বার্সেলোনা বনাম ভ্যালেন্সিয়া: মাদ্রিদ (এপি) — রবিবার স্প্যানিশ লিগে বার্সেলোনা ভ্যালেন্সিয়াকে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে। প্রথম ২৪ মিনিটে চারটি গোল করে ম্যাচটি একেবারে নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়।
এটি ছিল বার্সেলোনার স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নশিপে চতুর্থ ম্যাচে প্রথম জয়। ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং মাত্র তিন মিনিটে গোল করে ম্যাচের শুরুটা করেন। এরপর ফেরান টোরেস অষ্টম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ব্রাজিলিয়ান রাফিনহা ১৪ মিনিটে গোল করে তৃতীয় গোলটি করেন, আর ২৪ মিনিটে ফেরমিন লোপেজ চতুর্থ গোলটি করেন।
যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে লোপেজ দ্বিতীয় গোল করেন। ভ্যালেন্সিয়া একমাত্র গোলটি করে ৫৯ মিনিটে, হুগো দুওরোর পা থেকে। তবে বার্সেলোনা আবার ৬৬ মিনিটে রবার্ট লেওয়ানডোস্কির গোলের মাধ্যমে লিড দ্বিগুণ করে। পরবর্তীতে ৭৫ মিনিটে সেসার তারেগার আত্মঘাতী গোল ভ্যালেন্সিয়ার জন্য ম্যাচটির আরও যন্ত্রণা বাড়ায়।
স্প্যানিশ লিগে এই মৌসুমে বার্সেলোনার এটি প্রথম জয়, যা তাদের চার ম্যাচ পর আসে। এর আগে, ৩ ডিসেম্বর, মায়োর্কাকে ৫-১ গোলে পরাজিত করে তারা সেরা ছন্দে ছিল, তবে পরবর্তীতে দুটি ড্র ও দুটি পরাজয়ের সম্মুখীন হয়।
আরও পড়ুন: দুর্বার রাজশাহী বনাম রংপুর রাইডার্স: নতুন কেলেঙ্কারির মধ্যে নাটকীয় জয় রাজশাহীর
বার্সেলোনা এই জয়ের মাধ্যমে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদ থেকে সাত পয়েন্ট পিছিয়ে এবং অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ থেকে তিন পয়েন্ট পিছিয়ে।
ফেরমিন লোপেজ বলেন, “আমরা লিগে খারাপ সময় পার করছিলাম, এই জয়টি আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখন আমাদের সামনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে এই জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।”
ভ্যালেন্সিয়ার অবস্থা
অপরদিকে, ভ্যালেন্সিয়া এখন সবার নিচে থাকা দলগুলোর মধ্যে একেবারে কাছাকাছি, তাদের পয়েন্ট সংখ্যা মাত্র ১৬, যা সুরক্ষিত এলাকার তুলনায় ৪ পয়েন্ট কম। ভ্যালেন্সিয়ার অধিনায়ক এবং ডিফেন্ডার হোসে গায়া জানান, “এই পরাজয়ে আমি রেগে আছি এবং দুঃখিত, বিশেষ করে তাদের জন্য যারা স্টেডিয়ামে এসে আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, কিংবা বাড়িতে বসে আমাদের খেলা দেখেছেন। আমরা এ ম্যাচে সঠিক মানের ফুটবল খেলতে পারিনি।”
বার্সেলোনার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স
এই ম্যাচে বার্সেলোনার চারটি খেলোয়াড় দুর্দান্ত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছেন। ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং, ফেরান টোরেস এবং ফেরমিন লোপেজ, যারা সিজনে কম সময় খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন, তারা এই ম্যাচে নিজেদের প্রদর্শন দিয়ে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। ডি ইয়ং তার দ্বিতীয় গোলটি করার পর দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ান। লোপেজ তার দুটি গোল করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, এবং টোরেসও তার গতি দিয়ে ভ্যালেন্সিয়ার রক্ষণভাগকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় ফেলেন।
আরও পড়ুন: ম্যান সিটি বনাম চেলসি: চেলসিকে ছয়ে নামিয়ে আবার চারে সিটি
এছাড়া, রাফিনহা যিনি ১৩টি গোলের মধ্যে তার ২৩টি গোলের মধ্যে একটি গোল করেছেন, দুর্দান্ত এক ব্রেকঅ্যাওয়ে করে গোলটি করেন। দ্বিতীয়ার্ধে, লেওয়ানডোস্কি আরও একটি গোল করে নিজের গোলসংখ্যা বাড়িয়ে নেন। তিনি এখন লা লিগায় ১৭টি গোল করে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে দুই গোল পেছনে ফেলেছেন।
ভ্যালেন্সিয়ার দুর্দশা
ভ্যালেন্সিয়া এই মৌসুমে অনেক সমস্যায় পড়েছে, তাদের দলগত পারফরম্যান্স একেবারেই হতাশাজনক। একদিকে যেমন তারা ম্যাচে ধারাবাহিকভাবে গোল খাচ্ছে, অন্যদিকে রেফারির ভুল সিদ্ধান্ত এবং দারুণ একটি পেনাল্টি ভেস্তে যাওয়া তাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ করে দিয়েছে। এটি স্পষ্ট যে, তাদের এই সিজনে রক্ষা পাওয়ার জন্য তাদের আরো উন্নতি করতে হবে।
বার্সেলোনা বনাম ভ্যালেন্সিয়া পরবর্তী ম্যাচ
বার্সেলোনা এই গুরুত্বপূর্ণ জয় দিয়ে আত্মবিশ্বাসে ফিরতে সক্ষম হলেও, তাদের সামনে কঠিন প্রতিপক্ষ রয়েছে। লিগের অন্য দলগুলো তাদের সামনের ম্যাচগুলিতে আরও চ্যালেঞ্জ করবে। অপরদিকে, ভ্যালেন্সিয়া এখনো নিজেদের গতি বাড়াতে পারছে না, আর তাদের পরবর্তী ম্যাচে অনেক কিছু ঠিক করতে হবে।
বার্সেলোনা ১০১ গোল করেছে এই সিজনে, এর মধ্যে ৫৯টি লা লিগায়, এবং তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে যদি তারা শীর্ষ স্থান অর্জন করতে চায়।
অপরদিকে, ভ্যালেন্সিয়ার জন্য বিষয়টি হচ্ছে তারা এখন সুরক্ষিত অঞ্চলের বাইরে রয়েছে, এবং শীঘ্রই তাদের জয়ের ধারায় ফিরতে না পারলে তাদের পরবর্তী মৌসুমের জন্য চ্যালেঞ্জ বেড়ে যাবে।
অন্য ফলাফল:
আথলেটিক বিলবাও তাদের ঘরের মাঠে লেগানেসের সঙ্গে ০-০ ড্র করেছে। তারা বর্তমানে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে, এবং লেগানেস ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ১৬ তম স্থানে রয়েছে।
অপরদিকে, গেটাফে রিয়াল সোসিয়েদাদকে ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে, যার মধ্যে দুটি গোল করেছেন কার্লেস পেরেজ (৭৪ ও ৮৫ মিনিট) এবং এক গোল করেছেন ক্রিস্টান্টুস উচে (৭২ মিনিট)। গেটাফে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ১৪ তম স্থানে উঠে এসেছে।
শেষ কথা
বার্সেলোনা বনাম ভ্যালেন্সিয়ার এই ম্যাচটি বার্সেলোনার জন্য এক বড় জয় এবং তাদের আত্মবিশ্বাসের প্রতি একটি বড় পদক্ষেপ। কিন্তু এই জয়ের পর তাদের আরও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। একদিকে ভ্যালেন্সিয়ার জন্য এটি আরও একটি কঠিন পরীক্ষা, যেখানে তাদের সামনের সময়গুলোতে আরও কঠিন সংগ্রাম করতে হবে।