৈরি করা যায়। এই পাউডার স্মুদি, জুস বা পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
- তেল: আমের আঁটির তেল চুল ও ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা যায়। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং চুলকে মজবুত করে।
- মুখওয়াস: আমের আঁটির পাউডার মুখওয়াস হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটি হজমে সহায়ক এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
উপসংহার:
আমের আঁটি ফেলে না দিয়ে ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্যের যত্নে ব্যবহার করুন। আমের আঁটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। প্রাকৃতিক এই উপাদানটি আপনার দৈনন্দিন রূপচর্চা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে ও অত্যন্ত কার্যকর। তাই, আজই আমের আঁটি ব্যবহার শুরু করুন এবং এর উপকারিতা উপভোগ করুন।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
1 thought on “আমের আঁটি দিয়ে কী করবেন? জেনে নিন উপকারিতা, ব্যবহার ও পুষ্টিগুন”