নতুন আলুর দাম আকাশচুম্বী: ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব মানেই গ্রামবাংলার প্রাণচাঞ্চল্য, নতুন ফসলের সজীবতা, আর মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ। অগ্রহায়ণ মাস আসার সাথে সাথেই বাজারগুলো নতুন ফসলের গন্ধে ভরে ওঠে। এবারও বগুড়ায় সেই উৎসবের আমেজ দেখা গেছে, কিন্তু এই আনন্দের মাঝে দেখা দিয়েছে অস্বাভাবিক দামের কারণে ভীতি। বিশেষ করে নতুন আলুর দাম বৃদ্ধির বিষয়টি ক্রেতাদের জন্য উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

আরও পড়ুন: বিশ্ববাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম ১৮ মাসে সর্বোচ্চ

রবিবার, ১৭ নভেম্বর সকালে বগুড়ার রাজাবাজার, ফতহে আলী বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে যে, নবান্নের এই সময়কালে বাজারে প্রচুর পরিমাণে নতুন সবজি উঠেছে। নতুন আলুর (পাগড়ি জাত) দাম প্রতি কেজি ৩৬০-৪০০ টাকায় পৌঁছেছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য অনেকটাই অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া পাতা পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৬০-৭০ টাকা, টমেটো ২৪০ টাকা কেজি, পটোল ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, এবং কাঁচামরিচ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ধরনের উচ্চ মূল্যের কারণে সাধারণ ক্রেতারা ব্যাপকভাবে অসন্তুষ্ট।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, নবান্নের এই সময়ে ক্রেতারা প্রচুর পরিমাণে নতুন আলু কিনছেন, যার ফলে বাজারে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেড়েছে। এই চাহিদা মেটাতে বাজারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছোট ও মাঝারি আকারের আলু দেখা যাচ্ছে, এবং ক্রেতারা বাধ্য হচ্ছেন উঁচু দামে এই আলু কিনতে। ব্যবসায়ীরা আরও বলেছেন যে, এই সময়ে কৃষকেরা কম পরিমাণে আলু বিক্রি করেন এবং সরবরাহ কম থাকার কারণে দাম বেড়ে যায়। তাছাড়া, সরবরাহ চেইনে মধ্যস্বত্বভোগীদের ভূমিকা থাকায় এই উচ্চ মূল্যে ক্রেতাদের ভুগতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ডালের বাজারে নৈরাজ্য চরমে, কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা

রাজাবাজারে আলু কিনতে আসা কল্যাণ চন্দ্র বলেন, “নবান্ন আমাদের পরিবারের প্রিয় উৎসব। প্রতি বছর নতুন চাল আর আলু দিয়ে পিঠা তৈরি করে আমরা এ উৎসব পালন করি। তবে এ বছর আলুর দাম অতিরিক্ত মনে হচ্ছে।” তার এই মন্তব্য থেকে বোঝা যায় যে, নতুন ফসলের এই ঋতুকে কেন্দ্র করে বাঙালি পরিবারগুলোর উৎসবের আনন্দ কিছুটা হলেও ম্লান হয়ে যাচ্ছে।

আরেকজন ক্রেতা রুমানা আক্তার বলেন, “নবান্ন উপলক্ষে দাম কিছুটা বাড়ে সেটাই স্বাভাবিক, কিন্তু ৪০০ টাকা কেজি আলু সত্যিই বাড়াবাড়ি।” রুমানার মতো আরও অনেক ক্রেতা এই মূল্য বৃদ্ধিকে ন্যায্য মনে করছেন না। তারা মনে করছেন, এমন উচ্চ মূল্য সাধারণ মানুষের জন্য চরম অসুবিধাজনক হয়ে উঠেছে এবং সরকারকে এই বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

আরও পড়ুন: ১ কেজি পেঁয়াজের দাম কত : আজকের পেঁয়াজের বাজার দর

নবান্ন উৎসবের এই সময়ে প্রয়োজন ছিল ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে একটি সমন্বিত মূল্য ব্যবস্থা, যাতে সাধারণ মানুষ তাদের প্রিয় উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য বাজারে নতুন ফসল কেনা কঠিন হয়ে পড়ছে, যা তাদের উৎসবের আনন্দ ম্লান করছে।

যদিও নতুন ফসলের এই ঋতুতে দাম বাড়া কিছুটা স্বাভাবিক, কিন্তু এবার আলুর মূল্য এতটাই বেড়েছে যে এটি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এর ফলে নবান্ন উৎসব ঘিরে সাধারণ মানুষের মাঝে এক ধরণের হতাশা তৈরি হয়েছে।

  Juger Alo Google News যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

Leave a Comment