মাত্র আট মাসে পবিত্র কোরআন শরিফ মুখস্থ করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে আট বছর ৯ মাস বয়সী শিশু মো. নাফিউল ইসলাম নিয়াজ। পিরোজপুর জেলার তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসার ছাত্র হিসেবে সে এই অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জন করেছে। ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সেখমাটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করা নিয়াজ মাত্র আট মাসে সম্পূর্ণ কোরআন হিফজ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সকলকে। কোরআনের হাফেজ শিশু নাফিউল ইসলামের জন্য তার পরিবার সবার কাছে দোয়া কামনা করেছেন।
আরও পড়ুন: ৪৯ দিনেই কোরআন হিফজ করলো শিশু হাবিব, দোয়া নিতে চায় শায়খ আহমাদুল্লাহ
নিয়াজের এই সাফল্যে তার বাবা মো. মশিউল আলম সোহেল গভীরভাবে গর্বিত। তিনি নিজে একজন শিক্ষক, এবং তার মতে, এটি একমাত্র আল্লাহর অশেষ রহমতের ফলাফল। তিনি আবেগপূর্ণ কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলে মাত্র আট মাসে পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছে—এটি মহান আল্লাহর এক অসীম দয়া। আমি সবাইকে আমার ছেলের জন্য দোয়া করতে বলবো, যেন সে বড় হয়ে একজন প্রকৃত আলেম এবং ইসলামী স্কলার হিসেবে ইসলামের খেদমতে নিজেকে উৎসর্গ করতে পারে।”
৮ মাসে কোরআনের হাফেজ
শিশু নিয়াজের এই অসাধারণ অর্জনের পেছনে রয়েছে তার মাদরাসার শিক্ষকদের নিষ্ঠা ও মেহনত। তার শিক্ষাগুরু হাফেজ মো. আবু হানিফ বলেন, “আল্লাহর অশেষ অনুগ্রহ ও শিক্ষক-অভিভাবকদের সহযোগিতার কারণে নাফিউল মাত্র ২৪৪ দিনে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করতে পেরেছে। মেধাবী এসব ছেলেমেয়েরা সাধারণত অত্যন্ত ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের হয়ে থাকে, এবং নাফিউলও এর ব্যতিক্রম নয়। আমরা তার জন্য দোয়া করি, যেন সে বড় হয়ে একজন বড় আলেম হয়।”
নাফিউল ইসলাম নিয়াজের এই সাফল্য শুধু তার পরিবারের জন্যই গর্বের নয়, বরং তার মাদরাসা ও পুরো সমাজের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাত্র আট বছরের এই ছোট্ট শিশুটির অসাধারণ মনোবল ও মেধা সবার মনে অনুপ্রেরণার ঝড় তুলেছে। তরুণদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা ও আদর্শগত মূল্যবোধ বিকাশের এই উদ্যোগকে উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ১২ বছর বয়সে ৬ মাসে কোরআনের হাফেজ হলেন মুনতাছির
পবিত্র কোরআনের মতো একটি বিশাল গ্রন্থ এতো অল্প সময়ে মুখস্থ করা সহজ কাজ নয়। এ ধরনের অর্জন শিশুদের মেধা ও সামর্থ্যকে প্রমাণ করে এবং ইসলামিক শিক্ষার প্রতি আরও মনোযোগ আকর্ষণ করে। নিয়াজের এই সাফল্যে তার শিক্ষার্থীরাও দারুণ গর্বিত এবং তার পরিবার ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সকলেই তার জন্য ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হওয়ার আশা করছে।
মহান আল্লাহর প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস ও প্রচেষ্টার ফলেই নাফিউল ইসলাম নিয়াজের এই বিরল অর্জন সম্ভব হয়েছে। এ বয়সে এমন অসাধারণ দক্ষতা প্রদর্শন তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমাদের আশা, তার পথচলা সবসময় আল্লাহর পথে থাকবে, এবং সে ইসলামের সেবা ও মানুষের জন্য কাজ করে সমাজে এক অনন্য উদাহরণ স্থাপন করবে।
1 thought on “৮ বছর বয়সে ৮ মাসে কোরআনের হাফেজ হলেন শিশু নাফিউল ইসলাম”