একীভূত হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্তু কেন?

বিদ্যালয়

বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে এক নতুন পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০-এর কম, সেসব বিদ্যালয়কে পাশের বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং সম্পদের সঠিক ব্যবহার।

কেন একীভূতকরণ?

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একীভূতকরণের প্রধান কারণ হিসেবে অপ্রতুলতা এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের প্রয়াস উল্লেখ করা হয়েছে। অনেক বিদ্যালয়ে দেখা গেছে যে, শিক্ষার্থীর সংখ্যা এতই কম যে সেখানে শিক্ষার মান ধরে রাখা এবং শিক্ষকদের সঠিক ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। একীভূতকরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বেশি সুবিধা পাবে এবং শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন : স্বল্প খরচে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পিজিডি কোর্সে ভর্তির সুযোগ

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, গত ১০ বছরের চিত্র বিবেচনা করে এমন প্রায় ৩০০টি স্কুল চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলোতে প্রতি বছর শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫০-এর কম ছিল

প্রাথমিক বিদ্যালয় একীভূতকরণের প্রক্রিয়া

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানিয়েছেন যে, প্রাথমিক বিদ্যালয় একীভূতকরণের প্রক্রিয়াটি সব বিদ্যালয়ের জন্য একই রকম হবে না। বিগত ১০ বছরের চিত্র দেখে এবং স্থানীয় বাস্তবতা বিবেচনা করে যেসব বিদ্যালয়ে ৫০ জনের কম শিক্ষার্থী আছে, সেগুলোকে পাশের বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করা হবে।

আরও পড়ুন : ৫ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়তা পাবে স্কুলশিক্ষার্থীরা, আবেদন যেভাবে

উদাহরণ হিসেবে, রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৪২ জন, সেটি একীভূত করা হবে না কারণ শিক্ষার্থীরা প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার দূর থেকে আসে।

শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্য

একীভূতকরণের মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি, নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়নের লক্ষ্যেও কাজ করা হচ্ছে। তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পরীক্ষা না থাকা এবং ধারাবাহিক মূল্যায়নের প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে।

এছাড়াও, নতুন শিক্ষাক্রমে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পরীক্ষা থাকবে না এবং ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে। এটি শিক্ষার্থীদের শিখনকালীন মূল্যায়নের উপর জোর দেয়ার একটি পদক্ষেপ

শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা

এছাড়াও, আগামী জুনের মধ্যে প্রাথমিকে ১৩ হাজার ৭৮১ সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে, যা শিক্ষক-ছাত্রের অনুপাত ১:৩০ করার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে। গত বছর নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৩৭ হাজার ৫৭৪ জন। এক কথায় দেড় বছরের ব্যবধানে ৫১ হাজার ৩৫৫ শিক্ষক নিয়োগ পাচ্ছেন প্রাথমিকে। ২০৩০ সালের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক-ছাত্রের অনুপাত ১:৩০ করার পরিকল্পনা ছিল। তবে চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যেই এটি সম্ভব হচ্ছে।’

সব মিলিয়ে, এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শিক্ষার মান উন্নয়নে এক বড় ধাপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জন্য আরও ভালো শিক্ষার পরিবেশ এবং শিক্ষকদের জন্য আরও উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার প্রত্যাশায় এগিয়ে চলেছে দেশের শিক্ষা খাত।

Juger Alo Google News   যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন