সূরা ওয়াকিয়া: যে দোয়া পড়লে দারিদ্রতা কাছেও ঘেঁষতে পারবে না

**সূরা ওয়াকিয়া** হল কুরআনের একটি বিশেষ সূরা, যা মুসলমানদের জন্য দারিদ্র্য থেকে মুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে বিবেচিত। বর্তমান সময়ে, যখন অর্থনৈতিক চাপ এবং অভাব আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন এই সূরার পাঠ আমাদের আশার আলো জ্বালাতে পারে। হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে, যে ব্যক্তি নিয়মিত সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করে, তার ওপর অভাব আসবে না। এটি আমাদের মনে একটি শক্তিশালী বিশ্বাস তৈরি করে যে, আল্লাহর রহমত আমাদের জীবনে প্রবাহিত হবে এবং আমাদেরকে দারিদ্র্যের হাত থেকে রক্ষা করবে।

এই ব্লগ পোস্টে, আমরা সূরা ওয়াকিয়ার ফজিলত এবং এর পাঠের মাধ্যমে দোয়া করার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব। আমরা জানব কিভাবে সূরা ওয়াকিয়া আমাদের আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গিকে শক্তিশালী করে এবং আমাদের জীবনে সমৃদ্ধি ও সচ্ছলতা আনতে সাহায্য করতে পারে। আসুন, আমরা একসাথে এই মহান সূরার মহিমা অনুধাবন করি এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি, যাতে দারিদ্র্য আমাদের জীবনে কখনোই ঘেঁষতে না পারে।

Table of Contents

সূরা ওয়াকিয়ার ইতিহাস ও গুরুত্ব

**সূরা ওয়াকিয়া** ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মক্কী সূরা, যা আল্লাহর নির্দেশনা ও মানবজীবনের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রদান করে। এটি মূলত কিয়ামতের দিন এবং পরকালের জীবন সম্পর্কে আলোচনা করে। 

ইতিহাস

সূরা ওয়াকিয়া মক্কায় অবতীর্ণ হওয়া সূরাগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে। এটি মুসলমানদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করে, যা তাদেরকে কিয়ামতের দিন এবং এর পরবর্তী জীবনের বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন করে। সূরা ওয়াকিয়া কুরআনের অন্যতম সূরা, যা মানুষকে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী হতে এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নৈতিকতা ও সত্যের অনুসরণ করতে উদ্বুদ্ধ করে।

গুরুত্ব

সূরা ওয়াকিয়ার মধ্যে কিয়ামতের দিন মানুষের ভাগ্য নির্ধারণের প্রক্রিয়া, জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা এবং আল্লাহর সৃষ্টির শক্তি ও ক্ষমতার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এটি মুসলমানদের জন্য একটি পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে, যা তাদেরকে সত্যের পথে চলতে এবং আল্লাহর নির্দেশনার অনুসরণ করতে উৎসাহিত করে। 

সূরার আয়াত সংখ্যা ও অবতরণ স্থান

**সূরা ওয়াকিয়া** কুরআনের ৫৬তম সূরা এবং এতে মোট **৯৬টি আয়াত** রয়েছে। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে, যা ইসলামের প্রাথমিক যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। 

অবতরণ স্থান

মক্কায় অবতীর্ণ হওয়া সূরাগুলি সাধারণত ইসলামের মূল শিক্ষা, আল্লাহর একত্ববাদ, পরকালের জীবন এবং নৈতিকতার উপর জোর দেয়। সূরা ওয়াকিয়া এই ধারাবাহিকতার একটি অংশ, যা মানুষের জন্য কিয়ামতের দিন এবং পরবর্তী জীবনের বাস্তবতা সম্পর্কে গভীর ধারণা প্রদান করে।

আরও পড়ুন: জান্নাতে যেতে চান? পালন করুন ৪টি গুরুত্বপূর্ণ আমল

২. সূরা ওয়াকিয়া: বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

সূরা ওয়াকিয়ার আয়াতসমূহের বাংলা উচ্চারণ নিচে উল্লেখ করা হলো, যা মুসলমানদের জন্য সহজে পড়া ও স্মরণে রাখার জন্য সহায়ক হবে:

আরবি : بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

বাংলা উচ্চারণ :  বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

আরবি : إِذَا وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ

বাংলা উচ্চারণ :   ইযা-অক্বা‘আতিল্ ওয়া-ক্বি‘আতু।

১. অর্থ : যখন কিয়ামত সংঘটিত হবে।

আরবি :   لَيْسَ لِوَقْعَتِهَا كَاذِبَةٌ

বাংলা উচ্চারণ : লাইসা লিঅক‘আতিহা-কা-যিবাহ্।

২. অর্থ : তার সংঘটনের কোনই অস্বীকারকারী থাকবে না।

আরবি : خَافِضَةٌ رَافِعَةٌ

বাংলা উচ্চারণ :  খ-ফি দ্বোয়ার্তু র-ফি‘আহ।

৩. অর্থ : তা কাউকে ভূলুণ্ঠিত করবে এবং কাউকে করবে সমুন্নত।

আরবি : إِذَا رُجَّتِ الْأَرْضُ رَجًّا

বাংলা উচ্চারণ : ইযা- রুজ্জ্বাতিল্ র্আদু রজ্জ্বান্।

৪. অর্থ : যখন যমীন প্রকম্পিত হবে প্রবল প্রকম্পনে।

আরবি : وَبُسَّتِ الْجِبَالُ بَسًّا

বাংলা উচ্চারণ : অবুস্সাতিল্ জ্বিবা-লু বাস্সা-।

৫. অর্থ : আর পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে।

আরবি : فَكَانَتْ هَبَاءً مُنْبَثًّا

বাংলা উচ্চারণ : ফাকা-নাত্ হাবা-য়াম্ মুম্বাছ্ছাঁও।

৬. অর্থ : অতঃপর তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত হবে।

আরবি : وَكُنْتُمْ أَزْوَاجًا ثَلَاثَةً

বাংলা উচ্চারণ : অকুন্তুম্আয্ওয়া-জ্বান্ ছালা-ছাহ্।

৭. অর্থ : আর তোমরা বিভক্ত হয়ে পড়বে তিন দলে।

আরবি : فَأَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ

বাংলা উচ্চারণ : ফাআছ্হা-বুল্ মাইমানাতি মা য় আছ্হা-বুল্ মাইমানাহ্।

৮. অর্থ : সুতরাং ডান পার্শ্বের দল, ডান পার্শ্বের দলটি কত সৌভাগ্যবান!

আরবি : وَأَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ

বাংলা উচ্চারণ : অআছ্হা-বুল্ মাশ্য়ামাতি মা য় আছ্হা-বুল্ মাশ্য়ামাহ্।

৯. অর্থ : আর বাম পার্শ্বের দল, বাম পার্শ্বের দলটি কত হতভাগ্য!

আরবি : وَالسَّابِقُونَ السَّابِقُونَ

বাংলা উচ্চারণ : অস্সা-বিকু নাস্ সা-বিকুন।

১০. অর্থ : আর অগ্রগামীরাই অগ্রগামী।

আরবি : أُولَئِكَ الْمُقَرَّبُونَ

বাংলা উচ্চারণ : উলা-য়িকাল্ মুর্ক্বরাবূন্।

১১. অর্থ : তারাই সান্নিধপ্রাপ্ত।

আরবি : فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ

বাংলা উচ্চারণ : ফী জ্বান্না-তিন্ না‘ঈম্।

১২. অর্থ :তারা থাকবে নিআমতপুর্ণ জান্নাতসমূহে ।

আরবি : ثُلَّةٌ مِنَ الْأَوَّلِينَ

বাংলা উচ্চারণ : ছুল্লাতুম্ মিনাল্ আউয়্যালীন।

১৩. অর্থ :বহুসংখ্যক হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে,

আরবি : وَقَلِيلٌ مِنَ الْآخِرِينَ

বাংলা উচ্চারণ : অক্বালীলুম্ মিনাল্ আ-খিরীন্।

১৪. অর্থ : আর অল্পসংখ্যক হবে পরবর্তীদের মধ্য থেকে।

আরবি : عَلَى سُرُرٍ مَوْضُونَةٍ

বাংলা উচ্চারণ : ‘আলা- সুরুরিম্ মাওদ্বূনাতিম্।

১৫. অর্থ : স্বর্ণ ও দামী পাথরখচিত আসনে!

আরবি : مُتَّكِئِينَ عَلَيْهَا مُتَقَابِلِينَ

বাংলা উচ্চারণ : মুত্তাকিয়ীনা ‘আলাইহা-মুতাক্ব-বিলীন্।

১৬. অর্থ : তারা সেখানে হেলান দিয়ে আসীন থাকবে মুখোমুখি অবস্থায়।

আরবি : يَطُوفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَانٌ مُخَلَّدُونَ

বাংলা উচ্চারণ : ইয়াতুফু ‘আলাইহিম্ ওয়িল্দা-নুম্ মুখাল্লাদূন।

১৭. অর্থ : তাদের আশ-পাশে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোররা,

আরবি : بِأَكْوَابٍ وَأَبَارِيقَ وَكَأْسٍ مِنْ مَعِينٍ

বাংলা উচ্চারণ : বিআক্ওয়া-বিঁও অআবা-রীক্বা অকাসিম্ মিম্ মা‘ঈনিল্।

১৮. অর্থ : পানপাত্র, জগ ও প্রবাহিত ঝর্ণার শরাবপুর্ণ পেয়ালা নিয়ে,

আরবি : لَا يُصَدَّعُونَ عَنْهَا وَلَا يُنْزِفُونَ

বাংলা উচ্চারণ : লা-ইয়ুছোয়াদ্দা‘ঊনা ‘আন্হা-অলা- ইয়ুন্যিফূন।

১৯. অর্থ : তা পানে না তাদের মাথা ব্যথা করবে, আর না তারা মাতাল হবে।

আরবি : وَفَاكِهَةٍ مِمَّا يَتَخَيَّرُونَ

বাংলা উচ্চারণ : অফা-কিহাতিম্ মিম্মা-ইয়াতাখাইয়্যারূন।

২০. অর্থ : আর (ঘোরাফেরা করবে) তাদের পছন্দমত ফল নিয়ে।

আরবি : وَلَحْمِ طَيْرٍ مِمَّا يَشْتَهُونَ

বাংলা উচ্চারণ : অলাহ্মি ত্বোয়াইরিম্ মিম্মা-ইয়াশ্তাহূন।

২১. অর্থ : আর পাখির গোশ্ত নিয়ে, যা তারা কামনা করবে।

আরবি : وَحُورٌ عِينٌ

বাংলা উচ্চারণ : অহূরুন্ ‘ঈনুন্।

২২. অর্থ : আর থাকবে ডাগরচোখা হূর,

আরবি : كَأَمْثَالِ اللُّؤْلُؤِ الْمَكْنُونِ

বাংলা উচ্চারণ : কাআম্ছা-লিল্ লুলুয়িল্ মাক্নূন্ ।

২৩. অর্থ : যেন তারা সুরক্ষিত মুক্তা,

আরবি : جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ

বাংলা উচ্চারণ : জ্বাযা-য়াম্ বিমা-কা-নূ ইয়া’মালূন্।

২৪. অর্থ : তারা যে আমল করত তার প্রতিদানস্বরূপ।

আরবি : لَا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا تَأْثِيمًا

বাংলা উচ্চারণ : লা-ইয়াস্মাঊ’না ফীহা-লাগ্ওয়াঁও অলা-তাছীমান্।

২৫. অর্থ : তারা সেখানে শুনতে পাবে না কোন বেহুদা কথা, এবং না পাপের কথা;

আরবি : إِلَّا قِيلًا سَلَامًا سَلَامًا

বাংলা উচ্চারণ : ইল্লা-ক্বীলান্ সালা-মান্ সালা-মা-।

২৬. অর্থ : শুধু এই বাণী ছাড়া, ‘সালাম, সালাম’

আরবি : وَأَصْحَابُ الْيَمِينِ مَا أَصْحَابُ الْيَمِينِ

বাংলা উচ্চারণ : অআছ্হা-বুল্ ইয়ামীনি মা য় আছ্হা-বুল্ ইয়ামীন্।

২৭. অর্থ : আর ডান দিকের দল; কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল!

আরবি : فِي سِدْرٍ مَخْضُودٍ

বাংলা উচ্চারণ : ফী সিদ্রিম্ মাখ্দ্বুদিঁও।

২৮. অর্থ : তারা থাকবে কাঁটাবিহীন কুলগাছের নিচে,

আরবি : وَطَلْحٍ مَنْضُودٍ

বাংলা উচ্চারণ : অত্বোয়াল্হিম্ মান্দ্বুদিঁও।

২৯. অর্থ : আর কাঁদিপণূর্ কলাগাছের নিচে,

আরবি : وَظِلٍّ مَمْدُودٍ

বাংলা উচ্চারণ : অজিল্লিম্ মামদূদিঁও।

৩০. অর্থ : আর বিস্তৃত ছায়ায়,

আরবি : وَمَاءٍ مَسْكُوبٍ

বাংলা উচ্চারণ : অমা-য়িম্ মাস্কূবিঁও।

৩১. অর্থ : আর সদা প্রবাহিত পানির পাশে,

আরবি : وَفَاكِهَةٍ كَثِيرَةٍ

বাংলা উচ্চারণ : অ ফা- কিহাতিন্ কাছীরাতিল্।

৩২. অর্থ : আর প্রচুর ফলমূলে,

আরবি : لَا مَقْطُوعَةٍ وَلَا مَمْنُوعَةٍ

বাংলা উচ্চারণ : লা-মাকতুআতিঁও অলা-মাম্নূ‘আতিঁও ।

৩৩. অর্থ : যা শেষ হবে না এবং নিষিদ্ধও হবে না।

আরবি : وَفُرُشٍ مَرْفُوعَةٍ

বাংলা উচ্চারণ : অফুরুশিম্ মারফূ‘আহ্।

৩৪. অর্থ : (তারা থাকবে) সুউচ্চ শয্যাসমূহে;

আরবি : إِنَّا أَنْشَأْنَاهُنَّ إِنْشَاءً

বাংলা উচ্চারণ : ইন্না য় আন্শানা-হুন্না ইন্শা-য়ান্।

৩৫. অর্থ : নিশ্চয় আমি হূরদেরকে বিশেষভাবে সৃষ্টি করব।

আরবি : فَجَعَلْنَاهُنَّ أَبْكَارًا

বাংলা উচ্চারণ : ফাজ্বা‘আল্না-হুন্না আব্কা-রন্।

৩৬. অর্থ : অতঃপর তাদেরকে বানাব কুমারী,

আরবি : عُرُبًا أَتْرَابًا

বাংলা উচ্চারণ : উ’রুবান্ আত্র-বাল্

৩৭. অর্থ : সোহাগিনী ও সমবয়সী।

আরবি : لِأَصْحَابِ الْيَمِينِ

বাংলা উচ্চারণ : লিআছ্হা-বিল্ ইয়ামীন্।

৩৮. অর্থ : ডানদিকের লোকদের জন্য।

আরবি : ثُلَّةٌ مِنَ الْأَوَّلِينَ

বাংলা উচ্চারণ : ছুল্লাতুম্ মিনাল্ আউয়্যালীনা।

৩৯. অর্থ : তাদের অনেকে হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে।

আরবি : وَثُلَّةٌ مِنَ الْآخِرِينَ

বাংলা উচ্চারণ : অছুল্লাতুম্ মিনাল্ আ-খিরীন্।

৪০. অর্থ : আর অনেকে হবে পরবর্তীদের মধ্য থেকে।

আরবি : وَأَصْحَابُ الشِّمَالِ مَا أَصْحَابُ الشِّمَالِ

বাংলা উচ্চারণ : অআছ্হা-বুশ্ শিমা- লি মা য় আছ্হা-বুশ্ শিমা-ল্।

৪১. অর্থ : আর বাম দিকের দল, কত হতভাগ্য বাম দিকের দল!

আরবি : فِي سَمُومٍ وَحَمِيمٍ

বাংলা উচ্চারণ : ফী সামূমিঁও অহামীমিঁও।

৪২. অর্থ : তারা থাকবে তীব্র গরম হাওয়া এবং প্রচণ্ড উত্তপ্ত পানিতে,

আরবি : وَظِلٍّ مِنْ يَحْمُومٍ

বাংলা উচ্চারণ : অজিল্লিম্ মিঁ ইয়াহ্মূমিল্।

৪৩. অর্থ : আর প্রচণ্ড কালো ধোঁয়ার ছায়ায়,

আরবি : لَا بَارِدٍ وَلَا كَرِيمٍ

বাংলা উচ্চারণ : লা-বা-রিদিঁও অলা-কারীম্।

৪৪. অর্থ : যা শীতলও নয়, সখু করও নয়।

আরবি : إِنَّهُمْ كَانُوا قَبْلَ ذَلِكَ مُتْرَفِينَ

বাংলা উচ্চারণ : ইন্নাহুম্ ক্বা-নূ ক্বব্লা যা-লিকা মুত্রাফীন্।

৪৫. অর্থ : নিশ্চয় তারা ইতঃপূবের্ বিলাসিতায় মগ্ন ছিল,

আরবি : وَكَانُوا يُصِرُّونَ عَلَى الْحِنْثِ الْعَظِيمِ

বাংলা উচ্চারণ : অকা-নূ ইয়ুর্ছিরূ-না ‘আলাল্ হিন্ছিল্ ‘আজীম্।

৪৬. অর্থ : আর তারা জঘন্য পাপে লেগে থাকত।

আরবি : وَكَانُوا يَقُولُونَ أَئِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَئِنَّا لَمَبْعُوثُونَ

বাংলা উচ্চারণ : অ কা-নূ ইয়াকু লূনা আইযা-মিত্না-অকুন্না-তুরা-বাঁও অই’জোয়া-মান্ য়াইন্না-লামাব্ঊছূনা।


৪৭. অর্থ : আর তারা বলত, ‘আমরা যখন মরে যাব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব?’

আরবি : أَوَآبَاؤُنَا الْأَوَّلُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আ ওয়া আ-বা-য়ু নাল্ আওয়ালূন্।

৪৮. অর্থ : ‘আমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষরাও?’

আরবি : قُلْ إِنَّ الْأَوَّلِينَ وَالْآخِرِينَ

বাংলা উচ্চারণ : কুল্ ইন্নাল্ আউয়্যালীনা অল্আ-খিরীনা

৪৯. অর্থ : বল, ‘নিশ্চয় পূর্ববর্তীরা ও পরবর্তীরা,

আরবি : لَمَجْمُوعُونَ إِلَى مِيقَاتِ يَوْمٍ مَعْلُومٍ

বাংলা উচ্চারণ : লামাজ্ব্ মূ‘ঊ না ইলা-মীক্ব-তি ইয়াওমিম্ মা’লূম্।

৫০. অর্থ : এক নির্ধারিত দিনের নির্দিষ্ট সময়ে অবশ্যই একত্র হবে’।

আরবি : ثُمَّ إِنَّكُمْ أَيُّهَا الضَّالُّونَ الْمُكَذِّبُونَ

বাংলা উচ্চারণ : ছুম্মা ইন্নাকুম্ আইয়ুহাদ্দোয়া-ল্লূনাল্ মুকায্যিবূন।

৫১. অর্থ : তারপর হে পথভ্রষ্ট ও অস্বীকারকারীরা,

আরবি : لَآكِلُونَ مِنْ شَجَرٍ مِنْ زَقُّومٍ

বাংলা উচ্চারণ : লাআ-কিলূনা মিন্ শাজ্বারিম্ মিন্ যাককুমিন্

৫২. অর্থ : তোমরা অবশ্যই যাক্কূম গাছ থেকে খাবে,

আরবি : فَمَالِئُونَ مِنْهَا الْبُطُونَ

বাংলা উচ্চারণ : ফামা-লিয়ূনা মিন্হাল্ বুতুন্ ।

৫৩. অর্থ : অতঃপর তা দিয়ে পেট ভর্তি করবে।

আরবি : فَشَارِبُونَ عَلَيْهِ مِنَ الْحَمِيمِ

বাংলা উচ্চারণ : ফাশা-রিবূনা ‘আলাইহি মিনাল্ হামীম্।

৫৪. অর্থ : তদুপরি পান করবে প্রচণ্ড উত্তপ্ত পানি।

আরবি : فَشَارِبُونَ شُرْبَ الْهِيمِ

বাংলা উচ্চারণ : ফাশা-রিবূনা র্শুবাল্ হীম্।

৫৫. অর্থ : অতঃপর তোমরা তা পান করবে তৃষ্ণাতুর উটের ন্যায়।

আরবি : هَذَا نُزُلُهُمْ يَوْمَ الدِّينِ

বাংলা উচ্চারণ : হা-যা-নুযুলুহুম্ ইয়াওমাদ্দীন্।

৫৬. অর্থ : প্রতিফল দিবসে এই হবে তাদের মেহমানদারী,

আরবি : نَحْنُ خَلَقْنَاكُمْ فَلَوْلَا تُصَدِّقُونَ

বাংলা উচ্চারণ : নাহ্নু খলাকনা-কুম্ ফালাওলা তুছোয়াদ্দিক্বূন্।

৫৭. অর্থ : আমিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি: তাহলে কেন তোমরা তা বিশ্বাস করছ না?

আরবি : أَفَرَأَيْتُمْ مَا تُمْنُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আফারায়াইতুম্ মা তুম্নূন্।

৫৮. অর্থ : তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমরা যে বীযর্পাত করছ সে সম্পর্কে?

আরবি : أَأَنْتُمْ تَخْلُقُونَهُ أَمْ نَحْنُ الْخَالِقُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আআন্তুম্ তাখ্লুকু নাহূ য় আম্ নাহ্নুল ‘খ-লিকুন্ ।

৫৯. অর্থ : তা কি তোমরা সৃষ্টি কর, না আমিই তার স্রষ্টা?

আরবি : نَحْنُ قَدَّرْنَا بَيْنَكُمُ الْمَوْتَ وَمَا نَحْنُ بِمَسْبُوقِينَ

বাংলা উচ্চারণ : নাহ্নু ক্বার্দ্দানা-বাইনাকুমুল্ মাওতা অমা-নাহ্নু বিমাস্বূক্বীন।


৬০. অর্থ : আমি তোমাদের মধ্যে মৃত্যু নির্ধারণ করেছি এবং আমাকে অক্ষম করা যাবে না,

আরবি : عَلَى أَنْ نُبَدِّلَ أَمْثَالَكُمْ وَنُنْشِئَكُمْ فِي مَا لَا تَعْلَمُونَ

বাংলা উচ্চারণ : ‘আলা য় আন্ নুবাদ্দিলা আম্ছা-লাকুম্ অনুন্শিয়াকুম্ আম্ছা-লাকুম্ অনুন্শিয়াকুম্ ফীমা-লা-তা’লামূন্।

৬১. অর্থ : তোমাদের স্থানে তোমাদের বিকল্প আনয়ন করতে এবং তোমাদেরকে এমনভাবে সৃষ্টি করতে যা তোমরা জান না।

আরবি : وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ النَّشْأَةَ الْأُولَى فَلَوْلَا تَذَكَّرُونَ

বাংলা উচ্চারণ : অলাক্বদ্ ‘আলিম্তুমুন্ নাশ্য়াতাল্ ঊলা-ফালাওলা- তাযাক্কারূন্।

৬২. অর্থ : আর তোমরা তো প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে জেনেছ, তবে কেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ করছ না?

আরবি : أَفَرَأَيْتُمْ مَا تَحْرُثُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আফারায়াইতুম্ মা-তাহারুছূন্।

৬৩. অর্থ : তোমরা আমাকে বল, তোমরা যমীনে যা বপন কর সে ব্যাপারে,

আরবি : أَأَنْتُمْ تَزْرَعُونَهُ أَمْ نَحْنُ الزَّارِعُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আআন্তুম্ তায্রঊ’নাহূ য় আম্ নাহ্নুয্ যা-রিঊ’ন্।

৬৪. অর্থ : তোমরা তা অঙ্কুরিত কর, না আমি অঙ্কুরিত করি?

আরবি : لَوْ نَشَاءُ لَجَعَلْنَاهُ حُطَامًا فَظَلْتُمْ تَفَكَّهُونَ

বাংলা উচ্চারণ : লাও নাশা-য়ু লাজ্বা‘আল্না-হু হুত্বোয়া-মান্ ফাজোয়াল্তুম্ তাফাক্কাহূন্।

৬৫. অর্থ : আমি চাইলে তা খড়-কুটায় পরিণত করতে পারি, তখন তোমরা পরিতাপ করতে থাকবে-

আরবি : إِنَّا لَمُغْرَمُونَ

বাংলা উচ্চারণ : ইন্না-লামুগ্রমূন্।

৬৬. অর্থ : (এই বলে,) ‘নিশ্চয় আমরা দায়গ্রস্ত হয়ে গেলাম’।

আরবি : بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ

বাংলা উচ্চারণ : বাল্ নাহ্নু মাহ্রূমূন্।

৬৭. অর্থ : ‘বরং আমরা মাহরূম হয়েছি’।

আরবি : أَفَرَأَيْتُمُ الْمَاءَ الَّذِي تَشْرَبُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আফারয়াইতুমুল্ মা-য়াল্ লাযী তাশ্রবূন্।

৬৮. অর্থ : তোমরা যে পানি পান কর সে ব্যাপারে আমাকে বল।

আরবি : أَأَنْتُمْ أَنْزَلْتُمُوهُ مِنَ الْمُزْنِ أَمْ نَحْنُ الْمُنْزِلُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আআন্তুম্ আন্ যাল্তুমূহু মিনাল্ মুয্নি আম্ নাহ্নুল্ মুন্যিলূন্।

৬৯. অর্থ : বৃষ্টিভরা মেঘ থেকে তোমরা কি তা বষর্ণ কর, না আমি বৃষ্টি বষর্ণ কারী?

আরবি : لَوْ نَشَاءُ جَعَلْنَاهُ أُجَاجًا فَلَوْلَا تَشْكُرُونَ

বাংলা উচ্চারণ : লাও নাশা-য়ু জ্বা‘আল্না-হু উজ্বা-জ্বান্ ফালাওলা- তাশ্কুরূ ন্।

৭০. অর্থ : ইচ্ছা করলে আমি তা লবণাক্ত করে দিতে পারি: তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও না?

আরবি : أَفَرَأَيْتُمُ النَّارَ الَّتِي تُورُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আফারয়াইতুমু ন্না-র ল্লাতী তূরূন্।

৭১. অর্থ : তোমরা যে আগুন জ্বালাও সে ব্যাপারে আমাকে বল,

আরবি : أَأَنْتُمْ أَنْشَأْتُمْ شَجَرَتَهَا أَمْ نَحْنُ الْمُنْشِئُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আ-আন্তুম্ আন্শাতুম্ শাজ্বারতাহা য় আম্ নাহ্নুল্ মুন্শিয়ূন্।

৭২. অর্থ : তোমরাই কি এর (লাকড়ির গাছ) উৎপাদন কর, না আমি করি?

আরবি : نَحْنُ جَعَلْنَاهَا تَذْكِرَةً وَمَتَاعًا لِلْمُقْوِينَ

বাংলা উচ্চারণ : নাহ্নু জ্বা‘আল্না-হা তায্কিরতাঁও অমাতা-‘আল্ লিল্মুকওয়ীন্।

৭৩. অর্থ : একে আমি করেছি এক স্মারক ও মরুবাসীর প্রয়োজনীয় বস্তু

আরবি : فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ

বাংলা উচ্চারণ : ফাসাব্বিহ্ বিস্মি রব্বিকাল্ ‘আজীম্।

৭৪. অর্থ : অতএব তোমার মহান রবের নামে তাসবীহ পাঠ কর।

আরবি : فَلَا أُقْسِمُ بِمَوَاقِعِ النُّجُومِ

বাংলা উচ্চারণ : ফালা য় উক্বসিমু বিমাওয়া-ক্বি‘ইন্ নুজুমি।

৭৫. অর্থ : সুতরাং আমি কসম করছি নক্ষত্ররাজির অস্তাচলের,

আরবি : وَإِنَّهُ لَقَسَمٌ لَوْ تَعْلَمُونَ عَظِيمٌ

বাংলা উচ্চারণ : অইন্নাহূ লাক্বাসামু ল্লাও তা’লামূনা ‘আজীম।

৭৬. অর্থ : আর নিশ্চয় এটি এক মহাকসম, যদি তোমরা জানতে,

আরবি : إِنَّهُ لَقُرْآنٌ كَرِيمٌ

বাংলা উচ্চারণ : ইন্নাহূ লা কুর আ-নুন্ কারীমুন্।

৭৭. অর্থ : নিশ্চয় এটি মহিমান্বিত কুরআন,

আরবি : فِي كِتَابٍ مَكْنُونٍ

বাংলা উচ্চারণ : ফী কিতা-বিম্ মাক্নূনিল্।

৭৮. অর্থ : যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে,

আরবি : لَا يَمَسُّهُ إِلَّا الْمُطَهَّرُونَ

বাংলা উচ্চারণ : লা ইয়া স্সুহূ য় ইল্লাল্ মুত্বোয়াহ্ হারূন্।

৭৯. অর্থ : কেউ তা স্পর্শ করবে না পবিত্রগণ ছাড়া।

আরবি : تَنْزِيلٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ

বাংলা উচ্চারণ : তান্যীলুম্ র্মি রব্বিল্ ‘আ-লামী ন্।

৮০. অর্থ : তা সৃষ্টিকুলের রবের কাছ থেকে নাযিলকৃত।

আরবি : أَفَبِهَذَا الْحَدِيثِ أَنْتُمْ مُدْهِنُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আফাবিহা-যাল্ হাদীছি আন্তুম্ মুদ্হিনূনা।

৮১. অর্থ : তবে কি তোমরা এই বাণী তুচ্ছ গণ্য করছ?

আরবি : وَتَجْعَلُونَ رِزْقَكُمْ أَنَّكُمْ تُكَذِّبُونَ

বাংলা উচ্চারণ : অতাজ্ব ‘আলূনা রিয্ক্বকুম্ আন্নাকুম্ তুকায্যিবূন্।

৮২. অর্থ : আর তোমরা তোমাদের রিয্ক বানিয়ে নিয়েছ যে, তোমরা মিথ্যা আরোপ করবে।

আরবি : فَلَوْلَا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُومَ

বাংলা উচ্চারণ : ফালাওলা য় ইযা-বালাগতিল্ হুল্ক্বুম্।

৮৩. অর্থ : সুতরাং কেন নয়- যখন রূহ কণ্ঠদেশে পৌঁছে যায়?

আরবি : وَأَنْتُمْ حِينَئِذٍ تَنْظُرُونَ

বাংলা উচ্চারণ : অআন্তুম্ হীনায়িযিন্ তান্জুরূনা।

৮৪. অর্থ : আর তখন তোমরা কেবল চেয়ে থাক।

আরবি : وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْكُمْ وَلَكِنْ لَا تُبْصِرُونَ

বাংলা উচ্চারণ : অনাহ্নু আকরাবু ইলাইহি মিন্কুম্ অলা-কিল্লা-তুব্ছিরূন্।

৮৫. অর্থ : আর তোমাদের চাইতে আমি তার খুব কাছে; কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না।

আরবি : فَلَوْلَا إِنْ كُنْتُمْ غَيْرَ مَدِينِينَ

বাংলা উচ্চারণ : ফালাওলা য় ইন্ কুন্তুম্ গইর মাদীনীন।

৮৬. অর্থ : তোমাদের যদি প্রতিফল দেয়া না হয়, তাহলে তোমরা কেন

আরবি : تَرْجِعُونَهَا إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ

বাংলা উচ্চারণ : র্তাজ্বি‘ঊনাহা য় ইন্ কুন্তুম্ ছোয়া-দিক্বীন্।

৮৭. অর্থ : ফিরিয়ে আনছ না রূহকে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?

আরবি : فَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُقَرَّبِينَ

বাংলা উচ্চারণ : ফা আম্মা য় ইন্ কা-না মিনাল্ মুর্ক্বারবীন।

৮৮. অর্থ : অতঃপর সে যদি নৈকট্যপ্রাপ্তদের অন্যতম হয়,

আরবি : فَرَوْحٌ وَرَيْحَانٌ وَجَنَّةُ نَعِيمٍ

বাংলা উচ্চারণ : ফারওহুঁও অরইহা-নুঁও অজ্বান্নাতু না‘ঈম্।

৮৯. অর্থ : তবে তার জন্য থাকবে বিশ্রাম, উত্তম জীবনোপকরণ ও সুখময় জান্নাত।

আরবি : وَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِينِ

বাংলা উচ্চারণ : অ আম্মা য় ইন্ কা-না মিন্ আছ্হা-বিল্ ইয়ামীন।

৯০. অর্থ : আর সে যদি হয় ডানদিকের একজন,

আরবি : فَسَلَامٌ لَكَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِينِ

বাংলা উচ্চারণ : ফাসালা-মুল্ লাকা মিন্ আছহা-বিল্ ইয়ামীন্।

৯১. অর্থ : তবে (তাকে বলা হবে), ‘তোমাকে সালাম, যেহেতু তুমি ডানদিকের একজন’।

আরবি : وَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُكَذِّبِينَ الضَّالِّينَ

বাংলা উচ্চারণ : অ আম্মা য় ইন্ কা-না মিনাল্ মুকায্যিবীনাদ্ব্ দ্বোয়া-ল্লীন।

৯২. অর্থ : আর সে যদি হয় অস্বীকারকারী ও পথভ্রষ্ট,

আরবি : فَنُزُلٌ مِنْ حَمِيمٍ

বাংলা উচ্চারণ : ফা নুযুলুম্ মিন্ হামীমিঁও।

৯৩. অর্থ : তবে তার মেহমানদারী হবে প্রচণ্ড উত্তপ্ত পানি দিয়ে,

আরবি : وَتَصْلِيَةُ جَحِيمٍ

বাংলা উচ্চারণ :  অ তাছ্লিয়াতু জ্বাহীম্।

৯৪. অর্থ : আর জ্বলন্ত আগুনে প্রজ্জ্বলনে।

আরবি : إِنَّ هَذَا لَهُوَ حَقُّ الْيَقِينِ

বাংলা উচ্চারণ : ইন্না হা-যা-লাহুওয়া হাককুল্ ইয়াক্বীন্।

৯৫. অর্থ : নিশ্চয় এটি অবধারিত সত্য।

আরবি : فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ

বাংলা উচ্চারণ : ফাসাব্বিহ্ বিস্মি রব্বিকাল্ ‘আজীম্।

৯৬. অর্থ : অতএব তোমার মহান রবের নামে তাসবীহ পাঠ কর।

উচ্চারণের সঠিকতা ও উপকারিতা

উচ্চারণের সঠিকতা

কুরআনের আয়াতগুলোর সঠিক উচ্চারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক উচ্চারণ নিশ্চিত করে যে আমরা আল্লাহর কিতাবের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করছি। এটি মুসলমানদের জন্য এক ধরনের সম্মান এবং কর্তব্য। সঠিক উচ্চারণের জন্য:

– **তাজবিদের জ্ঞান**: কুরআনের তেলাওয়াতের সময় তাজবিদ (আরবিতে কুরআন পড়ার নিয়মাবলী) সম্পর্কে জ্ঞান থাকা উচিত। 

– **শিক্ষকের সাহায্য**: একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক বা কোরআন পাঠকের সহায়তা গ্রহণ করা উচিত, যারা সঠিক উচ্চারণ শেখাতে পারেন।

– **নিয়মিত অনুশীলন**: নিয়মিত অনুশীলন করলে উচ্চারণে উন্নতি ঘটে।

উচ্চারণের উপকারিতা

1. **আধ্যাত্মিক বৃদ্ধি**: সঠিক উচ্চারণের মাধ্যমে আমরা কুরআনের বানীকে সঠিকভাবে বুঝতে পারি এবং এর মাধ্যমে আমাদের আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটে।

2. **আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্যতা**: কুরআন পাঠের সময় সঠিক উচ্চারণ আল্লাহর কাছে আমাদের দোয়া ও প্রার্থনাকে গ্রহণযোগ্য করে তোলে।

3. **মূর্খতা ও বিভ্রান্তি থেকে মুক্তি**: সঠিক উচ্চারণের মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝি ও বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত থাকা যায়। এটি আমাদেরকে কুরআনের মূল বার্তা বুঝতে সাহায্য করে।

4. **সামাজিক ও ধর্মীয় সম্মান**: সঠিকভাবে কুরআন তেলাওয়াত করা আমাদের সমাজে এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ে সম্মান বৃদ্ধি করে।

5. **শান্তি ও সান্ত্বনা**: কুরআন পাঠের সময় সঠিক উচ্চারণ আমাদের মনে শান্তি ও সান্ত্বনা এনে দেয়, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

আরও পড়ুন: টয়লেটযুক্ত গোসলখানায় অযু করার সময় দোয়া পড়া যাবে কি?

৩. সূরা ওয়াকিয়া: ফজিলত

সূরা ওয়াকিয়া কুরআনের একটি বিশেষ সূরা, যা মুসলমানদের জীবনে অনেক ফজিলত ও উপকার নিয়ে আসে। এটি দারিদ্র্য থেকে মুক্তি, আধ্যাত্মিক উন্নতি, এবং মানসিক শান্তি অর্জনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়। নিচে এই সূরার প্রধান ফজিলতগুলি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

দারিদ্র্য থেকে মুক্তির উপায়

আজ আমরা আলোচনা করছি এমন একটি সূরা সম্পর্কে, যা মাগরিবের পর অর্থাৎ রাতের বেলায় নিয়মিত পড়লে দারিদ্র্য কাছেও ঘেঁষতে পারবে না, এমনটি হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। সূরাটির নাম **ওয়াকিয়া**। এটি কোরআনের ৫৬তম সূরা এবং এতে মোট ৯৬টি আয়াত রয়েছে। এই সূরা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর তিনটি রুকু রয়েছে।

হাদিসের উল্লেখ

হাদিসে এসেছে যে, **আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)** রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছিলেন, যে ব্যক্তি প্রতিরাতে সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করবে, তার ওপর অভাব আসবে না। (বায়হাকি: ২৪৯৭, তাফসিরে রুহুল মাআনি: ২/১২৮)

ইবনে মাসউদ (রা.) ও ওসমানের কথোপকথন

একটি বিশেষ ঘটনার মাধ্যমে সূরা ওয়াকিয়ার গুরুত্ব বোঝা যায়। যখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) অন্তিম শয্যায় শায়িত ছিলেন, তখন **ওসমান (রা.)** তাকে দেখতে গিয়ে বলেন, “আপনার অসুখটা কী?” ইবনে মাসউদ (রা.) উত্তর দেন, “আমার পাপ আমার অসুখ।” ওসমান (রা.) বলেন, “আপনার বাসনা কী?” তিনি বলেন, “আমার পালনকর্তার রহমত কামনা করি।” তখন ওসমান (রা.) বলেন, “আমি সরকারি বায়তুল মাল থেকে কোনো উপঢৌকনের ব্যবস্থা করে দেব, যা আপনার এবং আপনার কন্যাদের উপকারে আসবে?” ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, “এর কোনো প্রয়োজন নেই। আমি আমার কন্যাদের সূরা ওয়াকিয়া শিক্ষা দিয়েছি। আমি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করে, অভাব তাকে কখনো স্পর্শ করবে না।” (তাফসিরে জালালাইন আরবি-বাংলা: ৬/৩৫৩)

১. নিয়মিত পাঠের গুরুত্ব

হাদিসে উল্লেখ আছে যে, যে ব্যক্তি প্রতিরাতে সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করে, তার ওপর অভাব আসবে না। এটি আমাদেরকে দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্ত থাকার আশ্বাস দেয়। নিয়মিত এই সূরার পাঠ আমাদের জীবনে আল্লাহর রহমত ও বরকত আনতে পারে।

২. আল্লাহর উপর ভরসা

সূরা ওয়াকিয়া আমাদেরকে শেখায় যে, আমাদের রিজিক আল্লাহর হাতে। যখন আমরা নিয়মিত সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করি, তখন আমাদের আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা বৃদ্ধি পায়। এটি আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে, আল্লাহ আমাদের প্রয়োজন মেটাবেন এবং আমাদেরকে অভাব থেকে রক্ষা করবেন।

৩. দানশীলতা ও সদকার গুরুত্ব

সূরা ওয়াকিয়া দারিদ্র্য থেকে মুক্তির জন্য দানশীলতা ও সদকার গুরুত্বকে তুলে ধরে। যখন আমরা গরীবদের সাহায্য করি এবং আল্লাহর পথে দান করি, তখন আমাদের নিজেদের উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। এটি আমাদের জীবনে আর্থিক সুরক্ষা নিয়ে আসে।

আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য সূরার ভূমিকা

১. ইমান ও বিশ্বাসের বৃদ্ধি

সূরা ওয়াকিয়া আমাদেরকে কিয়ামতের দিন এবং পরকালের জীবনের সত্যতা সম্পর্কে সচেতন করে। এর পাঠ আমাদের ইমান ও বিশ্বাসকে দৃঢ় করে, যা আমাদের আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য অপরিহার্য।

২. নৈতিক শিক্ষা

এই সূরায় জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা আমাদেরকে নৈতিক ও সুস্থ জীবনযাপনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। এটি আমাদেরকে ভালো কাজের দিকে পরিচালিত করে এবং পাপ থেকে দূরে থাকার শিক্ষা দেয়।

৩. আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা

সূরা ওয়াকিয়ার পাঠ আমাদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা সৃষ্টি করে। এটি আমাদেরকে আল্লাহর কাছে আরো নিকটবর্তী করে এবং তাঁর রহমত লাভের আকাঙ্ক্ষা বাড়ায়।

মানসিক শান্তি ও স্থিরতা অর্জন

১. উদ্বেগ ও মানসিক চাপের উপশম

নিয়মিত সূরা ওয়াকিয়া পাঠ মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সহায়ক। এটি আমাদের মনে শান্তি ও স্থিরতা আনে, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

২. আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি

সূরা ওয়াকিয়া পাঠের মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাই। এটি আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং কঠিন পরিস্থিতিতে স্থিতিশীল থাকার ক্ষমতা দেয়।

৩. প্রার্থনায় সহায়তা

সূরা ওয়াকিয়া পাঠের সময় আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারি। এটি আমাদের প্রার্থনাকে শক্তিশালী করে এবং আমাদের মনকে আল্লাহর সাথে সংযোগিত করে।

আরও পড়ুন: সুন্নত নামাজের গুরুত্ব ও ঘরে নামাজ আদায়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে

৪. সূরা ওয়াকিয়া: বাংলা অর্থ সহ

সূরা ওয়াকিয়া পবিত্র কুরআনের ৫৬তম সূরা, যা কিয়ামতের দিন এবং পরকালের জীবনের বাস্তবতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রদান করে। এই সূরার আয়াতগুলি আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য এবং আল্লাহর প্রতি আমাদের সম্পর্ককে গভীর করে। নিচে এই সূরার গুরুত্বপূর্ণ আয়াতগুলোর বাংলা অর্থ এবং ব্যাখ্যা করা হলো।

গুরুত্বপূর্ণ আয়াতের অর্থ ও ব্যাখ্যা

১. **إِذَا وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ**  

**বাংলা অর্থ**: যখন কিয়ামত সংঘটিত হবে।  

**ব্যাখ্যা**: এই আয়াতে কিয়ামতের দিন ঘটনার অবশ্যম্ভাবিতা তুলে ধরা হয়েছে। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, কিয়ামত একটি সত্য ঘটনা, যা অবশ্যম্ভাবী এবং একদিন অবশ্যই ঘটবে। 

২. **لَيْسَ لِوَقْعَتِهَا كَاذِبَةٌ**  

**বাংলা অর্থ**: তার সংঘটনের কোনো অস্বীকারকারী থাকবে না।  

**ব্যাখ্যা**: এখানে বলা হচ্ছে যে, কিয়ামতের দিন কেউ এর বাস্তবতা অস্বীকার করতে পারবে না। এটি আমাদেরকে সতর্ক করে যে, কিয়ামতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

৩. **خَافِضَةٌ رَافِعَةٌ**  

**বাংলা অর্থ**: তা কাউকে ভূলুণ্ঠিত করবে এবং কাউকে করবে সমুন্নত।  

**ব্যাখ্যা**: এই আয়াতে কিয়ামতের দিন মানুষের ভাগ্য নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। যারা ভালো কাজ করবে তারা উচ্চাসনে আসীন হবে এবং যারা পাপ করবে তারা শাস্তি ভোগ করবে।

৪. **فَأَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ**  

**বাংলা অর্থ**: সুতরাং ডান পার্শ্বের দল, ডান পার্শ্বের দলটি কত সৌভাগ্যবান!  

**ব্যাখ্যা**: এখানে ডানপন্থীদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যারা আল্লাহর নির্দেশনা মেনে চলবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং সুখ লাভ করবে।

৫. **أُولَئِكَ الْمُقَرَّبُونَ**  

**বাংলা অর্থ**: তারা সান্নিধপ্রাপ্ত।  

**ব্যাখ্যা**: এই আয়াতে জান্নাতের সৌন্দর্য ও সেখানে প্রবেশের সুযোগ পাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এটি আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার গুরুত্ব বোঝায়।

সূরার বার্তা ও শিক্ষা

সূরা ওয়াকিয়া আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা নিয়ে আসে:

১. **কিয়ামতের প্রস্তুতি**

এই সূরার মাধ্যমে আমরা কিয়ামতের দিন আমাদের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হতে পারি। এটি আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে হবে এবং আল্লাহর নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

২. **ভালো কাজের গুরুত্ব**

সূরা ওয়াকিয়া ভালো কাজের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে। এটি আমাদের শেখায় যে, আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে। তাই আমাদের উচিত ভালো কাজ করা এবং অন্যদের সাহায্য করা।

৩. **আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস**

এই সূরা আমাদের আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা বাড়ায়। যখন আমরা জানি যে, আল্লাহ আমাদের কাজের প্রতিদান দেবেন, তখন আমাদের জীবন আরও অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে।

৪. **জান্নাত ও জাহান্নামের বাস্তবতা**

সূরা ওয়াকিয়া জান্নাত ও জাহান্নামের বাস্তবতা আমাদের সামনে তুলে ধরে। এটি আমাদেরকে সতর্ক করে এবং ভালো কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে।

আরও পড়ুন: জুমার দিন যে আমলে ৮০ বছরের গুনাহ মাফ, না জানলে জেনে

৫. মাগরিবের পর সূরা ওয়াকিয়া পড়ার ফজিলত

মাগরিবের নামাজের পর সূরা ওয়াকিয়া পড়া মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ আমল। এটি কেবল কুরআনের একটি অংশ নয়, বরং এটি দারিদ্র্য থেকে মুক্তি, আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং আল্লাহর রহমত লাভের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আসুন, মাগরিবের নামাজের পর সূরা ওয়াকিয়া পড়ার ফজিলতগুলো বিস্তারিতভাবে জানি।

মাগরিবের নামাজের পর সূরা ওয়াকিয়া পড়ার বিশেষত্ব

১. বিশেষ সময়ের গুরুত্ব

মাগরিবের নামাজের পর সূরা ওয়াকিয়া পড়া বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কারণ এই সময় আল্লাহর রহমতের দরজা খোলা থাকে। নামাজের পর দোয়া ও তেলাওয়াতের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে আরও নিকটবর্তী হতে পারি। 

২. অভাব থেকে মুক্তি

হাদিসে এসেছে যে, যে ব্যক্তি প্রতিরাতে সূরা ওয়াকিয়া পড়বে, তার ওপর অভাব আসবে না। এই কথা আমাদের মনে আশার আলো জ্বালায় এবং আমাদেরকে নিয়মিত এই সূরা পাঠের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। এটি আমাদের জীবনে অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিয়ে আসে।

৩. আধ্যাত্মিক শক্তি

সূরা ওয়াকিয়ার পাঠ আমাদের আধ্যাত্মিক শক্তি বাড়ায়। মাগরিবের পর এই সূরা পড়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সান্নিধ্যে আসি এবং আমাদের অন্তরে শান্তি ও স্থিরতা অনুভব করি। এটি আমাদের জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্টতা দেয়।

৪. সামাজিক সমতা

সূরা ওয়াকিয়া শুধু ব্যক্তিগত উন্নতি নয়, বরং এটি আমাদের সমাজের জন্যও উপকারী। যখন একজন মুসলমান নিয়মিত এই সূরা পড়ে এবং আল্লাহর রহমত লাভ করে, তখন সে অন্যদের সাহায্য করতে এবং সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়।

দোয়ার কবুল হওয়ার সম্ভাবনা

১. দোয়ার সময়

মাগরিবের নামাজের পর দোয়া করার সময় আল্লাহর কাছে আমাদের প্রার্থনা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। সূরা ওয়াকিয়া পড়ার পর যদি আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে দোয়া করি, তাহলে আমাদের দোয়া আল্লাহর কাছে পৌঁছায়। 

২. আত্মবিশ্বাসের বৃদ্ধি

মাগরিবের পর সূরা ওয়াকিয়া পড়ার কারণে আমাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। যখন আমরা বিশ্বাস করি যে, আল্লাহ আমাদের দোয়া শুনবেন এবং আমাদের প্রয়োজন মেটাবেন, তখন আমরা আরও সাহসী হয়ে উঠি।

৩. স্মরণ করিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া

সূরা ওয়াকিয়া আমাদেরকে কিয়ামতের দিনের বাস্তবতা স্মরণ করিয়ে দেয়। এই স্মরণ আমাদেরকে সঠিক পথে চলতে এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে উদ্বুদ্ধ করে। এটি আমাদের দোয়ার কবুল হওয়ার সম্ভাবনাকে বৃদ্ধি করে।

আরও পড়ুন: কিভাবে ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠবেন, জেনে নিন উপকারিতা, ওঠার আমল ও দোয়া

৬. সূরা ওয়াকিয়া সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য

সূরা ওয়াকিয়া কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মুসলমানদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এটি কেবল আধ্যাত্মিক উন্নতি ও দারিদ্র্য থেকে মুক্তির উপায় নয়, বরং এর পাঠের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছেও নিকটবর্তী হতে পারি। এখানে সূরা ওয়াকিয়া সম্পর্কিত কিছু অতিরিক্ত তথ্য উল্লেখ করা হলো, যা আপনাকে এই সূরার পাঠ ও অধ্যয়নে সহায়ক হবে।

আরবি ও বাংলা উচ্চারণের PDF ডাউনলোড লিঙ্ক

কুরআনের আয়াতগুলোর সঠিক উচ্চারণ শেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আমরা আপনাদের জন্য সূরা ওয়াকিয়ার আরবি ও বাংলা উচ্চারণের একটি PDF ফাইল প্রস্তুত করেছি। এই ফাইলটি আপনাকে সাহায্য করবে কুরআনের আয়াতগুলো সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে এবং এর অর্থ বুঝতে।

– **[সূরা ওয়াকিয়া আরবি ও বাংলা উচ্চারণ PDF ডাউনলোড করুন](#)**

(এখানে একটি লিঙ্ক যোগ করুন যেখানে ব্যবহারকারীরা PDF ডাউনলোড করতে পারবেন)

ছবি ও ভিডিও টিউটোরিয়াল

কুরআন তেলাওয়াতের সঠিক পদ্ধতি শিখতে ছবি ও ভিডিও টিউটোরিয়াল অত্যন্ত কার্যকরী। এই টিউটোরিয়ালগুলো আপনাকে উচ্চারণের সঠিক কৌশল এবং তাজবিদের নিয়মগুলি শেখাতে সাহায্য করবে। 

১. ছবি টিউটোরিয়াল

সঠিক উচ্চারণ এবং তেলাওয়াতের জন্য বিভিন্ন ছবি ও ইনফোগ্রাফিক্স ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ছবিগুলোতে আয়াতগুলোর উচ্চারণ, অর্থ এবং তেলাওয়াতের কৌশল সম্পর্কে তথ্য থাকবে।

২. ভিডিও টিউটোরিয়াল

ইউটিউব কিংবা অন্যান্য ভিডিও প্ল্যাটফর্মে অনেক ইসলামিক শিক্ষকের ভিডিও টিউটোরিয়াল রয়েছে, যেখানে সূরা ওয়াকিয়া পড়ার সঠিক পদ্ধতি, তাজবিদের নিয়ম এবং এর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এই ভিডিওগুলো আপনাকে সহজে এবং দ্রুত শিখতে সাহায্য করবে।

– **[সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াতের ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখুন](#)**

(এখানে একটি লিঙ্ক যোগ করুন যেখানে ব্যবহারকারীরা ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখতে পারবেন)

নিয়মিত পাঠের গুরুত্ব

নিয়মিত সূরা ওয়াকিয়া পাঠ আমাদের জীবনে অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি আমাদেরকে নিম্নলিখিত ভাবে সাহায্য করে:

1. **দারিদ্র্য থেকে মুক্তি**: নিয়মিত সূরা ওয়াকিয়া পড়ার মাধ্যমে আমরা অভাব ও দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, এই সূরা পাঠকারী ব্যক্তির ওপর অভাব আসবে না।

2. **আধ্যাত্মিক উন্নতি**: এই সুরা আমাদের আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য একটি শক্তিশালী উপায়। এটি আমাদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং ভরসা বৃদ্ধি করে।

3. **মানসিক শান্তি**: এই সুরা পাঠের মাধ্যমে আমরা মানসিক শান্তি ও স্থিরতা অর্জন করতে পারি। এটি উদ্বেগ ও চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং আমাদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

4. **সঠিক পথ অনুসরণের প্রেরণা**: এই সূরার পাঠ আমাদেরকে সঠিক পথে চলতে প্রেরণা দেয় এবং আল্লাহর নির্দেশনা মেনে চলার গুরুত্ব বোঝায়।

আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভের জন্য দোয়া

আমরা যখন নিয়মিত সূরা ওয়াকিয়া পড়ি, তখন আমাদের উচিত আল্লাহর কাছে দোয়া করা। দোয়া আমাদের অন্তরের গভীর থেকে আল্লাহর রহমত ও বরকত প্রার্থনা করার একটি মাধ্যম। আমরা আমাদের দোয়ার মাধ্যমে:

– **আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে পারি**: আমাদের জীবনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে আমরা দোয়া করি।

– **রহমত ও বরকত লাভের জন্য প্রার্থনা**: আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভের জন্য প্রার্থনা করা আমাদের জীবনের শান্তি ও সমৃদ্ধি আনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

– **গুনাহ মাফের জন্য দোয়া**: আমাদের পাপ ও গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, যাতে আমরা তাঁর রহমত লাভ করতে পারি।

আরও পড়ুন: গোসলের পর কি আবার ওজু করতে হবে? ইসলাম কি বলে

সাধারণ জিজ্ঞাস্য (FAQ)

১. সূরা ওয়াকিয়া কখন পড়তে হয়?

সূরা ওয়াকিয়া সাধারণত মাগরিবের নামাজের পর পড়া সুন্নত। রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিরাতে সূরা ওয়াকিয়া পড়বে, তার ওপর অভাব আসবে না।

২. সূরা ওয়াকিয়া পড়লে কি হয়?

সূরা ওয়াকিয়া পড়লে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ হয়। এটি দারিদ্র্য থেকে মুক্তি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য সহায়ক।

৩. সূরা ওয়াকিয়া কত নাম্বার সুরা?

সূরা ওয়াকিয়া কুরআনের ৫৬তম সূরা।

৪. সূরা ওয়াকিয়ায় মানুষের কত প্রকার?

সূরা ওয়াকিয়ায় মানুষের তিন প্রকার বর্ণনা করা হয়েছে: ১) ডানপন্থী, ২) বামপন্থী, এবং ৩) অগ্রগামী।

৫. এশার পর সূরা ওয়াকিয়া পড়া যাবে কি?

হ্যাঁ, সূরা ওয়াকিয়া যেকোনো সময় পড়া যায়, তবে মাগরিবের পর পড়া বিশেষ ফজিলত রয়েছে।

৬. সূরা ওয়াকিয়া পড়ার ফজিলত কি?

সূরা ওয়াকিয়া নিয়মিত পড়ার মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি, আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং মানসিক শান্তি লাভ করা যায়।

৭. সূরা ওয়াকিয়া কি ধনী হবে?

হাদিস অনুযায়ী, যে ব্যক্তি নিয়মিত সূরা ওয়াকিয়া পড়বে, তার ওপর অভাব আসবে না। এটি অর্থনৈতিক সচ্ছলতার জন্য সহায়ক হতে পারে।

৮. সূরা ওয়াকিয়া কোরআন শরীফের কত পারায় আছে?

সূরা ওয়াকিয়া কোরআন শরীফের ২৭তম পারায় অবস্থিত।

উপসংহার

সূরা ওয়াকিয়া আমাদের জীবনে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভের একটি শক্তিশালী উপায়। এটি আমাদেরকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি, আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং মানসিক শান্তি প্রদান করে। তাই, আসুন আমরা সবাই নিয়মিত সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করি এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যাতে তিনি আমাদের জীবনে রহমত ও বরকত বর্ষণ করেন।

**আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই সূরা পড়ার এবং এর শিক্ষাগুলো আমাদের জীবনে প্রয়োগ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।**

Juger Alo Google News   যুগের আলো’র সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

Leave a Comment