কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল: আপনার যা জানা দরকার

বঙ্গবন্ধু টানেল

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, যা সাধারণত বঙ্গবন্ধু টানেল নামে পরিচিত, দেশের প্রথম সড়ক সুড়ঙ্গ। এটি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের একটি যুগান্তকারী মাইলফলক। চলুন জেনে নেই এই টানেলের নির্মাণ, বৈশিষ্ট্য এবং এর প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত।

আরও পড়ুন : নীল নদ বনাম আমাজন নদী: কোনটি দীর্ঘতম? দীর্ঘদিন ধরে চলছে বিতর্ক

টানেলের নির্মাণ ও অর্থায়ন

বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৭ সালে এবং এটি বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০,৬৯৮ কোটি টাকা, যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৪,৬১৯ কোটি টাকা এবং চায়না এক্সিম ব্যাংক ৬,০০০ কোটি টাকারও বেশি অর্থায়ন করেছে।

টানেলের বৈশিষ্ট্য

  • দৈর্ঘ্য: মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার, এবং সংযোগ সড়কসহ মোট দৈর্ঘ্য ৯.৩৯ কিলোমিটার।
  • লেন সংখ্যা: টানেলটি দুটি চার লেনের টিউব নিয়ে গঠিত, প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২.৪৫ কিলোমিটার।
  • গভীরতা: টানেলটি কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরতায় অবস্থিত।
  • গতি: টানেলের মধ্যে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিমি/ঘন্টা।
  • সংযোগ সড়ক: টানেলের পশ্চিম এবং পূর্ব উভয় প্রান্তে ৫.৩৫ কিমি সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার রয়েছে।

আরও পড়ুন : ৭ লক্ষণ- যা বলতে পারে আপনার স্মার্টফোন হ্যাক হচ্ছে কি না

টানেলের প্রভাব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

বঙ্গবন্ধু টানেলটি চট্টগ্রাম এবং আনোয়ারাকে সংযুক্ত করে, যা চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে। এটি প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়ের সাথে সংযোগ স্থাপন করবে এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। টানেলটি চালু হলে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে যানবাহন এপাড়-ওপাড় করতে সময় লাগবে মাত্র ৫ থেকে ৬ মিনিট, যা সময় এবং খরচ উভয়ই সাশ্রয় করবে।

উপসংহার

বঙ্গবন্ধু টানেল বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের একটি মাইলফলক। এটি দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত এবং কার্যকর করবে। চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই টানেলের ভূমিকা অপরিসীম। আশা করা যায়, এই টানেলটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

 Juger Alo Google News  যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন