চ্যাটজিপিটি এখন আমাদের ভার্চুয়াল বন্ধু হয়ে গেছে।
পড়ালেখা, কনটেন্ট লেখা, এমনকি প্রপোজ করার লাইন—সবই সে ঝটপট সাজিয়ে দেয়!
মনে হয় যেন সব জানে, সব বোঝে।
কিন্তু ভাই/বোন, একটা জিনিস ভুলে গেলে চলবে না—AI বন্ধু হলেও, সে তোমার ডায়েরি না।
যার কাছে নিজের জন্মতারিখ, ব্যাংকের ডিটেইলস বা রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস সব বলে ফেলো, তার নাম BFF না—তার নাম overshare!
আরো পড়ুন: বসে না থেকে ত্রই apps দিয়ে 300 টাকা ইনকাম করুন .কাজ করা খুব সোজা
তুমি যদি ভাবো, “আরে এটা তো চ্যাটজিপিটি, মানুষের মতো না”—তা ঠিক,
কিন্তু AI–ও ভুলে না।
আর এই ভুলে না যাওয়াটাই হতে পারে তোমার সবচেয়ে বড় বিপদ।
➡️ স্মার্টলি ইউজ করো, সিম্প হয়ে যেও না।
নিচে দেখে নাও, এমন ৫টা তথ্য যা কখনোই চ্যাটজিপিটির সঙ্গে শেয়ার করা উচিত না—
না হলে ফেঁসে যাওয়ার চান্স ১০০%!
যে ৫টি তথ্য শেয়ার করেছেন তো ফেঁসেছেন:

1️⃣ ব্যক্তিগত পরিচয়ের তথ্য = সোজা ফেঁসে যাওয়ার রাস্তা
চ্যাটজিপিটির সাথে গল্প করতে করতে যদি তুমি নিজের নাম, জন্মতারিখ, ফোন নম্বর, ঠিকানা কিংবা NID নাম্বার দিয়ে ফেলো, তবে শুনে রাখো—তুমি একেবারে ফাঁদে পা দিয়েছো।
এই ইনফোগুলা মোটেও ইনোসেন্ট না।
এগুলা হলো তোমার ডিজিটাল লাইফের গেটওয়ে।
আরও পড়ুন
সাইবার ক্রিমিনালরা এইসব info দিয়ে করতে পারে:
→ ফেক অ্যাকাউন্ট
→ তোমার নামে লোন
→ ফিশিং ইমেইল
→ পরিচয় চুরি (Identity theft)
ভাবো তো—সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলে এসএমএস এসেছে:
“আপনার নামে ১ লাখ টাকার লোন পাশ হয়েছে।”
আর তুমি তো কোথাও লোনই চাওনি!
এটা এখন Sci-Fi না, এটা বাস্তব।
যেকোনো এআই সিস্টেমে Personal Identifiable Information (PII) শেয়ার করলে, সেই তথ্য হয়তো training ডেটায় থেকে যায়,
হয়তো accidental leakage হয়, বা future breach–এ পড়ে।
আরও পড়ুন: মোবাইল দিয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা ইনকাম: বিকাশ, নগদ বা রকেটে পেমেন্ট
তাই রুলটা হলো:
➡️ নাম, জন্মতারিখ, ঠিকানা, ফোন নম্বর, NID—এসব চ্যাটজিপিটিতে না বলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
বিশ্বাস করো, ওর এসব জানার দরকার নেই।
✔️ মনে রাখো:
“AI স্মার্ট, কিন্তু হ্যাকাররা আরও স্মার্ট। তাই নিজের তথ্যের বডিগার্ড হও—না হলে ফেঁসে যাবে তুমিই।”
2️⃣ আর্থিক ও ব্যাংকিং তথ্য: এটা শেয়ার না, গোপন রাখার জিনিস!
“ভাই, আমার OTP আসছে না?”
এই লাইনটা শোনার পরেই বোঝা যায় — কেউ না কেউ তার টাকা গছিয়ে ফেলছে!
ভাবো তো, তুমি AI chatbot এর সাথে চ্যাট করতেছো —
সে সুন্দর করে জিজ্ঞেস করলো:
“আপনার কার্ড নাম্বার ও PIN দিন, আমরা আপনার ট্রানজেকশন দ্রুত প্রসেস করবো!”
তুমি ভাবলা, “আরে, chatbot তো! কিছু হইবো না।”
আর এইখানেই তুমি নিজের ব্যাংক একাউন্টের দরজা হাট করে খুলে দিলে!
✔️ বাস্তবতা?
এই AI হইতে পারে স্ক্যামারদের প্রোগ্রাম করা ফাঁদ।
তুমি তাকে দিচ্ছো কার্ড নাম্বার, PIN, OTP — আর সে নিচ্ছে তোমার একাউন্টের সব টাকা, bonus সহ।
3️⃣ পাসওয়ার্ড = তোমার ডিজিটাল লাইফের তালা, সেটা খোলার চাবি কারো হাতে দিও না!
একটা পাসওয়ার্ড দিয়ে ইমেইল, ফেসবুক, Netflix, Instagram, এমনকি তোমার পুরনো Blogspot অ্যাকাউন্টও চলতেছে।
ভাবো তো, ওই একটাই পাসওয়ার্ড যদি কোথাও লিক হয়?
আর সেটা যদি AI বা হ্যাকারদের ক্যাশে পড়ে যায়?
Game. Over. Bro.
তুমি Netflix খুলতে চাও — দেখা গেলো “Stranger Things” এর জায়গায় “Stranger logged in from Russia.”
ইমেইল খুলতে চাও — দেখি কেউ নাম পালটে ‘[email protected]’ বানায়ে ফেলেছে।
Facebook খুলতে চাও — এখন তুমি সেলফি দিচ্ছো না, scam link শেয়ার করতেছো unknowingly।
➡️ Bottom Line:
পাসওয়ার্ড মানে শুধু একটা কোড না,
এটা তোমার অনলাইন আত্মার দরজা।
সেটা যদি ভুল কারো হাতে যায়, তাহলে শুধু প্রোফাইল না — পুরা identity নিয়ে খেলবে ওরা।
তাই, password দাও strong, আর AI-কে বলো —
“Sorry bro, login info is off limits.”


4️⃣ ব্যক্তিগত গ্যাঞ্জাম শেয়ার করা = নিজের লাইফ Netflix বানানো
আমরা সবাই কম-বেশি একটু drama পছন্দ করি।
কিন্তু ব্যাপারটা যখন নিজের জীবনের গ্যাঞ্জামে গিয়ে ঠেকে—তখন সেই drama যদি AI এর কাছে শেয়ার করো, তখনই শুরু হয় মূল ফাঁসাফাঁসি।
রিলেশনশিপে ব্রেকআপ হইছে?
মা-বাবার সাথে দারুণ একটা ঝগড়া হয়েছে?
অফিসের বসকে নিয়ে মন খুলে গাল দেওয়ার ইচ্ছা?
সবকিছু চলে যায় AI চ্যাটবটের ইনবক্সে।
কিন্তু ভাই/আপু, একটা কথা বলি—
AI তো তোমার বন্ধুর মত কান পেতে শুনবে না,
শুধু ট্রেইনিং ডেটার কাঁচা মাল হিসেবে রেখে দেবে।
ও কাঁদবে না, বুঝবে না, সান্ত্বনাও দিবে না—
শুধু বলে দিবে:
➡️ “Thank you for sharing! Anything else I can help with?”
5️⃣ গোপন বিজনেস আইডিয়া শেয়ার = ফ্রি-তে আইডিয়া ছড়ানো
“আমার একটা স্টার্টআপ আইডিয়া আছে…”
এই কথা যতক্ষণ না নিজের মাথায় থাকে, ততক্ষণই সেটার দাম আছে।
কিন্তু তুমি যেই AI-এর ইনবক্সে সেটা লিখলা,
ওমনি AI হেসে কইলো, “I’ll remember that.”
মানে?
তুমি ভাবছো এটা একান্ত গোপন আলাপ।
কিন্তু বাস্তবে সেটা ট্রেনিং ডেটার জঞ্জালে ঢুকে গেলো।
কে, কবে, কোথায় সেটা access করে নেয় — তুমি ঠাহরও করতে পারবা না।
আর তখন হুট করে দেখবা — তোমার ইউনিক আইডিয়া অন্য কেউ বাজারে নামাইছে।
AI তো কসম করে বলে নাই, “ভাই, এইটা কাউকে বলবো না।”
তাই তোমার ব্যবসার প্যাঁচ, টার্গেট মার্কেট, ব্র্যান্ড নেম, কাস্টমার সলিউশন—এসব কিছু
নিজের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি হিসেবেই নিজের কাছে রাখো।
➡️ আইডিয়া শেয়ার করো তখনই, যখন NDA তে সই হয়।
➡️ চ্যাটবক্সে না, কনফারেন্স রুমে।
✔️ মনে রাখো:
বুদ্ধি দিছো AI-কে, আর প্রোডাক্ট লঞ্চ করছে অন্য কেউ?
That’s not inspiration, bro. That’s intellectual robbery.
উপসংহার: AI হেল্প করে, কিন্তু ব্রেন ইউজ করাও জরুরি!
হ্যাঁ, ChatGPT বা AI তোমার কাজের জগতে বিশাল একটা সাপোর্ট সিস্টেম।
আইডিয়া শান দাও, কনটেন্ট লিখো, কোড বুঝো—সবই করো।
কিন্তু ভুলে যেও না, AI হইলো টুল, তোমার best friend না।
তোমার প্রাইভেট তথ্য, ব্যাংকিং ডিটেইলস, গোপন আইডিয়া, পার্সোনাল ইমোশন—
এইগুলা শেয়ার করলেই সেটা সিকিউর না থাকে, future-এ বিপদের মুখে পড়তে পারো।
→ AI-কে ব্যবহার করো, কিন্তু নিজের প্রাইভেসি আগে।
→ ChatGPT আছে পাশে, কিন্তু মস্তিষ্কটাই তোমার আসল সেফ গার্ড।
→ মনে রাখো:
ভালো বন্ধু সে-ই, যাকে তুমি সব বলতে পারো —
কিন্তু AI সেই বন্ধু না।
তোমার নিরাপত্তা, তোমার দায়িত্ব।
এখনই একটু সচেতন হও—নইলে তুমি না বুঝলেও, হ্যাকার ঠিকই বুঝে নিবে!
আর হ্যাঁ, এই ব্লগটা যদি শেয়ার করো—তাহলে অন্যরাও সাবধান হবে।
শেয়ার করো, বুদ্ধিমান থাকো।