বিশ্বব্যাপী খাদ্যদ্রব্যের বাজার দর মূল্যস্ফীতি এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, অক্টোবর মাসে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এফএওর ফুড প্রাইস ইনডেক্স (এফএফপিআই) অনুযায়ী, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যসূচক ১২৭.৪ পয়েন্টে পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ।
বাজার দর: খাদ্যদ্রব্যের দাম ১৮ মাসে সর্বোচ্চ
মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে এফএও বৈরি আবহাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান জ্বালানির মূল্যকে উল্লেখ করেছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং অনিয়মিত আবহাওয়া যেমন তাপদাহ ও বৃষ্টিপাতের অভাব খাদ্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবহন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা সরাসরি খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী।
আরও পড়ুন: ডিমের দাম ডজনে কমেছে ২৫ টাকা- ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি
বিশেষত, অক্টোবর মাসে ভোজ্যতেলের দাম ৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রত্যাশার তুলনায় কম পাম তেলের উৎপাদন, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের উৎপাদন কম হওয়া এসব তেলের দামের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
এর পাশাপাশি খাদ্যশস্যের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ, যার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈরি আবহাওয়া দায়ী বলে মনে করছে এফএও। গম ও ভুট্টার মতো প্রধান খাদ্যশস্যের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বৈশ্বিক সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে এবং এর প্রভাব পড়েছে বিশ্ববাজারে।
বিশ্ববাজার
বিশ্ববাজারে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে দুগ্ধজাত পণ্যের, যার মূল্য গত বছরের তুলনায় ২১ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক চাহিদার বৃদ্ধি ও সরবরাহ ঘাটতির কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত, গম ও ভুট্টার রপ্তানি মূল্য বাড়ায় বিশ্বের প্রধান রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়ায় গমের দাম বেড়েছে, যেখানে কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের রাজনৈতিক উত্তেজনা রপ্তানি পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
আরও পড়ুন
আরও পড়ুন: সরকারি ছুটির তালিকা ২০২৫ অনুমোদন: যা গত বছরের চেয়ে বেড়েছে ৪ দিন
চিনির দামও অক্টোবর মাসে ২ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪-২৫ মৌসুমে ব্রাজিলে দীর্ঘস্থায়ী খরার কারণে আখের উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যার ফলে চিনির মূল্য বেড়ে চলেছে।
তবে, বিশ্ববাজারে মাংসের দামে সামান্য পরিবর্তন দেখা গেছে। অক্টোবর মাসে মুরগির মাংসের দাম কিছুটা কমলেও ভেড়ার মাংসের দাম স্থিতিশীল ছিল। তবে, গরুর মাংসের দাম কিছুটা বেড়েছে।
এফএওর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে বৈরি আবহাওয়া এবং জ্বালানির ক্রমবর্ধমান মূল্য এই মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং জ্বালানির উচ্চ মূল্যের প্রভাব খাদ্যদ্রব্যের দামে দীর্ঘমেয়াদে আরও প্রভাব ফেলতে পারে।
2 thoughts on “বাজার দর: বিশ্ববাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম ১৮ মাসে সর্বোচ্চ”